👉(পল্লি সাহিত্য গদ্য প্রশ্ন উত্তর)
১। রবীন্দ্রনাথের সেজদাদা কাকে, কী বলতেন?
উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথের সেজদাদা রবীন্দ্রনাথকে বলতেন, আগে চাই বাংলা ভাষার গাঁথুনি, তারপরে ইংরেজি শেখার পত্তন।
২। ব্রজেশ্বর কে? তার চেহারার বর্ণনা করো।
উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথদের মাদুর পাতা আসরে চাকরদের সর্দার ছিলেন ব্রজেশ্বর। ব্রজেশ্বরের মাথায় গোঁফে ছিল কাঁচা পাকা চুল, মুখের উপর ছিল টান পড়া শুকনো চামড়া, মেজাজ ছিল গম্ভীর, গলা ছিল কড়া, তিনি চিবিয়ে চিবিয়ে কথা বলতেন। ঘাড়টা ছিল একটু বাঁকা তাতে তার কথা বলার মান বাড়তো।
৩। রবীন্দ্রনাথের কম খাওয়া অভ্যাস হয়েছিল কীভাবে?
উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথদের খাওয়া দাওয়া পরিবেশন করতেন ব্রজেশ্বর নামক চাকর। খেতে দেওয়ার পর একটি করে লুচি তাদের মুখের সামনে দুলিয়ে 'আর দেব কি' বলে এমনভাবে জিজ্ঞাসা করতেন, তাতে ছেলেদের আর বুঝতে বাকি থাকত না, যে ব্রজেশ্বর 'না' উত্তরের অপেক্ষায় আছেন। দুধের প্রতিও তার লোভ কম ছিল না। সামান্যটুকু ছেলেদের দিয়ে বাকি দুধটা নিজের জন্য রেখে দিতেন। এইভাবে ব্রজেশ্বর কম কম খেতে দিয়ে রবীন্দ্রনাথদের কম খাওয়ার অভ্যাস করে দিয়েছিলেন।
৪। ছেলেবেলা রবীন্দ্রনাথের শরীরের অবস্থা কেমন ছিল?
উত্তরঃ ছেলেবেলা ব্রজেশ্বরের তত্বাবধানে কম খাওয়া দাওয়া হলেও তার প্রভাব কিন্তু রবীন্দ্রনাথের শরীরের উপর পড়েনি। অন্যান্য ছেলেদের অপেক্ষায় তাঁর গায়ে জোর বেশিই ছিল। স্কুলে যাওয়ার প্রতি যখন অনিহা আসতো তখন শরীরের উপর অত্যাচার চালিয়েও অসুখ ডেকে আনতে পারত না। সারাদিন ভিজে জুতো পরে বা কার্তিক মাসের খোলা ছাদে শুয়েও শরীরে ব্যামো ঘটাতে পারত না। জ্বরে ভোগা বা ম্যালেরিয়ার কথা মনেই নেই। শরীরের কোথাও ফোঁড়া ফুসকড়ি পর্যন্ত হয়নি। এক কথায় তিনি নিরোগ শরীরের অধিকারী ছিলেন।
৫। 'না থাকে তো তাকে ফিরিয়ে আনার দরকার নেই কোন জিনিস না থাকার কথা বলা হয়েছে? বক্তা কেন সেই জিনিসকে ফিরিয়ে আনার দরকার নেই বলেছেন?
উত্তরঃ রেউড়ি নামে এক প্রকার তিলে গজার কথা বলা হয়েছে। এই জিনিসটা সাধারণ তৈরি হত চিনি ও তিল দিয়ে তখন বাজারে চকলেট আসেনি। তাই বাচ্চারা এই তিলে গজা রেউড়ি খেত ও পকেটে রেখে দিত, কিন্তু এর একটা বৈশিষ্ট্য ছিল এগুলি খোলা বাতাসে রেখে দিলে কিছুক্ষণ পরে গলে যেত ও পকেট চটচটে করে দিত। তাই লেখক এই অস্বস্তিকর চটচটে গজা আর ফিরিয়ে আনার দরকার নেই বলেছেন।
৬। কিন্তু ওরই মধ্যে একটা খুঁত ছিল গুরু গিরিতে। এখানে কার কথা বলা হয়েছে? তার গুরু গিরিতে কী খুঁত ছিল?
উত্তরঃ এখানে রবীন্দ্রনাথদের বাড়ির চাকর ব্রজেশ্বরের কথা বলা হয়েছে। যিনি বাড়ির ছোটদের খাওয়া-দাওয়া পরিবেশন করতেন। ব্রজেশ্বরের চাল চলন কথাবার্তা বেশ ভূষায় চাকচিক্য থাকলেও। একটা জিনিষে তার খুঁত ছিল। খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে তার লোেভ কম ছিল না। বাচ্চাদের খাওয়ানোর পরিবেশন কালে তার মানসিক পরিচয় পাওয়া যায়। কেননা ছেলেদের খেতে দেওয়ার সময় একটি করে লুচি আলগোছে দুলিয়ে এমনভাবে জিঙ্গাস করতো 'আর দেব কি' তাতে ছেলেদের আর বুঝতে বাকি থাকতো না যে ব্রজেশ্বর কি উত্তর আশা করছেন। এইভাবে সে বাচ্চাদের খাবার আত্মসাৎ করে নিজের আলমারিতে রেখে দিত।
No comments:
Post a Comment