👉(হজ্জে আকবর গদ্য প্রশ্ন উত্তর)
১। 'ময়মন সিংহ গীতিকা' কে সংগ্রহ করেন?
উত্তরঃ শ্রদ্ধেয় ড. দীশেনচন্দ্র সেন ময়মন সিংহ গীতিকা সংগ্রহ করেন।
২। শেকস্ পীয়র ও রোমা রোলাঁ কোন্ কোন্ দেশের মানুষ? তাঁরা কী জন্য বিখ্যাত?
উত্তরঃ শেকস্পীয়র ইংল্যান্ডের অধিবাসী। তিনি একজন বিখ্যাত ইংরেজি সাহিত্যের লেখক। তাঁর উল্লেখযোগ্য লেখা হল, দ্য মার্চেন্ট অব ভেনিশ্, অ্যাজ ইউ লাইকইট, জুলিয়াস সিজার ইত্যাদি।
রোমা রোঁলা ফ্রান্সের অধিবাসী ছিলেন। তিনি একজন বিখ্যাত নভেল লেখক ছিলেন, জ্যা ক্রিস্টোফার তাঁর বিখ্যত কাল্পনিক নভেল, এছাড়া গান্ধী, বিথোকেন, মাইকেল এন্তোলো টলস্টয় এর উপরে বায়োগ্রাফী লেখার জন্য তিনি বিখ্যাত।
৩। আমাদের পল্লি সাহিত্যের উপকরণগুলি কী কী?
উত্তরঃ পল্লির ঘাটে মাঠে আলোবাতাসে পল্লির প্রত্যেক পরতে পরতে সাহিত্যের উপকরণ ছড়িয়ে আছে। নিম্নে সুেগলি উদাহরণ স্বরূপ দেওয়া হল যেমন কোকিল, দোয়েল, পাপিয়ার কলগান, নদীর কুল কুল ধ্বনি, পাতার মর্মর শব্দ ইত্যাদি।
বুড়ো বুড়ির মুখে শোনা পুরোন গল্প যেমন রাখালের পিঠা গাছের কথা, রাক্ষস পুরীর ঘুমন্ত রাজ কন্যার কথা, পক্ষিরাজ ঘোড়ার কথা।
দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদারের ঠাকুরমার ঝুলি, ঠাকুরমার থলে ইত্যাদি। পল্লির হাউ, মাউ, খাঁউ, মানুষের গন্ধ পাঁউ এবং প্রবাদ বাক্যের মধ্যে যেমন দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা নেই, ধরি মাছ না ছুঁই-পানি, আপনি বাঁচলে বাপের নাম, তারপর খনার বচন আছে যেমন -
কলা রুয়ে না কেটো পাত, তাতেই কাপড় তাতেই ভাত। ছড়ার মধ্যে রয়েছে যেমন রোদ হচ্ছে, পানি হচ্ছে, খেঁক শিয়ালের বিয়ে হচ্ছে।
পল্লিগানের মধ্যে রয়েছে, সেই জারি গান, ভাটিয়ালি গান, রাখালি গান, মারফতি গান, এই গানগুলি পল্লি সাহিত্যে এক অমূল্য রত্ন এক অফুরন্ত ভাণ্ডার পল্লির ঘাটে মাঠে ছড়ানো রয়েছে, যেমন
মন মাঝিতোর বইঠা নেরে
আমি আর বইতে পারলাম না।
ইত্যাদির মধ্যে পল্লি সাহিত্যের অজস্র উপকরণ লুকিয়ে রয়েছে।
৪।বিদেশি খেলার প্রচলনের সঙ্গে সঙ্গে কীসের লোপ পাওয়ার উপক্রম হয়েছে বলে লেখকের মনে হয়?
