👉(ওদের জন্য মমতা গদ্য প্রশ্ন উত্তর )
১। কবি আলোচ্য কবিতার বিপদ মুছে দেবার কী উপায় নির্দেশ করেছেন?
উত্তরঃ এই বিশ্ব সংসারে সব মানুষই একটা বিষাদের ছায়া বহন করে বেড়াই। বেশির ভাগ মানুষই দুঃখের মধ্যে নিয়োজিত। কি যেন একটা অস্থিরতা মানুষকে তাড়া করে বেড়ায়। এই বিপদ থেকে বাঁচার উপায় কবি বলেছেন- যে, মানুষ যদি নিজের দুঃখকে ভুলে অপরের বিপদে ঝাপিয়ে পড়ে, এবং যদি বেশির ভাগ সময়টা আর্তের সেবায় ব্যয় করে, নিজেকে নিয়ে বিব্রত না থেকে যদি পরহিত ব্রতে ব্যাস্ত থাকে তাহলেই নিজের বিপদ দেখার সময় তার আর থাকবে না। এই ভাবেই সে শান্তি পাবে, সমস্ত দুঃখ কষ্ট ভুলে যাবে। সকলের জন্য আমরা সকলেই এই উপলব্ধি থাকলেই আমাদের জীবন হবে সুস্থ, সুন্দর ও শান্তিময়।
২। কবি বিষাদকে কীসের সঙ্গে তুলনা করেছেন?
উত্তরঃ মৃদুভাতি স্নিগ্ধ তারার সঙ্গে।
৩। কবি কী দেখে চোখের জল মুছতে বলেছেন?
উত্তরঃ নিজেকে দুঃখ কষ্টে জর্জরিত না রেখে অপরের হাসি ভরা মুখ দেখে কবি চোখের জল মুছতে বলেছেন।
৪। কবিতাটির সারমর্ম নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তরঃ দুঃখ কষ্ট নিয়েই এই সংসার। দুঃখ না থাকলে সুখের মর্যাদা হবে কোথা থেকে? দুঃখের মধ্যে থেকেই সুখের সন্ধান খুঁজে নিতে হবে সুতরাং যন্ত্রণা যন্ত্রণা বলে বিশ্ব সংসারে চিৎকার করার প্রয়োজন নেই। লুকানো বিষাদের ছায়া স্নিগ্ধ তারার মতো সমস্ত রাত্রি মানবের উপর নীরবে আলোক বর্ষণ করে। এবং ইহা গভীর রাত্রির শান্তির মতো মানব হৃদয়ে বিচরণ করে যাকে আশাহীনতার শব্দ হতাশায় চিৎকার এবং আকাঙ্খার শব্দ ভাঙতে পারে না। এই সংসারে দুঃখ বিষাদ থাকবে তাই মানবের হৃদয়মনকে আরও কঠিন হতে হবে যাতে সহজেই সেই বিপদকে সে অতিক্রম করে। সকলের হাসি ভরা মুখ দেখে, নিজের নয়ন মুছতে হবে। অপরের মঙ্গল করার জন্য নিজেকে সঁপে দিলে, বিষাদ ভার কমে যায়। নিজেকে নিয়ে বিব্রত না থেকে পরহিত ব্রতে লেগে যেতে হবে, ওখানেই শান্তি আছে।
সমাজে বাস করতে হলে পারস্পারিক সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন। সমাজের অঙ্গ মানুষ, তাই সমাজকে রক্ষা করতে হলে প্রতিটি মানুষকে প্রতিটি মানুষের জন্য কর্ম করতে হয়। মানুষকে সমাজের জন্য ভাবতে হবে সকল দীনতার উর্ধ্বে উঠে। মানুষ মাত্রই যেন পরের জন্য ত্যাগ ও সমাজের জন্য সদা কল্যাণে তৎপর থাকে। সকলের জন্য আমরা সকলেই এই উপলব্ধি থাকলেই আমাদের জীবন হবে সুস্থ, সুন্দর, শান্তিময়।
৫। সকলের তরে সকলে আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের তরে। কবি আলোচ্য পদ্যাংশে কী বলতে চেয়েছেন? উদ্ধৃতিটি কোন কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে এই অংশের সমার্থ নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তরঃ 'পরার্থে' কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। মানুষ সমাজ বদ্ধ জীব, সমষ্টির স্বার্থেই মানুষ সমাজ গড়ে তুলেছে। সেই সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মানুষ, বাস করতে পারে না। সমাজে বাস করতে হলে পারস্পরিক সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন। সমাজের অঙ্গ মানুষ তাই সমাজকে রক্ষা করতে হলে প্রতিটি মানুষকে প্রতিটি মানুষের সাহায্য করতে হয়। সকল মানুষকেই সকল মানুষের জন্য কর্ম করতে হয়। মানুষ যদি আত্মকেন্দ্রিক এবং স্বার্থপর হয়, তবে মানুষে মানুষে কোনো দিনই সৌহাদ্য গড়ে উঠবে না। সমাজে থাকতে হলে, মানুষকে সমাজের জন্য ভাবতে হবে। কিভাবে অপরের মঙ্গল সাধিত হবে, কিভাবে বর্ণগত, ভাষাগত, মর্যাদাগত ভেদাভেদের ঊর্ধ্বে উঠে, সমাজের কল্যাণ করা যায় ভাবতে হবে।
এই ভাবনায় হবে সমাজ সেবার মূল কথা। সকলের জন্য আমরা সকলেই এই উপলব্ধিটুকু সমাজে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তবেই আমাদের প্রত্যেকের জীবন হবে সুস্থ, সুন্দর শান্তিময়। অর্থাৎ আমরা প্রত্যেকেই প্রত্যেকের জন্য মানবতার এই মহতী বাণীকে মহনীয় করে তুলতে হবে। মনে রাখতে হবে প্রত্যেকের জন্য প্রত্যেকের সহযোগিতা আমাদের জীবনে পথ পরিক্রমার পরম পাথেয়।
No comments:
Post a Comment