চন্দ্রনাথ প্রশ্ন উত্তর নবম শ্রেণি বাংলা | নবম শ্রেনীর বাংলা প্রশ্ন উত্তর | Class 9th Bangla Chandranath Question and Answers (MCQ, SAQ, DAQ) - Psycho Principal

Fresh Topics

Thursday, 24 April 2025

চন্দ্রনাথ প্রশ্ন উত্তর নবম শ্রেণি বাংলা | নবম শ্রেনীর বাংলা প্রশ্ন উত্তর | Class 9th Bangla Chandranath Question and Answers (MCQ, SAQ, DAQ)

 

চন্দ্রনাথ 
প্রশ্ন উত্তর 








❐ কমবেশি ১৫টি শব্দের মধ্যে উত্তর দাও :


1. 'চন্দ্রনাথ' রচনাংশটি কোন্ মূল উপন্যাস থেকে নেওয়া?

উত্তরঃ  'চন্দ্রনাথ' রচনাংশটি তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'আগুন' উপন্যাসের প্রথম ও দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ থেকে নেওয়া।


2.  'চন্দ্রনাথ' রচনাংশের কথকের নাম কী?

উত্তরঃ 'চন্দ্রনাথ' রচনাংশের কথকের নাম নরেশ, সংক্ষেপে নরু।


3.  কথকের কোথায় চন্দ্রনাথের কথা মনে হয়েছিল?

উত্তরঃ সারকুলার রোডের সমাধিক্ষেত্র থেকে বের হয়ে কথক। নরেশ সহপাঠী চন্দ্রনাথের কথা ভাবতে ভাবতে বাড়ি ফিরেছিল।


4.  কথকের স্মৃতিপটে চন্দ্রনাথের অবস্থান কেমন ছিল?

উত্তরঃ  রচনাংশের কথক নরেশের স্মৃতিপটে চন্দ্রনাথ গভীর রাতে মধ্য আকাশে বিচরণকারী কালপুরুষের মতো ঔজ্জ্বল্যের পরিধিতে ভাস্বর ও প্রদীপ্ত হয়ে ছিল।


5.  কালপুরুষের সঙ্গে চন্দ্রনাথের তুলনা করে চ কথকের আনন্দ পাওয়ার কারণ কী?

উত্তরঃ  কালপুরুষ নক্ষত্রের খঙ্গধারী ভীমকায় আকৃতির সঙ্গে ৪ চন্দ্রনাথের আপসহীন সত্তার সাদৃশ্য অনুভব করে কথক আনন্দ। পান।


6.  হীরু কে ছিল?

উত্তরঃ  হীবু ছিল কথক নরেশ ও চন্দ্রনাথের সহপাঠী এবং স্কুলের প্রভাবশালী সেক্রেটারির ভাইপো।


7. 'আরও একজনকে মনে পড়িতেছে'- তিনি কে?

উত্তরঃ  এখানে রচনাংশে কথক নরেশ আরও একজন বলতে যা চন্দ্রনাথের দাদা নিশানাথের কথা বলেছে।


8.  'কেমন করিয়া যে এই তিনজন একই হলে সময়ে ক্ষুদ্র একটি গ্রামের মধ্যে আসিয়া পড়িয়াছিলাম'-কোন্ তিনজনের কথা বলা হয়েছে?

উত্তরঃ প্রদত্ত উদ্ধৃতাংশে তিন সহপাঠী চন্দ্রনাথ, হীরু এবং রচনাংশের কথক নরেশের কথা বলা হয়েছে।


9.  'এও হয়তো সেই বিচিত্র সমাবেশ।-বিচিত্র সমাবেশটি কী লেখো।

উত্তরঃ একই গ্রামে চন্দ্রনাথ, হীরু ও নরেশ এই তিন বন্ধুর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের আশ্চর্য সমাবেশকে আগ্নেয়গিরির গর্ভের মধ্যে কল্পনাতীত বিচিত্র সমাবেশের সাথে কথক তুলনা করেছেন।


10.  'চিন্তাকুল নেত্রে চাহিয়া বসিয়া আছে।'- কে বসে আছে?

উত্তরঃ  টেবিল ল্যাম্পের আলোয় আলোকিত ঘরের সামনের দেয়ালে টাঙানো আয়নায় কথক নরেশের নিজেরই প্রতিবিম্বের দিকে চিন্তাকুল নেত্রে তাকিয়ে বসেছিল।


11.  রচনাংশের কথকের অতীত সম্পর্কে অনুভূতি কী ছিল?

উত্তরঃ রচনাংশের কথক নরেশের মতে, অতীতের রূপ অন্ধকার। কেননা তা আর কখনোই 'আলোকিত প্রত্যক্ষের মধ্যে' অর্থাৎ বর্তমান জীবনে ফিরে আসে না।


12.  'অন্ধকারের মধ্যে তাহাকে খুঁজিতেছি।- কে, কাকে খুঁজছে?

উত্তরঃ 'চন্দ্রনাথ' রচনাংশে কথক নরেশ তার সহপাঠী চন্দ্রনাথকে খুঁজছে।


13.  চন্দ্রনাথ কখন কথকের সামনে এসে দাঁড়াল?

উত্তরঃ ঘরের নিশ্ছিদ্র অন্ধকারের মধ্যে সুস্পষ্ট রূপ পরিগ্রহ করে চন্দ্রনাথ কথকের সামনে এসে দাঁড়াল।


14. কিশোর চন্দ্রনাথের চেহারার পরিচয় দাও।

উত্তরঃ  চন্দ্রনাথ দীর্ঘাকৃতি, সবল ও সুস্থ শরীরের অধিকারী। আকর্ষণীয় মুখাকৃতিতে বড়ো বড়ো চোখের নির্ভীক দৃষ্টি। মোটা নাক সামান্য চঞ্চলতায় ফুলে ওঠে আর কপালের মাঝখানে শিরায় তৈরি ত্রিশূল যা সামান্য উত্তেজনাতেই প্রকট হয়ে ওঠে।


15. চন্দ্রনাথের ললাটের ত্রিশূল-চিহ্ন কখন দেখা যায়?

উত্তরঃ  সামান্য উত্তেজনায় চন্দ্রনাথের রক্তের চাপ একটু প্রবল হলেই তার কপালের মধ্যস্থ ত্রিশূল-চিহ্ন মোটা হয়ে ফুলে ওঠে।


16.  পুরাণ মতে 'চন্দ্রনাথ' কার নাম?

উত্তরঃ  পুরাণ মতে শিবের আর-এক নাম 'চন্দ্রনাথ'। কেননা চাঁদ তাঁর মাথায় শোভা পায়।


17. হেডমাস্টারমশাই কীভাবে বসে থাকতেন?

উত্তরঃ শীর্ণ দীর্ঘকায় শান্ত প্রকৃতির হেডমাস্টারমশাই বোর্ডিং-এর ফটকের সামনে চেয়ার-বেঞ্চের আসন পেতে বসে থাকতেন। আর তাঁর হাতে হুঁকাটি সবসময় শোভা পেত।


18.  'চিন্তাকুল বিমর্ষ' হেডমাস্টার মহাশয় কথককে কী বলেছিলেন?

উত্তরঃ  চিন্তাকুল ও বিমর্ষ হেডমাস্টার মহাশয় কথক নরু বা নরেশকে চন্দ্রনাথের বক্তব্য জেনে আসতে বলেছিলেন।


19.  'দুর্দান্ত চন্দ্রনাথের আঘাতে সমস্ত স্কুলটা চঞ্চল, বিক্ষুব্ধ হইয়া উঠিয়াছে।-আঘাতটি কী ছিল?

উত্তরঃ দুর্দান্ত আপসহীন চন্দ্রনাথের দ্বিতীয় পুরস্কার প্রত্যাখ্যানের পত্রে সমস্ত স্কুলটা চঞ্চল ও বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল।


20. 'তাহার কথা অবহেলা করিতে পারিলাম না।'-কার কোন্ কথা অবহেলা করা যায়নি?

উত্তরঃ  চন্দ্রনাথ কথককে বলেছিল আজ পর্যন্ত সেকেন্ড না হওয়ার কারণেই সে সেকেন্ড প্রাইজ গ্রহণ করবে না। তার এ কথার সত্যতা অনুভব করে কথক অবহেলা করতে পারেনি।


21. 'সে তাহার স্বভাব নয়।'-কী তার স্বভাবত নয়?

উত্তরঃ ঘরে কেউ উপস্থিত হলে তাকে অভ্যর্থনা বা স্বাগত জানানো, চন্দ্রনাথের স্বভাব নয়।


22.  'তাহার কথা শুনিয়া আশ্চর্য হইয়া গেলাম।'-কোন্ কথা শুনে, কে আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিল?

উত্তরঃ দারিদ্র্যজীর্ণ স্বল্পালোকিত ঘরে বসে একমনে চন্দ্রনাথ যখন 'ইউনিভার্সিটি এন্জামিনের' রেজাল্ট তৈরি করছিল তখন তা দেখে কথক নরেশ অবাক হয়ে গিয়েছিল।


23.  'কাগজটায় চোখ বুলাইতেছিলাম।'-কোন্ কাগজে, কে চোখ বোলাচ্ছিল?

উত্তরঃ প্রদত্ত উদ্ধৃতাংশে চন্দ্রনাথের অনুমানে অনুপাতের আঙ্কিক নিয়মে তৈরি স্কুলের রেজাল্টের কাগজে নরেশের চোখ বুলানোর কথা বলা হয়েছে।


24.  চন্দ্রনাথের তৈরি করা রেজাল্টে কী লেখা ছিল?

উত্তরঃ  চন্দ্রনাথের তৈরি রেজাল্টে পূর্বাভাস ছিল সে সাড়ে পাঁচশোর বেশি পেলে স্কুলে ফেল হবে দুজন আর পাঁচশো পঁচিশের নীচে নাম্বার পেলে ফেল করবে দশজন।


25.  'এই দাম্ভিকটা যেন ফেল হয়'-উক্তিটি কার? কার সম্পর্কে বস্তার এমন উক্তি?

উত্তরঃ রেজাল্ট সম্পর্কে আত্মবিশ্বাসী চন্দ্রনাথের পূর্বাভাস শুনে নরেশ ব্যথিত ও বিক্ষুব্ধ হয়ে এই উক্তি করেছে।


26.  'ললাটে শিরায় রচিত ত্রিশূল-চিহ্ন ধীরে ধীরে আত্মপ্রকাশ করিতেছিল।'- কখন এমন ঘটেছিল?

উত্তরঃ চন্দ্রনাথের সামান্য উত্তেজনায় কপালের শিরায় রচিত ত্রিশূল চিহ্নটি মোটা হয়ে ফুলে ওঠে। দাদা নিশানাথ সেকেন্ড প্রাইজ রিফিউজ করার কারণ জিজ্ঞাসা করলে তার এই অবস্থা হয়েছিল।


27. 'এক মুহূর্ত স্তব্ধ থাকিয়া সে বলিল'-কে, কী বলেছিল?

উত্তরঃ  চন্দ্রনাথ তার দাদা নিশানাথকে জানিয়েছিল, দ্বিতীয় পুরস্কার গ্রহণ করাকে সে নিজের আত্মমর্যাদার পক্ষে হানিকর বলে মনে করে।


28.  'কথাটা বলতে তোমার লজ্জায় বাধল না?'- কোন্ প্রসঙ্গে বক্তার এই উক্তি?

