⬛ সত্য/মিথ্যা নির্বাচন করো:
1. একটি সমাজবদ্ধ জীব হল উইপোকা ।
➤➣.সত্য / মিথ্যা
2. বাদুড় ও অন্যান্য অনেক প্রাণীর শরীর কীরকম সময় মেনে কাজ করে সেই নিয়ে গবেষণা করেন এম কে চন্দ্রশেখর।
➤➣.সত্য / মিথ্যা
3. চাষি পিঁপড়েরা মাটির নীচে গর্ত করে বাসা বানায় ।
➤➣.সত্য / মিথ্যা
4. অ্যানোফিলিস মশা নোংরা জমা জলে ডিম পাড়ে।
➤➣.সত্য / মিথ্যা
5. সাধারণত সূর্যাস্ত থেকে গোধূলির মধ্যেকার সময়ে বাঘ শিকার করে।
➤➣.সত্য / মিথ্যা
6. তিমি শ্বাস নেয় ফুলকার সাহায্যে ।
➤➣.সত্য / মিথ্যা
7. বাঘেদের চোয়ালে ক্যানাইন বা শ্বদন্ত থাকে।
➤➣.সত্য / মিথ্যা
৪. সুন্দরবনে প্রধানত চিতাবাঘ দেখা যায় |
➤➣.সত্য / মিথ্যা
9. যাযাবর পিঁপড়ে অনবরত বাসা বদল করে।
➤➣.সত্য / মিথ্যা
10. মৌচাক মোম দিয়ে তৈরি ।
➤➣.সত্য / মিথ্যা
➤➣ উত্তর: 1.সত্য 2.সত্য 3.সত্য 4.মিথ্যা 5.সত্য 6.মিথ্যা 7.সত্য 8.মিথ্যা 9.সত্য 10.সত্য
⬛ একটি বাক্যে উত্তর দাও:
1. বিজ্ঞানী ডারউইন আর ফ্যাবার উত্তরসূরি কারা?
উত্তর: বিজ্ঞানী ডারউইন আর ক্যাবার উত্তরসূরি হলেন— নিকো টিনবারজেন, কনরাড লোরেঞ্জ, কার্ল ফন ফ্রিশ।
2. শিম্পাঞ্জিদের আচার-আচরণ নিয়ে গবেষণা করেন কোন্ বিজ্ঞানী?
উত্তর: শিম্পাঞ্জিদের আচার-আচরণ নিয়ে গবেষণা করেন বিজ্ঞানী জেন গুডাল ।
3. বোলতাদের সমাজব্যবস্থা নিয়ে গবেষণাকোন্ বিজ্ঞানী?
উত্তর: বোলতাদের সমাজব্যবস্থা নিয়ে গবেষণা করেন বিজ্ঞানী রাঘবেন্দ্র গাড়াগকর।
4. উইপোকা সেলুলোজ হজম করতে পারে কীভাবে?
উত্তর: উইপোকার পেটে একরকম জীবাণু থাকে, যারা সেলুলোজ হজম করতে পারে।
5. মৌমাছি ও মাছির একটি পার্থক্য লেখো ।
উত্তর: মৌমাছির ডানার সংখ্যা 4টি কিন্তু মাছির ডানার সংখ্যা 2টি।
6. নেকটার কী?
উত্তর: ফুলের মধ্যে যে মিষ্টি রস থাকে তাকে নেকটার বলে।
7. কয়েকটি পরিযায়ী পাখির উদাহরণ দাও।
উত্তর: বুনো হাঁস, খঞ্জনা, কাজল পাখি প্রভৃতি হল কয়েকটি পরিযায়ী পাখি।
৪. ভারতীয় হাতির উচ্চতা ও ওজন কত হতে পারে ?
উত্তর: ভারতীয় হাতির উচ্চতা প্রায় 11 ফুট ও ওজন প্রায় 2 হাজার কিলোগ্রাম বা তার বেশি হতে পারে।
9. আমাদের দেশে কতরকমের কাক দেখা যায় ?
উত্তর: আমাদের দেশে দু-রকমের কাক দেখা [a] পাতিকাক ও [b] দাঁড়কাক !
10. মশা কী খায়?