উত্তরঃ বিদেশি খেলা ফুটবল ও ক্রিকেট এর প্রচলনের সঙ্গে সঙ্গে এদেশিয় কপাটি খেলার লোপ পায় এবং এই খেলার সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন গত যেমন -
এক হাত বোল্লা বায়ো হাত শিং।
উড়ে যায় বোল্লা ধা তিং তিং।
ইত্যাদি কত বাঁধা বুলি ও লোপ পায়।
৫। আলোচ্য প্রবন্ধে পল্লি সাহিত্য সম্পর্কে লেখকের মনোভাব ব্যক্ত হয়েছে তা সংক্ষেপে লেখো।
উত্তরঃ লেখক এক গভীর হতাশা ও ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে আলোচ্য প্রবন্ধে বিলুপ্ত প্রায় পল্লি সাহিত্যের মর্ম কথা তুলে ধরেছেন। পল্লিগ্রামে কোকিল, দোয়েল, পাপিয়া পাখির কলগান, নদীর কুল কুল ধ্বনি পাতার মর্মর শব্দ প্রভৃতির মধ্যে পল্লি সাহিত্যের উপকরণ ছড়িয়ে রয়েছে। বর্তমানে যে সমস্ত সাহিত্য বাজারে এসেছে। তার সবটাই প্রায় শহুরে, সেখানে রাজ রাজার কথা, বাবু-বিবির কথা, মটরগাড়ি, বিজলিবাতি, সিনেমা, থিয়েটারের কথা। এই সব নিয়ে রাশি রাশি গল্প, সাহিত্য লেখা হচ্ছে। পল্লির গৃহস্থ গরীব কৃষক, মুটে মজদুর, জেলে, তাঁতির এই সব সাহিত্যে কোনো ঠাঁই হচ্ছে না। তাই কবি আক্ষেপ করেছেন মনসুর বয়াতির মতো আরও কত পল্লি কবি, পল্লি সাহিত্যিক, বাংলাদেশের আনাছে কানাছে আত্মগোপন করে আছে। যদি কেউ এই সমস্ত কবি, সাহিত্যিকদের গাথা সংগ্রহ করে প্রকাশ করত তাহলে জানা যেত যে বাংলার মুসলমানরাও সাহিত্য সম্পদে কত ধনী।
তাই লেখকের ইচ্ছে পল্লিজননীর পল্লি সন্তানেরা এগিয়ে আসুক তারাই হাল ধরে এই সাহিত্যের সংরক্ষণ করুক। নচেৎ এই সাহিত্য অবলুপ্তি হয়ে যাবে।
৬। পল্লিসাহিত্য সংগ্রহ ও গ্রন্থবদ্ধ করার প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে তোমার মতামত প্রদান করো।
উত্তরঃ বর্তমানে পল্লিসাহিত্যে প্রায় বিলুপ্তির পথে। এখন সে সব সাহিত্য নিয়ে মানুষ বেশি চর্চা করছে বা সমাজে সে সব সাহিত্য পরিবেশিত হচ্ছে তার বেশির ভাগই শহর কেন্দ্রিক, এই শহর কেন্দ্রিক সাহিত্যের মধ্যে যেন কোনো প্রাণ নেই। সেখানে বেশির ভাগটায় নেওয়া হয় প্রথম শ্রেণী মানুষের বিলাস বহুল জীবন যাত্রার ছবি। কিন্তু এর মধ্যে কোনো সাহিত্যের আস্বাদন আছে বলে আমার মনে হয় না। গ্রাম গঞ্জের মধ্যে যেন প্রকৃত সাহিত্য লুকিয়ে আছে। পল্লির গৃহস্থ, কৃষক, জেলে, মাঝি, মুটে, মজুরের স্বাভাবিক জীবনযাত্রার মধ্যে যে সাহিত্য খুঁজে পাওয়া যায় সেটাই যেন আমার মতে যেন সাহিত্য। তাই প্রকৃতি যারা গ্রামবাংলা সাহিত্যকে ভালোবাসে - তাদের উচিৎ এই সমস্ত মৃত প্রায় সাহিত্যকে গ্রন্থবদ্ধ করে সংরক্ষণ করা।
No comments:
Post a Comment