উত্তরঃ  চন্দ্রনাথের সেকেন্ড প্রাইজ প্রত্যাখ্যান করা প্রসঙ্গে তার দাদা নিশানাথবাবু এমন উক্তি করেছেন।


29.  'তোমার অক্ষমতার অপরাধ।'-কে, কেন বলেছিলেন?

উত্তরঃ  চন্দ্রনাথের দাদা নিশানাথ তার প্রথম হতে না পারা প্রসঙ্গে এমন মন্তব্য করেছিলেন।


30.  'তুমি জান না দাদা। -দাদা কী জানতেন না?

উত্তরঃ চন্দ্রনাথের মতে তার দাদা জানত না যে, প্রথম ন হওয়া হীরু তার খাতা দেখে তিনটি অঙ্ক টুকেছিল এবং সহকারী শিক্ষক প্রশ্ন বলে দিয়ে ও খাতা দেখার পক্ষপাতিত্ব করে তাকে সাহায্য করেছে।


31.  'চন্দ্রনাথের দাদার মুখ দিয়া কথা সরিতেছিল না।-চন্দ্রনাথের দাদা কে? কেন তার মুখ দিয়ে কথা সরছিল না?

 উত্তরঃ চন্দ্রনাথের দাদা নিশানাথবাবু। নিজের শ্রেষ্ঠত্ব সম্পর্কে সচেতন চন্দ্রনাথের স্পর্ধা, অহংবোধ ও সাহস লক্ষ করে ও তার নিজের অনড় অবস্থান দেখে নিশানাথের রাগে, দুঃখে কথা সরছিল না।


32.  চন্দ্রনাথের দাদার স্বভাব কেমন ছিল?

উত্তরঃ চন্দ্রনাথের দাদা নিশানাথ ছিলেন নির্বিরোধী শাস্ত প্রকৃতির মানুষ।


33.  'তোমার বউদি বলত,'-বউদি কী বলত?

উত্তরঃ  চন্দ্রনাথের বউদি তার দাদা নিশানাথবাবুকে বলতেন যে, চন্দ্রনাথ অত্যন্ত জেদি-উদ্ধত-দুর্বিনীত ও স্বাধীনচেতা হয়ে উঠেছে। এখানে সে কথাই বলা হয়েছে।


34.  'আজ থেকে আমরা পৃথক'-কে, কাকে, কেন এ কথা বলেছেন?

উত্তরঃ চন্দ্রনাথের দাদা নিশানাথবাবু চেয়েছিলেন সেকেন্ড প্রাইজ প্রত্যাখান করে হেডমাস্টারকে লেখা চিঠি চন্দ্রনাথ ফিরিয়ে নিক। কিন্তু ভাই নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থাকায় দুঃখে ও বেদনায় তার এমন মন্তব্য।


35.  'তিনি নিশ্চয়ই এ উত্তর প্রত্যাশা করেন নাই,'-কোন্ উত্তরের কথা বলা হয়েছে?

উত্তরঃ  নিশানাথবাবু যখন চন্দ্রনাথের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা বলেন তখন চন্দ্রনাথের উত্তর ছিল, "বেশ”। নিশানাথ সম্ভবত এ উত্তরের প্রত্যাশী ছিলেন না।


36. 'এমন বুকে দাগ কাটা দৃষ্টি আমার জীবনে আমি খুব কমই দেখিয়াছি।'-উক্তিটি কার? কোন্ দৃষ্টির কথা বলা হয়েছে?

উত্তরঃ প্রশ্নে উদ্ধৃত উক্তিটি এই গল্পের কথক ও চন্দ্রনাথের সহপাঠী নরেশের। চন্দ্রনাথের দাদা নিশানাথবাবুর বেদনাহত দৃষ্টির কথাই এখানে বলা হয়েছে।


37.  কথক মাস্টারমশাইকে চন্দ্রনাথের কাছে যেতে নিষেধ করেছিল কেন?

উত্তরঃ চন্দ্রনাথ হয়তো মাস্টারমশাইয়ের কথা শুনবে না, এই আশঙ্কা থেকেই কথক নরেশ বৃদ্ধ মানুষটিকে চন্দ্রনাথের কাছে। যেতে নিষেধ করেছিল।


38.  'আমারই অন্যায় হলো।-কেন এমন কথা বলা হয়েছে?

উত্তরঃ বস্তা হেডমাস্টারমশাই আত্মসমালোচনার সুরে এ কথা বলেছেন। তিনি নরুর কাছে সব শুনে এটাই ভেবেছিলেন যে তিনি যদি নিশানাথ-কে সবটা না বলতেন তবে হয়তো দু-ভায়ের মধ্যে বিচ্ছেদ হত না।


39.  'চন্দ্রনাথের সহিত সংস্রব রাখিব না।-বক্তার কেন এমন মনে হয়েছিল?

উত্তরঃ  চন্দ্রনাথের দাদার সঙ্গে পৃথক হওয়ার সংবাদ শুনে রচনাংশের কথক নরেশের এমন কথা মনে হয়েছিল।


40.  'তোমাকে তিনি একটা স্পেশাল প্রাইজ দেবেন।'-কে, কাকে স্পেশাল প্রাইজ দেবেন?

উত্তরঃ  স্কুলের সেক্রেটারি অর্থাৎ হীরুর কাকা চন্দ্রনাথকে একটা স্পেশাল প্রাইজ দেবেন বলে ভেবেছিলেন।


41. 'এই প্রস্তাবই আমার পক্ষে অপমানজনক -কোন্ প্রস্তাবের কথা বলা হয়েছে?

উত্তরঃ চন্দ্রনাথের কাছে হীরুর কাকার স্পেশাল প্রাইজ গ্রহণের প্রস্তাবটিই অত্যন্ত অপমানজনক বলে মনে হয়েছিল।


42.  'তাঁকেও উত্তর দিয়ে দিলাম, গুরুদক্ষিণার যুগ আর নেই।'-উক্তিটি কার? কাকে উদ্দেশ্য করে এই উক্তি?

 উত্তরঃ উদ্ধৃত উক্তিটির বক্তা চন্দ্রনাথ।

স্কুলের হেডমাস্টারমশাইকে উদ্দেশ্য করে চন্দ্রনাথ এই উক্তি করেছিল।


43.  'কিন্তু একটি শুধু মেলে নাই'- কী মেলেনি?

উত্তরঃ  বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার ফলাফল সম্পর্কে চন্দ্রনাথের যাবতীয় অনুমান মিলে গেলেও, হীরু যে তাকে অতিক্রম করে এগিয়ে যাবে এই পূর্বাভাস না মেলার কথাই এখানে বলা হয়েছে।


44. হীরুর বাড়িতে প্রীতিভোজনের নিমন্ত্রণ পাইলাম।'-প্রীতিভোজের নিমন্ত্রণের উপলক্ষ্য কী ছিল?

উত্তরঃ  ইউনিভার্সিটির পরীক্ষায় হীরু স্কলারশিপ পেয়েছিল। সেই উপলক্ষ্যেই প্রীতিভোজের নিমন্ত্রণ ছিল নরেশের।


45.  'আমি কিন্তু প্রথমেই গেলাম চন্দ্রনাথের বাড়ি।'-বক্তা সেখানে গিয়ে কী দেখেছিল?

উত্তরঃ বক্তা নরেশ মামার বাড়ি থেকে প্রথমে চন্দ্রনাথের বাড়ি যায়। সেখানে গিয়ে দেখে নির্জন বাড়ি খাঁ খাঁ করছে। শোবার ঘরের বন্ধ দরজায় একটা সামান্য তালা ঝুলছে।


46.  'তিনি নিজে সেদিন বাগানটাকে সাজিইয়াছিলেন।'- 'তিনি' কে?

উত্তরঃ  এখানে 'তিনি' হলেন হীরুর কাকা। গোটা জেলায় শৌখিন ধনীসন্তান হিসেবে তাঁর খ্যাতি ছিল।


47. আমবাগানটিকে কেমনভাবে সাজানো হয়েছিল?

উত্তরঃ চিনা লণ্ঠন এবং রঙিন কাগজের মালা দিয়ে হীরুর কাকা নিজে হাতে আমবাগানটিকে সাজিয়েছিলেন।


48. 'হীরুকে স্পষ্ট মনে পড়িতেছে,'- হীবুর চেহারার বর্ণনা দাও।

উত্তরঃ  হীরুর দেহ লাবণ্যময়। তার আয়ত কোমল চোখে মোহময় দৃষ্টি। আকাশের শুকতারার মতো স্নিগ্ধ কোমল দীপ্তি ছিল তার ব্যক্তিত্বে।


49.  রচনাংশের কথক চন্দ্রনাথ ও হীবুর সঙ্গে কোন্ কোন্ নক্ষত্রের সাদৃশ্য খুঁজে পেয়েছিল?

উত্তরঃ রচনাংশের কথক নরেশ কালপুরুষ নক্ষত্রের সঙ্গে চন্দ্রনাথের এবং শুকতারার সঙ্গে হীরুর ব্যক্তিত্বের সাদৃশ্য খুঁজে পেয়েছিল।


50. হীরু কোথায় যেতে চেয়েছিল?

উত্তরঃ হীরু আই. সি. এস. পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য বিলেত তথা ইংল্যান্ডে যেতে চেয়েছিল।


51.  'ওইটুকু এক বিশেষত্ব'- কার কী বিশেষত্ব ছিল?

উত্তরঃ  ছাত্র তার অধিকারের গন্ডি পার হলেই সে আর 'তুই' নয়; তখন সে হেডমাস্টারমশায়ের কাছে 'তুমি' হয়ে যেত। এই ছিল মাস্টারমশায়ের বিশেষত্ব।


52.  নরুর প্রতি মাস্টারমশায়ের কী উপদেশ ছিল?

উত্তরঃ  মাস্টারমশাই নরুকে পড়াশোনার সময় সাহিত্যচর্চা কম করার উপদেশ দিয়েছিলেন।


53.  'পড়ব আমি'-কে, কী পড়তে চেয়েছিলেন?

উত্তরঃ হীবুর মুখে নরুর লেখা কাগজে বেরিয়েছে শুনে হেডমাস্টারমশাই তা পড়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।


54. চন্দ্রনাথ তার হীরুকে লেখা চিঠির কোন্ জায়গাটি সংশোধন করেছিল?

উত্তরঃ  হীরুকে লেখা চিঠির প্রারম্ভিক সম্বোধন অংশে 'প্রিয়বরেষু' সম্ভাষণটিকে কেটে চন্দ্রনাথ 'প্রীতিভাজনেষু' লিখেছিল।


55.  'আমার কাছে তার স্মৃতিচিহ্ন'- 'স্মৃতিচিহ্ন' টি কী?

উত্তরঃ হীবুকে উদ্দেশ্য করে লেখা চন্দ্রনাথের চিঠিটিকেই, হীরু 'স্মৃতিচিহ্ন' স্বরূপ রেখে দিতে চেয়েছিল।


56.  'উত্তর দিয়াছিলাম, জানি না। -বক্তা কী জানত না?

উত্তরঃ চন্দ্রনাথের ভবিষ্যৎ চিন্তায় ব্যাকুল হীরু যখন কথককে সে কোথায় গেল বা কী করবে জানতে চেয়েছিল, তখন অসহায় হয়ে নরেশ এই উত্তর দিয়েছিল।


57. কালপুরুষ কোথায় চলেছে?