উত্তর: পুরুষ মশা গাছের রস এবং স্ত্রী মশা মেরুদণ্ডী প্রাণীর রক্ত খায়।
11. কয়েকটি বিষধর সাপের নাম লেখো ।
উত্তর: ডোমনাচিতি, চন্দ্রবোড়া, কেউটে, গোখরো, শঙ্খচূড়, শাঁখামুটি প্রভৃতি হল কয়েকটি বিষধর সাপ।
12. সাপ পরিবেশের কী উপকার করে ?
উত্তর: সাপ ইঁদুর, ছুঁচোর মতো ফসলখেকো প্রাণীদের খেয়ে ফেলে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখে।
13. সাপের বিষ কীভাবে ক্ষতি করে ?
উত্তর: সাপের বিষ শিকারের স্নায়ুতন্ত্রে বা রক্তসংবহনতন্ত্রে আঘাত করে শিকারের ক্ষতি করে।
14. কোন্ প্রাণী পুরোপুরি ঘুমায় না ?
উত্তর: তিনি পুরোপুরি ঘুমায় না।
15. নীল তিমি কী খায় ?
উত্তর: নীল তিমি ক্রিল (ছোটো চিংড়ি জাতীয় প্রাণী) খায়।
⬛ সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর;
1. আচরণ বিজ্ঞান কী ?
উত্তর: বিজ্ঞানের যে শাখায় জীবজন্তু, পোকামাকড় প্রভৃতির আচার-আচরণ সম্পর্কে আলোচনা করা হয় তাকে বলা হয় আচরণ বিজ্ঞান।
2. হেরিংগাল নামের পাখিটি কীরূপ বোকামি করে ?
উত্তর: হেরিংগাল পাখিরা মাটিতে ডিম পাড়ে এবং ডিমে তা দেয়। পরীক্ষা করার জন্য তাদের বাসার পাশে আসল ডিমের থেকে অনেক বড়ো, বেশি চকচকে নকল ডিম রেখে দিলে হেরিংগাল পাখিরা আসল ডিম ছেড়ে ওই নকল ডিমে তা দিতে থাকে। এটাই হেরিংগাল পাখির বোকামি।
3. হাঁসেরা কী ধরনের বোকামি করে ?
উত্তর: বিজ্ঞানী লোরেঞ্জ পর্যবেক্ষণ করেন যে, হাঁসের ডিম ফুটে বাচ্চা বের হওয়ার সময় ওই বাচ্চা যাকে সামনে দেখে, তাকেই মা বলে ভেবে পুরো ছেলেবেলাটা তার পিছনে ঘুরে বেড়ায়। তিনি আরও লক্ষ করেন যে বাচ্চা ডিম ফুটে বের হওয়ার সাথে সাথে যদি তাকে হলদে রং করা একটি কাঠের টুকরো দেখানো হয়, তাহলে বাচ্চাটি ওটিকেই তার মা ভেবে ছুটে যায়।
4. মৌমাছি তার নাচের মাধ্যমে কী বোঝায় ?
উত্তর: শ্রমিক মৌমাছি, কোনো জায়গায় ভালো মিষ্টি রসভরা ফুলের খোঁজ পেলে মৌচাকে ফিরে এসে বিশেষ বিশেষ ভঙ্গিতে চাকের ওপর নেচে সঙ্গীদের বুঝিয়ে দেয় কোন্দিকে, কতদূরে সেই ফুল অবস্থিত।
5. পিঁপড়েদের সমাজ সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের কী ধারণা?
উত্তর: পিঁপড়েরা সমাজবদ্ধ জীব। বিজ্ঞানীদের মতে পিঁপড়েদের সমাজে একটি রানি, রানির অসংখ্য দাসী, সৈন্য আর শ্রমিক নিয়ে একটি পরিবার তৈরি হয়। দাসী, সৈন্য আর শ্রমিক হল আসলে রানির মেয়ে। পিঁপড়েদের পরিবারে পুরুষের সংখ্যা এবং গুরুত্ব কম।
6. পিঁপড়েদের খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের মতামত লেখো।
উত্তর: শীতের দিনে পিঁপড়েরা মাটির নীচে ঘর বেঁধে থাকে এবং মজুত খাদ্য খায়। চাষি পিঁপড়েরা মাটিতে গর্ত করে বাসা বানায়, বাসায় সঞ্চিত কাটা পাতা পচে গেলে তার ওপর একধরনের সাদা রঙের ছত্রাক জন্মায়। এই ছত্রাক চাষি পিঁপড়েদের প্রিয় খাদ্য। আর-একরকম পিঁপড়ে দেখা যায় যারা নিজের পেটটাকে পরিবারের খাদ্য জমিয়ে রাখার জন্য জালা হিসেবে ব্যবহার করে।
7. মৌমাছিদের সমাজজীবন সম্পর্কে কী জানা যায় ?