উত্তরঃ  রচনাংশের কথক নরেশের কাল্পনিক দৃষ্টিপথে কিশোর চন্দ্রনাথের সঙ্গে সঙ্গে কালপুরুষ নক্ষত্র চলেছে।


❐ কমবেশি ৬০ শব্দের মধ্যে উত্তর দাও :


1. তবু সে চলিয়াছে।'- কার চলার কথা বলা হয়েছে? তার চলার সঙ্গে কার তুলনা করা হয়েছে? ১+২ = ৩

উত্তরঃ  'চন্দ্রনাথ' রচনাংশে কথক নরেশের কাল্পনিক দৃষ্টিপথে নরেশের সহপাঠী চন্দ্রনাথের চলার কথাই এখানে বলা হয়েছে।

গল্পকথক নরেশ চন্দ্রনাথের সঙ্গে কালপুরুষ নক্ষত্রের তুলনা করেছে। কালপুরুষ নক্ষত্রের মতোই তার দীপ্তি। চন্দ্রনাথের বলিষ্ঠ উন্নত চরিত্র, নির্ভীক দৃষ্টির সঙ্গে কালপুরুষের খাধারী ভীমকায় আকৃতির একটা আশ্চর্য সাদৃশ্য আছে। কালপুরুষের মতোই দৃপ্ত ভঙ্গিতে চন্দ্রনাথ অবিরাম অপ্রতিহত গতিতে আপনার জীবনের কক্ষপথে যাত্রা করে চলেছে, সেই ছবিই প্রশ্নে উদ্ধৃত উক্তিটিতে ফুটে উঠেছে।


2. 'এও হয়তো সেই বিচিত্র সমাবেশ।' উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ তারাশঙ্করের 'চন্দ্রনাথ' রচনাংশে হীরু, চন্দ্রনাথ এবং কথক নরেশের পারস্পরিক সম্পর্কের বন্ধন পরিস্ফুট হয়েছে। আগ্নেয়গিরির গর্ভের মধ্যে বিচিত্র্য দাহ্য বস্তুর সমাবেশ যেমন কল্পনাতীত তেমনি এই তিন সহপাঠীর বৈচিত্র্যও কল্পনাতীত। অখ্যাত গ্রামের ছোট্ট পরিসরে এই তিনজনের একই সময়ে অবস্থান ছিল বিস্ময়কর। দুর্দান্ত চন্দ্রনাথের সাথে কোমল স্বভাবের হীরুর দ্বৈরথ এবং কথকের উভয়ের প্রতি ভালোবাসার আকর্ষণে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা মানবচরিত্র ও মানবীয় সম্পর্কের বিচিত্র সমাবেশকেই মূর্ত করে তোলে। এমন অনুভূতি থেকেই স্মৃতিচারক নরেশের এমন মন্তব্য।


3. 'তাহারই দিকে আমাকে আকর্ষণ করিতেছে।- কে, কাকে আকর্ষণ করছিল? এরপর কী ঘটেছিল? ২+১=৩

উত্তরঃ চন্দ্রনাথ রচনায় নরেশ তার ঘরে একাকী বসেছিল। টেবিল ল্যাম্পের অকম্পিত আলোয় আলোকিত ঘরে বসে সে তার সহপাঠী হীরু ও চন্দ্রনাথের কথা ভাবছিল। সামনের দেয়ালের বড়ো আয়নাটির মধ্যে তারই প্রতিবিম্ব চিন্তাকুল নেত্রে তার দিকে চেয়েছিল। এই অলীক কায়াই তাকে স্মৃতিচারণায় বাধা দিয়ে যেন তার দিকেই আকর্ষণ করেছিল।

এরপর নরেশ টেবিল ল্যাম্পটা নিভিয়ে দেওয়ায় ঘরটা অন্ধকারে ভরে উঠেছিল। নরেশের কথায় অতীতের রূপ এই অন্ধকার। তাই সেই আঁধার পেরিয়ে তাঁর স্মৃতির সেই সহপাঠী চন্দ্রনাথ স্পষ্ট রূপ পরিগ্রহ করে তার সামনে উপস্থিত হয়েছিল।


4.  'অসাধারণ তাহার মুখাকৃতি।-কার মুখের কথা বলা হয়েছে? তার মুখশ্রীটি কেমন? ১+২=৩

উত্তরঃ  প্রশ্নে উদ্ধৃত উত্তিতে পাঠ্য রচনাংশের মুখ্য চরিত্র চন্দ্রনাথের 'মুখাকৃতি'-র অসাধারণত্বের কথাই এখানে বলা হয়েছে। চন্দ্রনাথের দেহ সবল ও সুস্থ। তার দীর্ঘাকৃতি শরীর এবং নি চোখের দৃষ্টি নির্ভীক। মুখের মধ্যে প্রথমেই চোখে পড়ে তার অদ্ভুত ক মোটা নাক। খুব সামান্য উত্তেজনাতেই তা স্ফীত হয়ে ওঠে। বড়ো বড়ো চোখ, চওড়া কপাল আর সেই কপালের ঠিক মাঝখানে শিরায় রচিত ত্রিশূল চিহ্ন। কিশোর বয়সেই কপালের মাঝের এই ত্রিশূল চিহ্ন সামান্য উত্তেজনাতেই প্রকট হয়ে ফুটে ওঠে।


5. হেডমাস্টারমহাশয়কে মনে পড়িতেছে। এ হেডমাস্টারমহাশয়ের বিবরণ দাও? এক্ষেত্রে তাঁকে মনে পড়ার দে কারণ কী? ১+২=৩

উত্তরঃ  শীর্ণ দীর্ঘকায় শান্ত প্রকৃতির মানুষ ছিলেন কথক নরেশের স্কুলের হেডমাস্টারমশাই। তিনি বোর্ডিং-এর ফটকের সামনে চেয়ার-বেঞ্চের আসন পেতে বসেছিলেন। তাঁর হাতে ছিল হুঁকা এবং চিন্তাকুল চোখের দৃষ্টি ছিল বিমর্ষ।

বিদ্যালয়ের পরীক্ষায় প্রথমবারের জন্য দ্বিতীয় হয়ে চন্দ্রনাথ পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করে হেডমাস্টারমশাইকে চিঠি লেখে। কা বিদ্রোহী চন্দ্রনাথের এই চিঠিতে তিনি বিচলিত হয়ে পড়েন। কা সেই পরিস্থিতির আলোচনাকালেই কথক হেডমাস্টারমশাইয়ের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছে।


6. সমস্ত স্কুলটা চঞ্চল, বিক্ষুব্ধ হইয়া উঠিয়াছে।'- উদ্ধৃতাংশের তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তরঃ উদ্ধৃতাংশটি তারাশঙ্করের 'চন্দ্রনাথ' রচনাংশ থেকে গৃহীত। গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র চন্দ্রনাথের আঘাতে সমস্ত স্কুলটা চঞ্চল ও বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল। স্কুলের পরীক্ষায় প্রথমবার দ্বিতীয় হয়ে চন্দ্রনাথ পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করে একটি চিঠি লিখেছিল। নিজের শ্রেষ্ঠত্ব সম্পর্কে সে যেমন নিঃসংশয় ছিল ঠিক একইভাবে হীরু যে তার সাহায্যেই প্রথম হয়েছে এ কথা জানাতে দ্বিধান্বিত ছিল না সে। তা ছাড়া স্কুলের শিক্ষকদের একাংশ যে হীরুকে প্রথম হতে সাহায্য করেছে এ কথাও সে হেডমাস্টারমশাইকে জানিয়ে প্রাইজ প্রত্যাখ্যান করায় স্কুলে আলোড়ন পড়ে যায়।


7. দিস ইজ ম্যাথম্যাটিক্স।'-প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তরঃ 'চন্দ্রনাথ' রচনায় কথক নরেশ হেডমাস্টারের কথায় বিক্ষুব্ধ চন্দ্রনাথের কাছে পৌঁছায়। সে সেখানে গিয়ে দেখে দারিদ্র্য জীর্ণ স্বল্পালোকিত ঘরে চন্দ্রনাথ আপন মনে কী যেন লিখছে। কথকের প্রশ্নের উত্তরে সে জানায় যে ইউনিভার্সিটি এঞ্জামিনের রেজাল্ট তৈরি করছে। তার মতে সে সাড়ে-পাঁচশো বা তার বেশি পেলে অমিয় এবং শ্যামা ছাড়া সবাই পাস করবে। আর সে যদি পাঁচশো পঁচিশের নীচে পায় তবে দশজন ফেল করবে আর কথক থার্ড ডিভিশনে পাস করবে। চন্দ্রনাথের একথায় নরেশের রাগ হয় এবং তা বুঝেই চন্দ্রনাথ হেসে বলে, "অনুপাতের আঙ্কিক নিয়মে যার মূল্য যতবার কষে দেখবে, একই হবে। একের মূল্য কমে সকলের কমবে। দিস ইজ ম্যাথম্যাটিক্স।”


8. 'কিন্তু সে হইল না।'-এখানে কী না হওয়ার কথা বলা হয়েছে?

উত্তরঃ  নরেশ হেডমাস্টারের নির্দেশে সহপাঠী চন্দ্রনাথের পুরস্কার প্রত্যাখ্যানে মতামত জানতে গিয়ে দেখে সে 'ইউনিভার্সিটি এঞ্জামিনের' ফলাফল তৈরি করেছে। তার ফলাফল ও দাম্ভিকতা দেখে নরেশের চন্দ্রনাথের উপর রাগ হয়। এ কথা চন্দ্রনাথ আঁচ করতে পেরে নরেশকে অনুপাতের আঙ্কিক নিয়মের প্রসঙ্গটি বোঝায়। রাগান্বিত নরেশ নিজের মনের কথাটা তখন পাড়বে ভাবছিল। ঠিক সে সময় চন্দ্রনাথের দাদা নিশানাথবাবু একটা চিঠি হাতে সেখানে এলে, নরেশের মনের কথা মনেই রয়ে যায় তা আর বলার সুযোগই হয় না।


9. 'ভদ্রলোক আত্মসংবরণের জন্য বিপুল প্রয়াস করিতেছেন।-কার কথা বলা হয়েছে? তাঁর এমন আচরণের কারণ কী? ১+২=৩

উত্তরঃ তারাশঙ্করের 'চন্দ্রনাথ' রচনাংশে উদ্ধৃতাংশে চন্দ্রনাথের দাদা নিশানাথবাবুর কথা বলা হয়েছে।

সেকেন্ড প্রাইজ প্রত্যাখ্যান করে চন্দ্রনাথ যে চিঠি প্রধান শিক্ষককে দিয়েছিল, দাদা নিশানাথ সেটা তাকে প্রত্যাখ্যান করে নিতে বলেন। নানান যুক্তির অবতারণা করে চন্দ্রনাথ তা অস্বীকার করায় নিশানাথ প্রচন্ড রাগে, অভিমানে ও উত্তেজনায় ভাইকে পৃথক করে দেবার কথাও বলেন। তাতেও চন্দ্রনাথ নির্বিকার থাকায় নির্বিরোধী ও শান্ত প্রকৃতির নিশানাথবাবুর এহেন প্রতিক্রিয়া।


10. কাঁপিতেছিলেন।'- চন্দ্রনাথের দাদার নাম কী? তিনি ক্ষোভে কাঁপছিলেন কেন?

উত্তরঃ চন্দ্রনাথের দাদার নাম ছিল নিশানাথ।

সেকেন্ড প্রাইড রিফিউজ করে চন্দ্রনাথ যে পত্র লিখেছিল হেডমাস্টারমশাইকে, সেই পত্র প্রত্যাখ্যান করার কথা বলেছিলেন নিশানাথবাবু। কিন্তু চন্দ্রনাথ তাতে রাজি হয়নি। সে সেকেন্ড প্রাইজ গ্রহণ করাকে নিজের আত্মমর্যাদার পক্ষে হানিকর বলে মনে করেছিল। এই কারণেই নিশানাথবাবু ক্ষোভ-দুঃখ-অভিমান ও যন্ত্রণায় কাঁপছিলেন।


11. 'এমন বুকে দাগ কাটা দৃষ্টি আমার জীবনে আমি খুব কমই দেখিয়াছি।'- কার দৃষ্টি? এমন কথা বলার কারণ কী? ১+২ = ৩

উত্তরঃ তারাশঙ্করের 'চন্দ্রনাথ' রচনাংশে চন্দ্রনাথের দাদা নিশানাথের ক্ষুব্ধ, বেদনাহত ও হৃদয়স্পর্শী দৃষ্টির কথা বলা হয়েছে।

চন্দ্রনাথের প্রাইজ প্রত্যাখ্যান বিষয়ক চিঠিতে গোটা স্কুল যখন চঞ্চল ও বিক্ষুব্ধ তখন আপাত নিরীহ, শান্ত নিশানাথবাবু ভাইয়ের এই আচরণ মেনে নিতে পারেননি। তাই ভাইকে হেডমাস্টারের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে চিঠি প্রত্যাহারের কথা বলেন। চন্দ্রনাথ কিন্তু যুক্তির জাল বিস্তার করে নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকে। এমনকি দাদার আলাদা হবার প্রস্তাবেও তার তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া হয়নি। ভাইয়ের এহেন আচরণে বাকরুদ্ধ নিশানাথের দৃষ্টিতে যে মর্মাহত ও ক্ষোভের প্রকাশ লক্ষ করা গিয়েছিল তারই কথা বলা হয়েছে।


 12. 'তাঁহাকে অকপটেই সমস্ত বলিলাম।'-কার কথা বলা হয়েছে? তাঁকে কী বলা হয়েছিল? ১ + ২ = ৩

উত্তরঃ প্রশ্নে উদ্ধৃত উক্তিটিতে স্কুলের হেডমাস্টারমশায়ের কথা বলা হয়েছে। রচনাংশের কথক চন্দ্রনাথের বাড়ি থেকে ফিরে সেখানকার সমস্ত ঘটনা অকপটে মাস্টারমশাইকে জানিয়েছিল। মাস্টারমশাই জেনেছিলেন চন্দ্রনাথের আচরণে অর্থাৎ সেকেন্ড প্রাইজ রিফিউজ করে লেখা চিঠিটি প্রত্যাখানের দাদার দেওয়া প্রস্তাবে, একরোখা-স্বাধীনচেতা চন্দ্রনাথ রাজি হয়নি। ফলে ক্ষোভে-দুঃখে-অভিমানে বেদনাহত নিশানাথ তাকে পৃথক হওয়ার কথা বলেন। এইসব কথাই স্কুলের বাইরে অপেক্ষমান মাস্টারমশাইকে বলেছিল নরেশ 


13.  আমারই অন্যায় হলো।'-বক্তা কে? তাঁর এমন কথা বলার কারণ কী? ১+২=৩

উত্তরঃ তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'চন্দ্রনাথ' রচনাংশ থেকে গৃহীত উদ্ধৃতিটির বস্তা কথকের স্কুলের হেডমাস্টারমশাই।

বিদ্যালয়ের পরীক্ষায় সেকেন্ড হওয়ার পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করে লেখা চন্দ্রনাথের পত্র হেডমাস্টারমশাইকে বিচলিত করে। তিনি কথক নরেশকে তার বাড়িতে পাঠান। সে ওখানে গিয়ে দেখে, দাদা নিশানাথের ক্ষমাপ্রার্থনা করে চিঠি প্রত্যাহারের নির্দেশও চন্দ্রনাথ অমান্য করে। ফলে দুই ভাইয়ের মধ্যে মতপার্থক্য চরমে ওঠে এবং উভয়ের সম্পর্কে ছেদ ঘটে। ফিরে এসে এই সমস্ত ঘটনা অকপটে মাস্টারমশাইকে জানালে, বৃদ্ধ মানুষটি ব্যথিত হৃদয়ে প্রশ্নে উদ্ধৃত উক্তিটি করেছিলেন।


14.  'হীবুই সেবার ফার্স্ট হইয়াছিল'-হীরু কে? সে কীভাবে ফার্স্ট হয়েছিল লেখো। ১+২=৩

উত্তরঃ  'চন্দ্রনাথ' রচনাংশে নরেশ, চন্দ্রনাথ ও হীরু সহপাঠী ছিল। এই 'হীরু' ছিল প্রভাবশালী স্কুলের সেক্রেটারির ভাইপো।

চন্দ্রনাথ বলেছিল, হীরু তার সাহায্যেই ফার্স্ট হয়েছে। ওর প্রাইভেট মাস্টার যে, সে স্কুলেরও অ্যাসিস্ট্যান্ট টিচার। কাজেই প্রশ্নপত্রটি হীরুর কাছে তিনি লুকিয়ে রাখেননি। এ ছাড়া খাতা দেখার সময় উত্তর বিচারের ক্ষেত্রেও তিনি ইচ্ছাকৃত পক্ষপাতিত্ব করেছেন। অঙ্কের পরীক্ষার দিন সে চন্দ্রনাথের কাছে মিনতি করলে, তার খাতা থেকে তিনটে অঙ্ক টুকেছিল হীরু। মাস্টারমশাই আগে বলে দেওয়া সত্ত্বেও সেসময় হীরু অঙ্কগুলি করতে পারেনি। এইরকমভাবেই হীরু স্কুলের পরীক্ষায় নিজের যোগ্যতার পরিবর্তে অন্যের সাহায্য ও পক্ষপাতিত্বেই প্রথম হয়েছিল।


15.  এই প্রস্তাবই আমার পক্ষে অপমানজনক।' -কোন্ প্রস্তাব এবং কেন তা অপমানজনক লেখো?

উত্তরঃ চন্দ্রনাথ জীবনে প্রথমবার সেকেন্ড হওয়ার জন্য পাওয়া পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিল। এই সংবাদ পেয়ে সেই পরীক্ষায় প্রথম স্থানাধিকারী হীরুর কাকা, হীরু মারফত তাঁকে বিশেষ পুরস্কার দেওয়ার কথা বলে পাঠান। কিন্তু বিদ্রোহী চন্দ্রনাথ তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে নিজের পুরস্কার গ্রহণের অক্ষমতার কথা বলে। আসলে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব এবং হীরুর অযোগ্যতা সম্পর্কে নিঃসংশয় চন্দ্রনাথ, 'স্পেশাল প্রাইজ'-এর - আড়ালে তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার এই হীন প্রচেষ্টাকে অপমানজনক - বলেই মনে করেছিল। আর তা সহ্য করতে না পেরেই সে প্রশ্নে উদ্ধৃত মন্তব্যটি করেছিল।


16.  'সেই মুহূর্তে উঠিয়া আসিলাম।'-বক্তার উঠে আসার কারণ কী?  অথবা, 'গুরুদক্ষিণার যুগ আর নেই।-উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য লেখো। ৩

উত্তরঃ হেডমাস্টার লেখা চিঠি নিয়ে চন্দ্রনাথের সাথে তার দাদার বিচ্ছেদ শুনে কথক নরেশ সেখানে হাজির হন। সেখানে কথক চন্দ্রনাথের মুখে দাদার সাথে সম্পত্তির ভাগ ও হীবুর কাকার দেওয়া পুরস্কার প্রত্যাখ্যানের কথা শোনে। এর পর সে আরও শোনায় যে হেডমাস্টারের চিঠির উত্তরে সে জানিয়েছে যে স্কুলের সাথে তার সব সম্পর্ক শেষ। সেজন্যই মাস্টারমশাইয়ের ডাকে সে সাড়া দেয়নি। দাম্ভিক একরোখা ও উদ্ধত চন্দ্রনাথের আচরণে ক্ষুব্ধ এবং বিরক্ত নরেশ সেই মুহূর্তে তার সঙ্গ ত্যাগ করে উঠে আসে।


17.  'চন্দ্রনাথের অনুমান অক্ষরে অক্ষরে মিলিয়া গিয়াছে।'-অনুমানটি কী লেখো। ৩

উত্তরঃ  'চন্দ্রনাথ' রচনাংশের কথক দারিদ্র্যজীর্ণ-স্বল্পালোকিত। চন্দ্রনাথের ঘরে গিয়ে দেখেছিল, সে একমনে ইউনিভার্সিটি এগজামিনের রেজাল্ট তৈরি করছিল। পুরোটাই ছিল অনুপাতের আঙ্কিক নিয়মের উপর ভিত্তি করে গড়ে তোলা একটি অনুমান। চন্দ্রনাথের সেই অনুমান অনুযায়ী সে নিজে যদি সাড়ে পাঁচশো কী তার বেশি পায়, তবে স্কুলের রেজাল্টে দুটো ফেল এবং বাকি সব পাস হবে। আর যদি তার নিজের নম্বর পাঁচশো পঁচিশের নীচে হয়, তবে দশটা ফেল হবে, আর কথক নরেশ থার্ড ডিভিশনে পাস করবে। ফলাফল বেরোনোর পর দেখা গিয়েছিল, একটি বাদে বাকি সবক্ষেত্রেই চন্দ্রনাথের অনুমান অক্ষরে অক্ষরে মিলে গেছে।


18.  'মনে মনে দুঃখিত না হইয়া পারিলাম না।-বস্তার এমন অভিমতের কারণ কী লেখো। ৩

উত্তরঃ কথক নরেশ মামার বাড়িতে থাকাকালীন হীবুর চিঠি পড়ে পরীক্ষার ফলাফল জানতে পারে। সে আশ্চর্য হয়ে দেখে। চন্দ্রনাথের অনুমান সম্পূর্ণ মিলে গেছে। চন্দ্রনাথের পূর্বাভাস মতো পরীক্ষায় দশ জন ফেল করেছে এবং সে তৃতীয় বিভাগেই পাস করেছে। এমনকি চন্দ্রনাথ নিজেও পাঁচশো পঁচিশের কমই পেয়েছে। কিন্তু চন্দ্রনাথের একটি অনুমান মেলেনি। হীরু চন্দ্রনাথকে পিছনে ফেলে এগিয়ে গেছে এবং স্বাভাবিকভাবেই সে পেয়েছে স্কলারশিপ। এই সংবাদ নরেশকে মনে মনে দুঃখিত করে তুলেছিল। কেননা চন্দ্রনাথের শ্রেষ্ঠত্ব সম্পর্কে তাঁর মনে কোনো সংশয় ছিল না। যোগ্যতমের এই পরাজয়কে নরেশ মন থেকে মেনে নিতে পারেনি বলেই সে এমন অভিমত ব্যক্ত করেছিল। কম


19.  'উৎসবের বিপুল সমারোহ সেখানে।-উৎসবের সমারোহ কোথায়? কেন এই উৎসবের আয়োজন?