উত্তর: মৌমাছি সমাজবদ্ধ জীব, এরা উপনিবেশ বা পরিবার গঠন করে বসবাস করে। প্রতিটি মৌচাকে সাধারণত একটি রানি মৌমাছি, অসংখ্য শ্রমিক মৌমাছি ও কিছু সংখ্যক পুরুষ মৌমাছি থাকে। শ্রমিক মৌমাছিরা আসলে রানির মেয়ে কিন্তু সংসারের সব কাজ তারাই করে। মৌমাছি সমাজে পুরুষদের সংখ্যা ও ভূমিকা কম ।
8. শ্রমিক মৌমাছির কাজ কী ?
উত্তর: শ্রমিক মৌমাছিকে মৌচাকের যাবতীয় কাজ করতে হয়। যেমন—[a] রানির যত্ন নেওয়া, [b] নিজেদের উদর থেকে ঘামের মতো বেরোনো মোম জমিয়ে মৌচাক তৈরি করা, [c] ঘুরে ঘুরে ফুল থেকে নেকটার বা মিষ্টি রস সংগ্রহ করে আনা, মৌচাকের কুঠুরিতে মধু করে জমিয়ে রাখা এবং সবাইকে খাওয়ানো, [d] মৌচাকের কুঠুরি গরম হয়ে গেলে পাখা নাচিয়ে বাতাস করে ঠান্ডা রাখা, [d] চুলের সাহায্যে মৌচাক এবং মৌচাকের বাচ্চা মৌমাছিদের শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করা প্রভৃতি।
9. হুল ফোটানোর পর শ্রমিক মৌমাছি মারা যায় কেন?
উত্তর: শ্রমিক মৌমাছির হুলের একদিক খাঁজকাটা আর অন্য দিকটি পেটের সঙ্গে এমনভাবে আটকে থাকে যে শত্রুর শরীরে স্থুল ঢুকলে সেটা তাদের পেট থেকে ছিঁড়ে শত্রুর শরীরে আটকে থাকে, ফলে শ্রমিক মৌমাছি মারা যায়।
10. উইপোকারা গর্তের বাইরে ঘুরে বেড়ায় না কেন ?
উত্তর: অন্য পোকাদের মতো উইপোকার গায়ে খোলক থাকে না ফলে বেশিক্ষণ রোদের তাপ লাগলে শরীর থেকে জল বেরিয়ে শরীর শুকিয়ে যায়। তাই উইপোকারা গর্তের বাইরে এসে ঘুরে বেড়ায় না |
11. উইপোকারা কীভাবে কাঠ খায় তা বর্ণনা করো।
উত্তর: গাছের কাঠে সেলুলোজ নামে একধরনের শর্করা থাকে যা কোনো প্রাণী হজম করতে পারে না, কিন্তু উইপোকারা সেটি হজম করে। উইপোকাদের পেটে একধরনের জীবাণু থাকে যারা সেলুলোজ হজম করতে পারে। উঁইপোকা কাঠ খেয়ে এই জীবাণুদের সাহায্যে হজম করে।
12. হাতির শুঁড় কীভাবে তৈরি হয়েছে? এটি কী কী কাজ করে ?
উত্তর: হাতির দেহের সবথেকে আকর্ষণীয় অঙ্গ হল তার শুঁড়। হাতির নাক আর ওপরের ঠোঁট জোড়া লেগে লম্বা হয়ে শুঁড় তৈরি হয়েছে। শুঁড় দিয়ে হাতি বিভিন্ন কাজ করতে পারে, যেমন— [a] গাছের ডাল ভাঙতে পারে, [b] জল শুষে মুখে ঢালতে পারে, [c] ঘাস ছিঁড়ে মাটি ঝেড়ে মুখে পুরতে পারে, [d] শুঁড়ের সাহায্যে মাটিতে পড়ে থাকা ফল তুলতে পারে, [e] শুঁড় ওপরে তুলে বাতাসের গন্ধ শুঁকতে পারে প্রভৃতি।
13. হাতির দাঁত সম্পর্কে কী জান?