উত্তরঃ  প্রদত্ত উদ্ধৃতাংশে কথকের সহপাঠী হীরুর স্কলারশিপ লাভ উপলক্ষ্যে তার বাড়িতে প্রীতিভোজনের যে উৎসব ও সমারোহ হয়েছিল, তার কথাই বলা হয়েছে।

বচন্দ্রনাথের সহপাঠী হীরু ছিল স্কুলের সেক্রেটারির ভাইপো। পরীক্ষার ফল বের হওয়ার পর দেখা গিয়েছিল, চন্দ্রনাথের একটি এ অনুমান মেলেনি। অর্থাৎ চন্দ্রনাথের বদলে হীরুই প্রথম হয়ে এ স্কলারশিপ পেয়েছিল। এই উপলক্ষ্যেই হীরুদের বাড়ির নিকটস্থ এ আমবাগানে প্রীতিভোজনের আয়োজন হয়। হীরুর শৌখিন কাকা এ চিনা লণ্ঠন ও রঙিন কাগজের মালার নিপুণ বিন্যাসে বাগানটিকে অতুলনীয় সাজে সাজিয়ে তুলেছিলেন।


20.  'ছাত্র তাঁহার অধিকারের গন্ডি পার হইলেই সে আর 'তুই' নয়, তখন সে 'তুমি' হইয়া যায় তাঁহার কাছে। -বলতে কথক কী বুঝিয়েছেন? ৩

উত্তরঃ  'চন্দ্রনাথ' রচনাংশে আমরা দেখি ইউনিভার্সিটির পরীক্ষায় স্কলারশিপ লাভ উপলক্ষ্যে হীরুর বাড়িতে প্রীতিভোজনের আয়োজন হয়। সেখানে স্কুলের হেডমাস্টারমশাই এবং নরেশেরও আমন্ত্রণ ছিল। উভয়ের দেখা হলে মাস্টারমশাই নরেশের সঙ্গে কথা প্রসঙ্গে তাকে 'তুই'-এর বদলে, 'তুমি' সম্বোধন করেন। কথক জানতেন, এই হল মাস্টারমশাইয়ের বিশেষত্ব। তাঁর বিশ্বাস ছিল স্কুলের গন্ডি ডিঙোলেই ছাত্রের প্রতি অধিকারবোধ যেমন কমে আসে, তেমনই ক্রমশ বড়ো হতে থাকা ছাত্রকে তাঁর প্রাপ্য সম্মানটুকুও দিতে হয়। এইজন্যই মাস্টারমশাই বিদ্যালয় থেকে পাস করে যাওয়া নরেশের সঙ্গে সম্মানজনক ব্যবধান রচনা করে, তাকে 'তুমি' বলে ডেকেছেন।


21.  'তবে ছেড়ো না, ও একটা বড়ো জিনিস'-বক্তা কে? এক্ষেত্রে তাঁর কোন মনোভাব প্রকাশিত হয়েছে? ১+২=৩ অথবা, 'জেনো, Shame in crowd but solitary pride হওয়াই উচিত ও বস্তু-বক্তা কে? তিনি এমন কথা বলেছেন কেন? ১+২=৩

উত্তরঃ  উদ্ধৃত অংশটির বক্তা হলেন তারাশঙ্করের 'চন্দ্রনাথ' রচনাংশের অন্তর্গত প্রধান শিক্ষক মহাশয়।

হীরুর বাড়িতে নরেশের হেডমাস্টারের সাথে সাক্ষাৎ হয় তখন তিনি তাকে পড়ার সময় সাহিত্যচর্চা একটু কম করতে বললেও তা একেবারে ছাড়তে নিষেধ করেন। তার মতে 'সাহিত্যচর্চা' বড়ো জিনিস। নিজের মনের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা প্রকাশ কম কথা নয়। তিনি অলিভার গোল্ডস্মিথের 'দ্য ডেসার্টেড ভিলেজ' থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, লেখালেখি সকলের সামনে লজ্জা বা অস্বস্তির বিষয় হলেও নিভৃতে গর্বের বস্তু। এক্ষেত্রে হেডমাস্টারের ছাত্রদরদি ও সাহিত্য রসিক মনের পরিচয় মেলে।


22. 'একটি দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া মাস্টারমহাশয় নীরবেই চলিয়া গেলেন,'-এর কারণ কী বলে তোমার মনে হয়?

উত্তরঃ তারাশঙ্করের 'চন্দ্রনাথ' রচনাংশে আমরা দেখি হীরুর স্কলারশিপ পাওয়া উপলক্ষ্যে প্রীতিভোজে চন্দ্রনাথ অনুপস্থিত। এ কথা হেডমাস্টারও জানতেন, তিনি বিষয়টি হীরু ও নরেশের সঙ্গে চন্দ্রনাথ প্রসঙ্গে আলোচনা কালে উত্থাপন করেন। আসলে মেধাবী চন্দ্রনাথের গৃহত্যাগ তাঁকে ব্যাকুল করে তুলেছিল। যোগ্যতম এবং সম্ভাবনাময় এক কিশোরকে পরাজিত হয়ে ভবিতব্যের স্রোতে স্বেচ্ছায় ভেসে যেতে দেখে তা রোধ করতে না পারার অব্যক্ত বেদনাই হেডমাস্টারের দীর্ঘ নিশ্বাসের কারণ।


23.  'চন্দ্রনাথ একখানা চিঠি দিয়ে গেছে।'-উক্তিটি কার? চন্দ্রনাথ কাকে, কী চিঠি দিয়ে গেছে? ১ + ২ = ৩

উত্তরঃ  'চন্দ্রনাথ' রচনাংশে প্রশ্নে উদ্ধৃত উক্তিটির বক্তা কথকের সহপাঠী হীরু। হীবুর স্কলারশিপ পাওয়ার আনন্দে আয়োজিত প্রীতিভোজ অনুষ্ঠানের আগেই চন্দ্রনাথ গ্রাম ছেড়ে চলে যায়। তবে যাওয়ার আগে সে হীরুকে একটি চিঠি লিখেছিল। সেই চিঠিতে লেখা ছিল, হীরুর সফলতায় চন্দ্রনাথ আনন্দিত। কিন্তু সেই সাফল্যের উৎসবে সে যোগ দিতে পারছে না। সেইসঙ্গে চন্দ্রনাথ এও জানায় যে স্কলারশিপ পাওয়ার আনন্দে হীরু এই উৎসব না করলেই পারত। তার মতে, স্কলারশিপ পাওয়াটা এমন কিছু বড়ো জিনিস নয়।


24. 'এইটেই আমার কাছে তার স্মৃতিচিহ্ন।'-কীসের কথা বলা হয়েছে? সেটাই শেষ স্মৃতিচিহ্ন কেন? ১+২=৩

উত্তরঃ  উদ্ধৃতাংশে গ্রাম ছেড়ে চলে যাবার আগে হীবুকে লেখা চন্দ্রনাথের চিঠির কথা বলা হয়েছে। হীরুর স্কলারশিপ পাওয়ার আনন্দোৎসবে চন্দ্রনাথ যোগ দিতে না পারায় সে হীরুর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করে এবং হীরুর সাফল্যে আনন্দ প্রকাশ করে একখানি চিঠি লেখে। চিঠিতে সে এ কথাও লেখে স্কলারশিপ পাবার জন্য এত বড়ো উৎসবের প্রয়োজন ছিল না। চিঠিতে এ কথা স্পষ্ট, চন্দ্রনাথ নিজের শ্রেষ্ঠত্ব সম্পর্কে আস্থাশীল হলেও হীরুর সাফল্য ঘিরে ছিল তার অবিশ্বাস। এই সত্য জেনেও হীরু তার মেধাবী সহপাঠীকে শ্রদ্ধা করত। আর সে জন্যই সে স্মৃতিচিহ্ন স্বরূপ চিঠিটি জীবনভর রাখতে চেয়েছিল।


25. নীল আকাশে ছায়াপথ, পার্শ্বে কালপুরুষ নক্ষত্র সঙ্গে সঙ্গে চলিয়াছে।-উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ  তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'চন্দ্রনাথ' রচনাংশের শেষে মেধাবী ও চিরবিদ্রোহী চন্দ্রনাথ গৃহত্যাগ করে। প্রথম স্থানাধিকারী হীরুর স্কলারশিপ পাওয়াকে কেন্দ্র করে তার বাড়িতে আয়োজিত প্রীতিভোজনের অনুষ্ঠানকে সে মেনে নিতে পারেনি। সেই দিনটিকেই চন্দ্রনাথ গ্রাম ছেড়ে পাড়ি দেওয়ার যাত্রাদিন হিসেবে স্থির করে। স্বাতন্ত্র্য-স্বকীয়তা এবং আত্মসম্মানের প্রতীক চন্দ্রনাথের একাকী যাত্রাকে কথক নরেশ যেন বিদ্রোহী মানবাত্মার অনন্তযাত্রার সঙ্গে তুলনা করেছে। দু-ধারের মাঠ-ঘাট-প্রান্তরকে পিছনে ফেলে সে এগিয়ে চলেছে। গভীর নীল আকাশের ছায়াপথ এই পরিক্রমণের সাক্ষী আর তাঁর একলা পথের সঙ্গী প্রদীপ্ত কালপুরুষ।


❐কমবেশি ১৫০ শব্দের মধ্যে উত্তর দাও :


1.  'চন্দ্রনাথ' রচনাংশটির নামকরণের সার্থকতা বিচার করো।

উত্তরঃ  তারাশঙ্করের 'আগুন' উপন্যাস থেকে গৃহীত আমাদের পাঠ্য 'চন্দ্রনাথ' রচনাংশটি। সাহিত্যে নামকরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। রচয়িতার সৃষ্টিকর্মের মূল উদ্দেশ্যটি প্রতিভাত হয় নামকরণের মাধ্যমে। নামকরণের বিভিন্ন আঙ্গিক লক্ষ করা যায়। যেমন- চরিত্রকেন্দ্রিক, ঘটনাকেন্দ্রিক, বিষয়কেন্দ্রিক। ব্যঞ্জনা ও রূপকধর্মী নামকরণও হয়ে থাকে। 'চন্দ্রনাথ' রচনাংশটির নামকরণ চরিত্রকেন্দ্রিক। আমাদের বিচার্য এই নামকরণ কতটা সার্থক ও যথাযথ হয়েছে তা দেখা।

আত্মকথনের ঢঙে বর্ণিত নরেশের উপলব্ধির সূত্র ধরেই আমরা চন্দ্রনাথকে চিনতে পারি। রচনাংশের সমস্ত ঘটনার গতিপ্রকৃতি চন্দ্রনাথের দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত হয়েছে। চন্দ্রনাথের শ্রেষ্ঠ হবার অহংকার ও তার যশের প্রতি যে মোহ তাই যেন কাহিনিকে নিয়ন্ত্রণ করেছে। স্কুলের পরীক্ষায় প্রথম হওয়া চন্দ্রনাথ দ্বিতীয় হওয়াটা কোনো ভাবেই মানতে পারেনি। সেই জন্য দ্বিতীয় হওয়ার পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করার চিঠি পাঠায় হেডমাস্টারকে। তার দাদা নিশানাথবাবু সে চিঠি প্রত্যাহার করার কথা বললেও সে অনড় থেকেছে, এমনকি দাদার সাথে সম্পর্ক পর্যন্ত ছিন্ন করেছে। পরীক্ষায় প্রথম না হওয়ায় ও স্কলারশিপের উৎসবে গরহাজির থেকে চন্দ্রনাথ ঘটনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে। ঘটনার শেষে যশ, আত্মপ্রতিষ্ঠা ও আত্মমর্যাদার যে পথে সে পা বাড়িয়েছে, সে পথ তাকে একলাই পাড়ি দিতে হয়। সে পথে তার সঙ্গী শুধু আকাশের উজ্জ্বল কালপুরুষ। নানান প্রেক্ষিতে চন্দ্রনাথের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থানই চন্দ্রনাথ নামকরণের যথার্থ সার্থকতা।


2.  'কালপুরুষ নক্ষত্রের সঙ্গে চন্দ্রনাথের তুলনা করিয়া আমার আনন্দ হয়।'-উক্তিটি কার? কেন এমন তুলনার প্রসঙ্গ এসেছে গল্পে? ১+৪=৫

উত্তরঃ উক্তিটি 'চন্দ্রনাথ' পাঠ্যাংশের কথক চরিত্র নরেশের।

চন্দ্রনাথ চরিত্রের বলিষ্ঠতা, কিশোর বয়সেও তার নিজ সিদ্ধান্তে অটল থাকবার ক্ষমতা এবং তেজোদৃপ্ত-নির্ভীক দৃষ্টি নরেশের মনে চিরস্থায়ী ছাপ ফেলে গেছে। দীর্ঘদিনের জীবন-ইতিহাস পেরিয়ে, আকাশের উজ্জ্বল কালপুরুষ নক্ষত্রের সঙ্গেই নরেশ তার তুলনা খুঁজে পেয়েছে। কালপুরুষের খঙ্গধারী দৃপ্তভঙ্গি ও উজ্জ্বল প্রদীপ্ত পরিধির সঙ্গে চন্দ্রনাথের উন্নত চরিত্র যেন আশ্চর্যভাবে সাদৃশ্যযুক্ত। কালপুরুষ যেমন নিজের কক্ষপথে চিরকাল আবর্তিত। হয়ে চলেছে, চন্দ্রনাথও একইরকম অপ্রতিহত গতিতে নিজের জীবনপথে একাকী ভ্রাম্যমাণ। একটি মুহূর্তের জন্যেও সে কখনও পিছন ফিরে চায়নি, কোথাও সামান্য বিশ্রামের প্রয়োজন অনুভব করেনি। যাকে পাবার জন্য তার এই দৃপ্ত পথযাত্রা তাকে সে কখনও পায়নি, তবু তার পথচলা থামেনি। আকাশের কালপুরুষের সঙ্গে চন্দ্রনাথ চরিত্রের এই আশ্চর্য সাদৃশ্য লক্ষ করেই কথক এমন তুলনা করেছে।


3.  'এমনই দৃপ্তভঙ্গিতে সেও আপনার জীবনের কক্ষপথে চলিয়াছে,'-যার সম্পর্কে এই উক্তি তার চরিত্রের পরিচয় দাও। অথবা, 'চন্দ্রনাথ' রচনাংশের তিন সহপাঠীর মধ্যে কার চরিত্রটি তোমার প্রিয় বলে মনে হয়েছে এবং কেন, যুক্তিসহ ব্যাখ্যা করো। ৫

উত্তরঃ  'চন্দ্রনাথ' রচনাংশের কেন্দ্রীয় চরিত্র চন্দ্রনাথ। নরেশ, এ হীরু ও চন্দ্রনাথ ছিল সহপাঠী। স্কুলে তারা একই শ্রেণিতে পড়ত। বি কিন্তু চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যে এবং মানসিক বলে বলীয়ান চন্দ্রনাথ ছিল প সকলের থেকেই আলাদা। সেইজন্যই নরেশের স্মৃতিচারণায় দীর্ঘ ভজীবনপথের বহু ঘটনার মাঝেও চন্দ্রনাথ বলিষ্ঠতায়, স্বকীয়তায়, ও প্র স্বাতন্ত্র্যে অমলিন হয়ে আছে। চন্দ্রনাথের ছিল অটল আত্মবিশ্বাস। প সে জীবনে কোনোদিন দ্বিতীয় হয়নি। তাই পরীক্ষায় হীরুর চি অসদুপায়ে প্রথম হওয়াকে সে মানতে পারেনি এবং দ্বিতীয় হবার অ পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করে সে হেডমাস্টারকে চিঠি পর্যন্ত দেয়। তার দাদা নিশানাথবাবু তাকে এ ব্যাপারে বোঝাতে গেলেও সে তার নিজের সিদ্ধান্তে অবিচল থেকেছে, এমনকি দাদার সাথে সে সম্পর্ক পর্যন্ত ছিন্ন করেছে। সে স্কুলের সাথেও সব সম্পর্ক চুকিয়ে দিয়েছে। হীবুর সাথে কথা প্রসঙ্গে সে প্রধান শিক্ষককে উদ্দেশ্য করে বলে, "গুরুদক্ষিণার যুগ উঠে গেছে", এতে তার কে ঔদ্ধত্যই প্রকাশ পেয়েছে। অহংবোধ তার এমন জায়গায় পৌঁছায় যে সে হীরুর স্কলারশিপের বিষয়টিও সহজভাবে নিতে পারেনি। তাই সে হীরুর বাড়ির নিমন্ত্রণ এড়িয়ে গিয়ে এসব করার প্রয়োজন ছিল না বলে উপদেশ দিয়েছে। সবদিক বিচার করে দেখলে চন্দ্রনাথ অহংকারী, চূড়ান্ত আত্মমর্যাদার অধিকারী ও আত্মকেন্দ্রিক। চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের নিরিখে সে কালপুরুষ নক্ষত্রের দীপ্তির মতো স্বতন্ত্র, তবে তার চলার পথ সঙ্গীহীন।


4. 'অন্ধকারের মধ্যে সুস্পষ্ট রূপ পরিগ্রহ করিয়া সম্মুখে দাঁড়াইল কিশোর চন্দ্রনাথ।'-এখানে 'অন্ধকারের মধ্যে সুস্পষ্ট রূপ পরিগ্রহ' করা বলতে কথক কী বুঝিয়েছেন? চন্দ্রনাথের সঙ্গে এই আশ্চর্য বিবরণ কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে তোমার মনে হয়েছে? ২+৩=৫

উত্তরঃ কথক নরেশ যখন একা আলোকিত ঘরে চন্দ্রনাথ, হীরু ও নিশানাথকে নিয়ে স্মৃতিচারণে ব্যস্ত তখন তার সামনের দেয়ালে আটকানো আয়নার মধ্যে তার প্রতিবিম্ব যেন তার দিকে চিন্তাকুল চোখে চেয়ে বসে আছে। কায়াময় এই অলীক ছায়া যেন তাকে স্মৃতিচারণে বাধা দিয়ে তার দিকে আকর্ষণ করছে। কথক আলো নিভিয়ে দিলে, ঘর অন্ধকারে ঢাকে। অন্ধকার অতীতের রূপ। অন্ধকারে হারিয়ে যায় যেসব সোনালি দিন তা আর আলোয় ফেরে না। তাই সে অন্ধকারের মধ্যে অতীতকে খুঁজে বেড়ায় আর সেই অন্ধকারে স্মৃতির সরণি বেয়ে যেন সামনে দাঁড়ায় সহপাঠী চন্দ্রনাথ।

কথকের বিবরণ অনুসারে চন্দ্রনাথের প্রতিভার তুলনা চলে একমাত্র মধ্য আকাশের প্রদীপ্ত কালপুরুষের সাথে। তার অদ্ভুত মোটা নাক, বড়ো বড়ো চোখ, বলিষ্ঠ দীর্ঘ দেহ এবং চওড়া কপালের মাঝখানে ফুলে ওঠা ত্রিশূল চিহ্ন তার ব্যক্তিত্বকে অনন্যতা দান করে। সে পরীক্ষায় দ্বিতীয় হওয়াকে মেনে না নিয়ে হীরুকে অযোগ্য হিসেবে তুলে ধরে সেকেন্ড প্রাইজ প্রত্যাখ্যান করে, এমনকি, দাদার নির্দেশ অমান্য করে আলাদা হয়। সম্পাদকের বিশেষ প্রাইজ নেওয়া চন্দ্রনাথের কাছে অবমাননাকর, তাই সে গৃহত্যাগ করে। মেধাবী ও প্রতিভাধর চন্দ্রনাথের মধ্যে কথক আগুনের তেজ প্রত্যক্ষ করেছে। আগুনের সৌন্দর্য অন্ধকারেই প্রকাশিত হয়। যেমন করে কালপুরুষ নক্ষত্রের ঔজ্জ্বল্য প্রকাশ পায় রাত্রির গভীর অন্ধকারে। কথক নরেশও তাই নিঃসঙ্গ ও চিরবিদ্রোহী চন্দ্রনাথের প্রতিভার দীপ্তি, মেধা ও উজ্জ্বল ব্যক্তিত্বকে অন্ধকারের মধ্যেই পুনরাবিষ্কার করেছে।


5.  'চন্দ্রনাথের আঘাতে সমস্ত স্কুলটা চঞ্চল, বিক্ষুব্ধ হইয়া উঠিয়াছে।'-চন্দ্রনাথ কে? কেন তার আঘাতে সমস্ত স্কুল 'চঞ্চল, বিক্ষুব্ধ' হয়ে উঠেছিল। ১ + ৪ = ৫

উত্তরঃ  'চন্দ্রনাথ' চরিত্রটি তারাশঙ্করের 'চন্দ্রনাথ' রচনাংশের কেন্দ্রীয় চরিত্র। সে-গল্পের কথক নরেশ ও হীরুর সহপাঠী এবং অত্যন্ত মেধাবী। সে পরীক্ষায় কখনোই প্রথম ছাড়া দ্বিতীয় হয়নি। অত্যন্ত বলিষ্ঠ ও দৃপ্ত চরিত্রের অধিকারী ছিল এই চন্দ্রনাথ।

 অত্যন্ত মেধাবী ও আশ্চর্য ব্যক্তিত্বের অধিকারী চন্দ্রনাথ স্কুলের পরীক্ষায় কখনও প্রথম ছাড়া দ্বিতীয় হয়নি। নিজের শ্রেষ্ঠত্ব সম্পর্কে তার মনে বিন্দুমাত্র সংশয়ও ছিল না। তাই স্কুলের পরীক্ষায় সেক্রেটারির ভাইপো হীরুর প্রথম হওয়া চন্দ্রনাথ মেনে নিতে পারেনি। সে অভিযোগ করে সেক্রেটারির ভাইপোর প্রথম হওয়ার পিছনে স্কুলের শিক্ষকদের হাত আছে। এ ছাড়াও তার অভিযোগ হীরু অন্তত তিনটি অঙ্ক তার খাতা থেকে টুকেছে। চন্দ্রনাথ এই অবিচারকে মন থেকে মেনে নিতে পারেনি। তাই সে নিজের সেকেন্ড প্রাইজ প্রত্যাখ্যান করে প্রতিবাদ জানিয়েছিল। বিদ্রোহী চন্দ্রনাথের প্রাইজ প্রত্যাখ্যান করে দেওয়া সেই চিঠির অভিঘাতেই গোটা স্কুল 'চঞ্চল ও বিক্ষুব্ধ' হয়ে উঠেছিল।


6.  'এমন বুকে দাগকাটা দৃষ্টি আমার জীবনে আমি খুব কমই দেখিয়াছি'-বক্তার এমন মন্তব্যের কারণ কী? উদ্দিষ্ট ব্যক্তির যেরূপ বর্ণনা 'চন্দ্রনাথ' রচনাংশে ফুটে উঠেছে ও তা নিজের ভাষায় লেখো। ২+৩=৫