উত্তর: হাতির মুখের ওপরের পাটির একজোড়া দাঁত বাড়তে বাড়তে লম্বা হয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে। হাতির দাঁত ছয়-সাত ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে । এই দাঁত হাতিকে খাদ্য সংগ্রহে ও আত্মরক্ষায় সাহায্য করে। ভারতীয় মেয়ে হাতিদের দাঁত লম্বা হয় না ।
14. হাতিসমাজ কেমন তা আলোচনা করো ।
উত্তর: হাতি দলবেঁধে একটি পরিবারের মতো থাকে। পরিবারের প্রধান হল মা বা দিদিমা, অন্য সদস্যরা হল তাদের মেয়ে, নাতি আর নাতনি। হাতি এমনিতে খুব শান্ত স্বভাবের প্রাণী, কিন্তু বাচ্চার কষ্ট সহ্য করতে পারে না। মানুষের মতো হাতিরাও সবসময় তার সন্তানকে চোখে চোখে রাখে। বিপদে পড়লে কোনো হাতি শুঁড় উঁচু করে ডাকতে থাকে, তখন দলের অন্য হাতিরা একত্রিত হয়ে সেই বিপদের মোকাবিলা করে। কোনো হাতি আহত হলে বা অসুস্থ হলে দলের সবাই তাকে ঘিরে রেখে পাহারা দেয় ।
15. হাতিসমাজের নিয়ম লেখো।
উত্তর: হাতিসমাজের নিয়ম খুব কড়া। পথ চলতে চলতে কোনো হাতির বাচ্চা দলছুট হয়ে পড়লে হাতির দল তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করে। কিন্তু যদি দেখে ওই বাচ্চা হাতি মানুষের কাছে আশ্রয় নিয়েছে তাহলে হাতির দল আর তাকে গ্রহণ করে না। ছেলে হাতিরা সম্পূর্ণ বড়ো হয়ে গেলে দল ছেড়ে একাএকা ঘোরে, আবার কখনও দলের সঙ্গেও থাকতে পারে।
16. হাতিদের সঙ্গে মানুষের সংঘাত বাড়ছে কেন ?
উত্তর: হাতি জঙ্গলেই থাকতে ভালোবাসে কিন্তু খাবার কম পড়ে গেলে হাতি লোকালয়ে ঢুকে ফসলের খেত বা ফলের বাগান থেকে খাবার সংগ্রহ করে। সেসময় বাধা দিলে তারা ঘরবাড়ি ভেঙে দেয়, মানুষকে আঘাত করে। মানুষ হাতি চলাচলের রাস্তায় বনজঙ্গল কেটে ফেলে রাস্তা তৈরি করছে, রেললাইন বসাচ্ছে, তাই হাতির সঙ্গে মানুষের সংঘাত বাড়ছে।
17. শিম্পাঞ্জিদের আচরণ সম্পর্কে যা জান লেখো ।
উত্তর: শিম্পাঞ্জিদের আচরণ অনেকটা মানুষের মতো । এরা পাথর দিয়ে হাতুড়ির মতো আঘাত করে খোলা ভেঙে বাদাম খায়, উইপোকার ঢিবিতে কাঠি ঢুকিয়ে উঁইপোকা শিকার করে। প্রতি রাতে গাছের ডালে ঘাস-পাতা দিয়ে বাসা বানিয়ে এরা ঘুমোয়। এরা মানুষের বন্ধু হয়, পোষ মানে এবং পোষা শিম্পাঞ্জিরা মানুষের মতো আকারে- ইঙ্গিতে অনেক কিছু বোঝাতে পারে।
18. পরিযায়ী পাখি কাদের বলে?
উত্তর: যেসব পাখিরা শীত পড়লে শীতের দেশ থেকে গরমের দেশে চলে আসে এবং শীত কাটলে আবার নিজের জায়গায় ফিরে যায় তাদের পরিযায়ী পাখি বলে । যেমন— বুনো হাঁস, কাজল পাখি ইত্যাদি ।
19. পরিযায়ী পাখিরা সমতলের দেশে উড়ে আসে কেন?
উত্তর: শীতের সময় উঁচু পার্বত্য অঞ্চলে খুব শীত পড়ে এবং মাটি বরফে ঢেকে যায়। এই অঞ্চলে তখন খাবারদাবার পাওয়া মুশকিল হয়ে পড়ে, তাই সেখান থেকে পরিযায়ী পাখিরা সমতলের দেশে নেমে আসে | সমতলে ঠান্ডা অনেক কম আর খাবারদাবারও মেলে প্রচুর।
20. কাকেদের স্বভাব সম্পর্কে আলোচনা করো ।
উত্তর: কাকেরা খাবার লুকিয়ে রাখতে পারে । কাকেদেরও সভা বসে, যেখানে শতশত কাক জড়ো হয়। কাকেরা সামাজিক জীব। যদি কোনো কাক বিপদে পড়ে তবে ঝাঁকে ঝাঁকে কাক ছুটে এসে একসাথে বিপদের মোকাবিলা করে।
21. মশার হুল ফোটানোর সময় কী ঘটতে পারে ?
উত্তর: মশা আমাদের শরীরের যে জায়গায় হুল ফোটায় সেখানটা ফুলে যায়, জ্বালা করে। এ ছাড়াও মশা হুল ফোটাবার সময় মশার দেহে অবস্থিত ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, ফাইলেরিয়া প্রভৃতি রোগের জীবাণু আমাদের দেহে প্রবেশ করতে পারে।
22. মশার জীবনচক্র বর্ণনা করো।
উত্তর: স্ত্রী-মশা স্রোতহীন জমা জলে ডিম পাড়ে। ডিম ফুটে লার্ভা বা শূককীট বের হয়। লার্ভারা জলের খাবার খেয়ে বড়ো হয়, তারপর পিউপা বা মূককীটে পরিণত হয়। পিউপা কিছু খায় না, তারা কিছুদিন বাদে খোলস ত্যাগ করে পূর্ণাঙ্গ মশা হয়ে জল থেকে বেরিয়ে উড়ে যায়।
23. অ্যানোফিলিস মশার গঠন ও স্বভাব বর্ণনা করো।
উত্তর: অ্যানোফিলিস মশা বসার স্থানের সঙ্গে সূক্ষ্মকোণে (প্রায় 45°) বসে। এরা ওড়ার সময় ডানায় আওয়াজ করে। এদের ডানায় সাদা-কালো ছোপ থাকে। এরা প্রথম রাতে কামড়ায় । স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশা স্রোতহীন পরিষ্কার জমা জলে ডিম পাড়ে। অ্যানোফিলিস মশা ম্যালেরিয়ার জীবাণু বহন করে।
24. এডিস মশার গঠন ও স্বভাব বর্ণনা করো ।
উত্তর: এডিসহল খুব ছোটো মশা । এরা বসার স্থানের সঙ্গে পুরোপুরি সমান্তরালভাবে বসে। ওড়ার সময় শব্দ হয় না। এরা দিনের বেলায় কামড়ায়। এদের পেটে আর পায়ে সাদা- কালো ডোরা থাকে। এডিস মশা পরিষ্কার জমা জলে ডিম পাড়ে। এরা ডেঙ্গুর জীবাণু বহন করে ।
25. কিউলেক্স মশার গঠন ও স্বভাব বর্ণনা করো।
উত্তর: কিউলেক্স মশা বসার স্থানের সঙ্গে প্রায় সমান্তরালভাবে বসে। এরা গভীর রাতে কামড়ায়। এদের ওড়ার সময় শব্দ হয় না। এদের ডানায় কোনো ছোপ থাকে না। কিউলেক্স মশা নোংরা জমা জলে ডিম পাড়ে। এরা ফাইলেরিয়া রোগের জীবাণু বহন করে।
26. মাছের ফুলকার কাজ কী?
উত্তর: মাছ জলচর প্রাণী। জলে সাঁতার কাটার সময় মাছ মুখ দিয়ে জল গিলে ফুলকার মধ্যে জল চালিয়ে কানকো দিয়ে বের করে দেয়। ফুলকার সাহায্যে মাছ জল থেকে অক্সিজেন শুষে নেয় এবং জলে কার্বন ডাইঅক্সাইড ছেড়ে দেয় | এইভাবে ফুলকা মাছের শ্বাসকার্যে সাহায্য করে।
27. সিহস কীভাবে তার বাচ্চাদের রক্ষা করে ?