উত্তরঃ  উদ্ধৃতাংশটির বক্তা হলেন 'চন্দ্রনাথ' রচনাংশের কথক নরেশ। চন্দ্রনাথের পত্রাঘাতে গোটা স্কুল যখন চঞ্চল ও বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল তখন নিশানাথবাবু তাঁর ভাইকে অর্থাৎ চন্দ্রনাথকে হেডমাস্টারমশাইয়ের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করে চিঠি প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন। কেননা তিনি ভাইয়ের এই ঔদ্ধত্য মেনে নিতে পারেননি। ভাই তার সিদ্ধান্তে অনড় থেকে অভিমানে আহত এবং ক্ষুব্ধ দাদার আলাদা হবার প্রস্তাবটি সহজেই মেনে নেয়। ভাইয়ের এই অপ্রত্যাশিত আচরণে নিশানাথের দৃষ্টিতে যে মর্মস্পর্শী ক্ষোভও বেদনা প্রতিফলিত হয়েছিল তা দেখেই বক্তার এরূপ মন্তব্য।

চন্দ্রনাথের সেকেন্ড প্রাইজ প্রত্যাখ্যানের চিঠিতে স্কুল যখন উত্তাল তখন হেডমাস্টারমশাই তার দাদা নিশানাথকে পুরো বিষয়টি জানান। কিন্তু এর ফল হল দুটি ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি ও জীবনদর্শনের বিচ্ছেদ। চন্দ্রনাথের অভিধানে আপস-সহাবস্থান ও সহনশীলতা হল অবমাননাকর। বিপরীতে নিশানাথ নির্বিরোধী ও শান্ত প্রকৃতির। তাঁর মতে শিক্ষকদের অসম্মান করার অধিকার কোনো ছাত্রেরই নেই, তাই চন্দ্রনাথের অবিলম্বে ক্ষমা চাওয়া উচিত প্রধান শিক্ষক মশাইয়ের কাছে। তার এও মত যে চন্দ্রনাথের যে-কোনো ব্যর্থতাই হীরুর সাফল্য। তাই তার এই ফল মানা উচিত। প্রথম স্থানাধিকারীর সাফল্যকে অবজ্ঞা করা কোনোদিন 'ডিগনিটি' হতে পারে না। বরং ফল মেনে হেডমাস্টারের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। নিশানাথ ভাইয়ের অনড় অবস্থান ও একরোখা স্বাধীনসত্তাকে অভিভাবক হিসেবে প্রতিহত করার জন্য সম্পর্ক ছেদের ভয় দেখায়। ভাই কিন্তু তার এই প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দেয় তার প্রস্তাবে সায় দিয়ে। ভাইয়ের হৃদয় বিদারক আচরণে হতবাক নিশানাথের প্রতিক্রিয়াই এক্ষেত্রে ফুটে উঠেছে।


7.  'তিনি এখনও সেই তেমনই একা চিন্তাকুল নেত্রে বসিয়া আছেন।'- কার কথা বলা হয়েছে? তিনি চিন্তায় আকুল কেন? ১+৪=৫

উত্তরঃ  তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'চন্দ্রনাথ' রচনাংশে, এখানে কথক নরেশের স্কুলের হেড মাস্টারমহাশয়ের কথা বলা হয়েছে।

 চন্দ্রনাথের সেকেন্ড প্রাইজ প্রত্যাখ্যানের পত্রটি স্কুলের হেডমাস্টারমশাই পেয়েছিলেন। তিনি চন্দ্রনাথের পত্রাঘাতে বিক্ষুব্ধ স্কুলের পরিস্থিতি প্রশমিত করার জন্য নরেশকে সরাসরি তার মতামত জেনে আসার নির্দেশ দেন। নরেশ সেই দারিদ্র্যলাঞ্ছিত ঘরে গিয়ে এক অতুলনীয় প্রতিভার, পরীক্ষার সম্ভাব্য ফলাফল বিষয়ে অনুমিত নির্ভুল নমুনাটি যেমন দেখে, তেমনই দুই ভাইয়ের চিরবিচ্ছেদের সাক্ষী হয়। চন্দ্রনাথের দাদা নির্বিরোধী নিশানাথবাবু চেয়েছিলেন তাঁর ভাই হেডমাস্টারমশাইকে লেখা পত্রটি প্রত্যাখ্যান করে ক্ষমা চেয়ে নিক। কিন্তু চন্দ্রনাথ সে-পথে হাঁটেনি। চিরবিদ্রোহী এই কিশোর অন্যায়ের সঙ্গে কোনোরকম আপস করতেই শেখেনি। ফলে নিশানাথবাবু ভাইয়ের আচরণকে একরোখা দুর্বিনয়ের প্রকাশ ভেবে ক্ষুব্ধ ও বেদনাহত হন। এমনকি জেদি-স্বাধীনচেতা চন্দ্রনাথকে বাগে আনতে পৃথক হয়ে যাওয়ার কথাও বলেন। কিন্তু নির্বিকার চন্দ্রনাথ পৃথক হওয়ার প্রস্তাবে রাজি হয়ে নিজের সিদ্ধান্তেই অনড় থাকে। এই বেদনাবহ পরিণতির কথা জানানোর জন্য নরেশ ফিরে এসে মাস্টারমশাইকে ঠিক একইভাবে বসে থাকতে দেখে। তাঁর এই বাহ্যিক স্থিরতা আসলে এক সহৃদয় ছাত্রদরদি মানুষের অন্তর্মনের আন্তরিক উদ্বেগ, গভীর টানাপোড়েন ও ব্যাকুলতার অবিস্মরণীয় দৃষ্টান্ত। সেইজন্যই তিনি চিন্তায় আকুল হয়েছিলেন।


8. করিতেছিলাম।'-কোন্ প্রসঙ্গে বক্তার এই মনোভাব প্রকাশিত হয়েছে? 'চন্দ্রনাথ' সম্পর্কে বস্তার কোন্ দৃষ্টিভঙ্গি স্থায়ী হয়েছিল? ২+৩=৫ অথবা, 'চন্দ্রনাথের সহিত সংস্রব রাখিব না।'-'সংস্রব' না রাখার কারণ কী? কথক শেষ পর্যন্ত কী করেছিল? ২+৩=৫

 উত্তরঃ উদ্ধৃত স্বগতোক্তিটি তারাশঙ্করের 'চন্দ্রনাথ' রচনাংশের কথক নরেশের। স্কুলে প্রথমবার দ্বিতীয় হয়ে চন্দ্রনাথ পুরস্কার নেবে না জানানোয় স্কুল চঞ্চল ও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। হেডমাস্টারমশাইও ন চিন্তাকুল ও বিমর্ষ হয়ে পড়েন এবং চন্দ্রনাথের দাদা নিশানাথকে হ ডেকে সব বলেন। নিশানাথ ভাইকে শত বোঝালেও সে তার ও প্রতিজ্ঞায় অবিচল থাকে। ভাইকে সত্যের পথে আনার জন্য এ সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা তুলে ভয় দেখালে নিরুত্তাপ চিত্তে ভাই ক তাতে সায় দেওয়াতে দাদা বিস্মিত ও মর্মাহত হন। এইসব ঘটনা এক কথককে হতবাক ও বিস্মিত করে। তাই কথক বাল্যবন্ধু চন্দ্রনাথের ১। সাথে সম্পর্ক না রাখার সংকল্পটা দৃঢ় করার কথা ভাবে।

 চন্দ্রনাথ এক বিরল চরিত্র ধর্মের অধিকারী। প্রতিদিনকার জীবনে ঘটে চলা অজস্র অন্যায়, অসাধুতা ইত্যাদির সাথে আমরা। মানিয়ে চলতে অভ্যস্ত হলেও চন্দ্রনাথ কিন্তু সবকিছুর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। তাঁর এই চলার পথে সে কাউকেই সঙ্গী হিসেবে পায় না। আর এই নিঃসঙ্গতার বহিঃপ্রকাশই পরিলক্ষিত হয় তার। দম্ভ ও অসহিষু আচরণে। চন্দ্রনাথের এহেন আচরণ নরেশ হৃদয়। দিয়ে অনুভব করতে পারে বলেই সে চন্দ্রনাথের ওপর বেশিক্ষণ রাগ করে থাকতে পারে না। সম্পর্ক রাখবে না ভেবেও সে সবার আগে চন্দ্রনাথের কাছে যায়। চন্দ্রনাথের শ্রেষ্ঠত্ব সম্পর্কে নিঃসংশয় বলেই নরেশ তার পরাজয়ে দুঃখ পায়। তাই চন্দ্রনাথের আলোচনা প্রসঙ্গে নরেশ কালপুরুষের উপমা টেনে এনে তার অন্তর্মনের সবটুকু ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা উজাড় করে দিয়েছে।


9.  'হীবুর পত্র পাইয়া কিন্তু অবাক হইয়া গেলাম।'-বক্তা কে? অবাক হয়ে গিয়েছিল কেন?১+৪ = ৫

উত্তরঃ  'চন্দ্রনাথ' রচনাংশ থেকে প্রদত্ত উক্তিটির বক্তা হল চন্দ্রনাথ ও হীরুর সহপাঠী নরেশ।

 রচনাংশের কথক নরেশ মামার বাড়িতে থাকাকালীন হীরুর পত্র মারফত পরীক্ষার ফলাফল জানতে পারে। কিন্তু হীবুর এই চিঠি পেয়ে নরেশ অবাক হয়ে গিয়েছিল। কারণ সে দেখে, চন্দ্রনাথের অনুমান একেবারে মিলে গেছে। তার কথা মতো, দশটি ছেলে ফেল করেছে। নরেন তৃতীয় বিভাগেই পাস করেছে এবং চন্দ্রনাথও পাঁচশো পঁচিশ পায়নি। তবে চন্দ্রনাথের পূর্বাভাস মতো। শুধু একটি ফলাফলই মেলেনি-তা হল চন্দ্রনাথকে পিছনে ফেলে হীরু এগিয়ে গিয়েছে। স্কলারশিপ পেয়েছে সে। অসামান্য মেধা ও প্রতিভার অধিকারী চন্দ্রনাথের এই পরাজয় নরেশকেও ব্যথিত চ করেছিল। এমন ফলাফল দেখে তার মনে হয়েছিল, চন্দ্রনাথের সঙ্গে হীরুর অনেক প্রভেদ। যোগ্যতম চন্দ্রনাথের শ্রেষ্ঠত্বে কোনো সন্দেহই নেই তার। প্রশ্নে উদ্ধৃত অংশে কথক নরেশের তার সহপাঠী চন্দ্রনাথের প্রতি এই বিস্ময়কর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসাই ক প্রকাশিত হয়েছে।


10.  'উৎসবের বিপুল সমারোহ ম সেখানে।'-উৎসবের সমারোহ কোথায়? কেন এই উৎসবের অ আয়োজন? এই উৎসব সম্পর্কে চন্দ্রনাথের মতামত কী যে ছিল? ১+২+২=৫

উত্তরঃ প্রদত্ত উদ্ধৃতাংশে কথকের সহপাঠী হীরুর স্কলারশিপ তে লাভ উপলক্ষ্যে তার বাড়িতে প্রীতিভোজনের যে উৎসব ও ত সমারোহ হয়েছিল, তার কথাই বলা হয়েছে।

 চন্দ্রনাথের সহপাঠী হীরু ছিল স্কুলের সেক্রেটারির ভাইপো। পরীক্ষার ফল বেরোনোর পর দেখা গিয়েছিল, হীরু প্রথম হয়ে স্কলারশিপ পেয়েছে। সেই উপলক্ষ্যেই হীরুদের বাড়ির কাছের আমবাগানে প্রীতিভোজনের আয়োজন হয়। হীরুর কাকা চিনা লণ্ঠন ও রঙিন কাগজের মালা দিয়ে বাগানটিকে অতুলনীয় সাজে ভূ সাজিয়ে তুলেছিলেন।

স্কলারশিপ পাওয়ার আনন্দে হীরু যে প্রীতিভোজ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল, সেই অনুষ্ঠানে চন্দ্রনাথও নিমন্ত্রিত ছিল। 

কিন্তু সেই উৎসবের আগেই চন্দ্রনাথ গ্রাম ছেড়ে চলে যায়। তবে যাওয়ার আগে সে হীরুকে একটি চিঠি লিখেছিল। সেই চিঠিতে চন্দ্রনাথ ছিল, হীরুর সফলতায় আনন্দ প্রকাশ করলেও সেই সাফল্যের উৎসবে যোগ দিতে না পারার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। সেই সঙ্গে চন্দ্রনাথ এও জানাতে ছাড়ে না, স্কলারশিপ পাওয়ার আনন্দে হীরু এই উৎসব না করলেই পারত। কেননা স্কলারশিপ পাওয়াটা বিশেষত, পক্ষপাতিত্বের দ্বারা স্কলারশিপ পাওয়াটা জীবনে এমন কিছু বড়ো জিনিস নয়। এই ছিল চন্দ্রনাথের অভিমত।


11. 'হীরুর কথা মনে করিয়া আকাশের দিকে চাহিলে, মনে পড়ে শুকতারা।'-এই উদ্ধৃতির আলোকে হীরুর চরিত্র বিচার করো।

উত্তরঃ তারাশঙ্করের 'চন্দ্রনাথ' রচনাংশে হীরু পার্শ্বচরিত্র হলেও আপন স্বাতন্ত্র্যে সে উজ্জ্বল। হীরুর সম্পর্কে কথকের জবানিতে যা পাওয়া যায় তা থেকে হীরু চরিত্র সম্পর্কে একটা রূপরেখা সহজেই অনুমান করা যায়। কথক নরেশ তার সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেছেন হীরুর লাবণ্যময় দেহ, আয়ত কোমল চোখে মোহময় দৃষ্টি সকলের নজর কাড়ত। তার কথা মনে করে আকাশের দিকে চাইলে শুকতারার কথা মনে পড়ে কেননা সে শুকতারার মতোই প্রদীপ্ত, তার দীপ্তি স্নিগ্ধ ও কোমল। সে প্রভাবশালী পরিবারের সন্তান হলেও ছিল নিরহংকার। মেধার সাথে সাথে সৌজন্যবোধ ও বন্ধুপ্রীতি তাকে আর পাঁচটা চরিত্রের চেয়ে আলাদা ভাবে পাঠকের কাছে প্রতিভাত করে। চন্দ্রনাথের প্রচণ্ড প্রভার মধ্যে হীরু কিন্তু ম্লান হয়ে যায়নি। সে চন্দ্রনাথকে পিছনে ফেলে স্কুলের পরীক্ষায় প্রথম হওয়ায় তার বিরূপ সমালোচনা হলে সে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষায় প্রথম হয়ে তার যোগ্য জবাব দেয় এবং স্কলারশিপও পায়। হীরু যেন সৌজন্যবোধের মূর্ত প্রতীক। হীরুকে চন্দ্রনাথ নানানভাবে তাচ্ছিল্য করলেও হীরু কিন্তু তা মনে নেয়নি বরং হীরু চন্দ্রনাথকে তার কাকার দেওয়া পুরস্কারের কথা বলে সান্ত্বনা দিতে চেয়েছে। চন্দ্রনাথের প্রত্যাখ্যানকে হীরু কখনোই ব্যক্তিগত অপমান বলে মনে করেনি। তাই তো স্কলারশিপ পাওয়া উপলক্ষ্যে ভোজসভায় আসার জন্য হীরুর প্রেরিত আমন্ত্রণ পত্র প্রত্যাখ্যান করে চন্দ্রনাথ যে ব্যঙ্গাত্মক চিঠি পাঠিয়েছিল তা সে স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে রেখে দেয়। হীরুর আর-একটা বড়ো গুণ অন্যকে সম্মান করা। তাই তো সে মাস্টারমশাইয়ের কাছে নরেশের সাহিত্যচর্চার প্রসঙ্গ তোলে। গ্রাম ছেড়ে চন্দ্রনাথের চলে যাওয়া প্রসঙ্গে কৌতূহল তারই বহিঃপ্রকাশ মাত্র। এভাবেই মেধা, বন্ধুপ্রীতি, সৌজন্যবোধ ও নিজস্বতায় 'হীরু' চরিত্র উজ্জ্বল।


12.  চন্দ্রনাথ  রচনাংশ অবলম্বনে হেডমাস্টারমশাইয়ের চরিত্রটি আলোচনা করো। অথবা, 'চন্দ্রনাথ' রচনাংশ অনুসারে হেডমাস্টারমশাইয়ের ভূমিকা আলোচনা করো।

উত্তরঃ  চন্দ্রনাথ রচনাংশে শীর্ণ-দীর্ঘকায় শান্ত প্রকৃতির মানুষটি অর্থাৎ হেডমাস্টারমশাইকে বোর্ডিংয়ের ফটকের সামনে -হুঁকো হাতে চিন্তামগ্ন অবস্থায় দেখতে পাই। চন্দ্রনাথের প্রাইজ  হেডমাস্টারমশাইও তার ব্যতিক্রম নন। তিনিও যথেষ্ট চিন্তিত। প্রত্যাখ্যান সংক্রান্ত পত্রাঘাতে সারা স্কুল যখন চঞ্চল ও বিক্ষুব্ধ - ঘটনা প্রশমিত করার জন্য তিনি নরেশকে চন্দ্রনাথের কাছে পাঠান ও চন্দ্রনাথের দাদা নিশানাথকেও বিষয়টি জানান। এসব থেকে তাকে একজন যোগ্য ও বিবেচক প্রশাসক হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। দুর্দান্ত চন্দ্রনাথকে কেন্দ্র করে উদ্ভুত পরিস্থিতি তাকে এতটাই পীড়িত করেছিল যে কথক নরেশ ফিরে এসে তাকে একই অবস্থায় আবিষ্কার করে। তার অন্তর্মনের এই টানাপোড়েন ও উদ্বেগ একজন ছাত্রদরদি, সহৃদয় মানুষের পরিচয় দান করে। তাই স্কুলের বিষয়কে কেন্দ্র করে চন্দ্রনাথ ও নিশানাথের বিচ্ছেদ তাকে বেদনাহত করে তোলে। তাঁর বারবার চন্দ্রনাথের কাছে যাওয়ার ইচ্ছা আমাদের মানবীয় গুণে পরিপূর্ণ পিতৃসম এবং অনুতপ্ত এক মানুষের প্রতিচ্ছবিকেই তুলে ধরে। আবার হীবুর প্রীতিভোজের উৎসবে স্কুল উত্তীর্ণ ছাত্রদের 'তুমি' সম্বোধন করে তিনি বুঝিয়েছেন এটা তাদের প্রাপ্য। তিনি যে সাহিত্যে উৎসাহী তা নরেশকে উৎসাহ দেওয়া ও অলিভার গোল্ডস্মিথের কবিতা থেকে উদ্ধৃতি দেওয়া থেকেই বোঝা যায়। শেষে তিনি চন্দ্রনাথের কথা জানতে চেয়ে সঠিক উত্তর না পেয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বিদায় নেন। যোগ্যতম সম্ভাবনাময় এক ছাত্রের বেদনাবহ পরিণতি রোধ করতে না পেরে তিনি মর্মাহত এবং সেই মর্মযন্ত্রণাই যেন এক নীরব দীর্ঘনিশ্বাস রূপে তার কণ্ঠ থেকে বেরিয়ে আসে এবং এক আদর্শ শিক্ষাগুরু হিসেবে আমাদের কাছে ধরা দেন।


13.  চন্দ্রনাথের সঙ্গে তার বন্ধুদের সম্পর্ক ও সম্পর্কের টানাপোড়েন রচনাংশ অবলম্বনে ব্যাখ্যা করো। ৫

উত্তরঃ  তারাশঙ্করের 'চন্দ্রনাথ' তিন বন্ধুর সম্পর্কের টানাপোড়েনের কাহিনি। দরিদ্র, মেধাবী, স্বাধীনচেতা চন্দ্রনাথের সঙ্গে ধনী, নিরহংকার হীবুর দ্বৈরথ এবং এর মধ্যস্থতাকারী নরেশকে কেন্দ্র করে রচনাংশটির ঘটনাক্রম আবর্তিত হয়েছে। একই গ্রামে ও একই সময়ে এই ভিন্নধর্মী তিন সহপাঠীর অবস্থানকে কথক আগ্নেয়গিরির গর্ভের মধ্যে প্রলয়ংকর দাহ্যবস্তুর বিচিত্র সমাবেশের সাথে তুলনা করেছেন।

রচনার কেন্দ্রীয় চরিত্র চন্দ্রনাথ জীবনে প্রথমবার প্রথম হওয়া হীরুর যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে নিজের সেকেন্ড প্রাইজ নিতে অস্বীকার করে স্কুলে আলোড়ন ফেলে দেয়। সেখানে হীরুর অসাধুতা, মাস্টারমশাইদের পক্ষপাতিত্ব, তার কল্পিত ফলে হীরুর পেছনে থাকা, নরেশের থার্ড ডিভিশনে পাস করা সব কিছুই মজুত ছিল। তা ছাড়া হেডমাস্টারের প্রতি চন্দ্রনাথের ব্যবহারেও নরেশ ক্ষুব্ধ হয় এবং মনে মনে ঠিক করে চন্দ্রনাথের সাথে সংস্রব রাখবে না। এহেন নরেশ কিন্তু চন্দ্রনাথের স্কলারশিপ না পাওয়ার কারণে দুঃখ পায়। আবার হীরুও চন্দ্রনাথকে মন থেকে শ্রদ্ধা করে। সে চন্দ্রনাথের প্রত্যাখ্যানকে ব্যক্তিগত অপমানের জায়গায় আনেনি, তাই স্কলারশিপ পাওয়া উপলক্ষ্যে চন্দ্রনাথের কটাক্ষযুক্ত চিঠিকে সে বন্ধুর স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে যত্ন করে রেখে দেয়। একই ভাবে চন্দ্রনাথও পরাজিত হয়েও হীরুর সফলতায় আনন্দ প্রকাশ করে চিঠি লেখে। শেষে তাই হীরু ও নরেশ একে অপরকে -বলতে না পারলেও চন্দ্রনাথের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুজনই চিন্তিত। এক্ষেত্রে লক্ষণীয় সমগ্র রচনাংশটি তিনজন বৈচিত্র্যপূর্ণ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের অধিকারী কিশোরের সম্পর্ক ও তার টানাপোড়েনের জীবন্ত দৃষ্টান্ত হিসেবে প্রতিভাত।

No comments:

Post a Comment