উত্তর: বাবা সিহর্সের ল্যাজের কাছে একটি বিশেষ থলি থাকে, মা সিহর্স ওই থলির মধ্যে ডিম তুলে রাখে। বাবা দিনরাত ওই ডিমগুলিকে পাহারা দেয়। ডিম ফুটে বাচ্চা বেরোনোর পরও বাবা থলির মধ্যে বাচ্চাগুলির রেখে বড়ো করে তোলে।
28. তেলাপিয়া মাছ কীভাবে তার বাচ্চাদের প্রতিপালন করে ?
উত্তর: তেলাপিয়া মাছ জলের নীচে নরম মাটিতে লম্বা করে অনেকগুলি খাঁজ কাটে, তারপর সেখানে বাসা বানায় | বাবা তেলাপিয়া ওপর থেকে পাহারা দেয় এবং মা তেলাপিয়ার মুখের ভিতরে থাকা থলির মধ্যে শিশুরা জন্ম নেয় । বাচ্চারা বাইরে বেরিয়ে এসে জলে সাঁতার কাটে এবং খাবার সংগ্রহ করে। কখনও ভয় পেলে আবার মায়ের মুখের থলির মধ্যে ঢুকে পড়ে।
29. প্যারাডাইস মাছ কীভাবে শিশুদের প্রতিপালন করে ?
উত্তর: প্যারাডাইস মাছ অ্যাকোয়ারিয়ামে দেখা যায় । বাবা প্যারাডাইস মাছ মুখের লালা বের করে বাতাসে বুদ্বুদ ছাড়ে ও তা দিয়ে ডিম পাড়ার বাসা তৈরি করে। বাবা মাছ ডিমগুলি পাহারা দেয় এবং শিশু মাছেদের প্রতিপালন করে।
30. সাপের দেহের গঠন বর্ণনা করো।
উত্তর: সাপের মাথার হাড়গুলি এমনভাবে সাজানো থাকে যে সাপ তার চোয়াল দুটিকে দু-পাশে ছড়িয়ে বিশাল করতে পারে। সাপের সারাদেহ আঁশ দিয়ে ঢাকা। ডাঙায় সাপ পেটের আঁশের সাহায্যে চলাফেরা করে। সাপ সারাজীবন নিয়মিতভাবে পুরোনো আঁশের খোলস পালটায়। সাপের কান নেই, কিন্তু এদের ঘ্রাণশক্তি খুব ভালো। এরা চেরা জিভ দিয়ে বাতাসে ভাসমান গন্ধের অণু মুখের ভিতর নিয়ে গন্ধ টের পায়। এরা বুক দিয়ে মাটির কম্পন অনুভব করে। কিছু সাপের মুখের ওপর তাপ মাপার যন্ত্র দেখা যায়।
31. সাপ বিপদে পড়লে কী করে?
উত্তর: সাপ মানুষের বা অন্য কোনো প্রাণীর সামনে গড়ে নিজেকে বিপদগ্রস্ত মনে করলে প্রথমে ভয় দেখিয়ে সতর্ক করে, যেমন— কেউ জোরে জোরে নিশ্বাস ছাড়ে, কেউ হিসহিস শব্দ করে, কেউ ফণা তোলে আবার কেউ ল্যাজের প্রাপ্ত নাড়ায়। তারপর বাঁচার রাস্তা না পেলে কামড়ায়।
32. বাঘেদের স্বভাব সম্পর্কে কী জানা যায় ?
উত্তর: বাঘের দর্শন ও প্রবণশক্তি অত্যন্ত প্রখর। এরা মূত্রনালি থেকে একধরনের তরল মাটিতে ও গাছে ছিটিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে মলত্যাগ করে বা গাছের কাজে আঁচড় কেটে তাদের এলাকা চিহ্নিত করে। প্রাপ্তবয়স্ক বাঘ সাধারণত একা একটা নির্দিষ্ট অঞ্চল নিয়ে থাকে, সেখানে যদি অন্য বাঘ ঢুকে যায় তবে দুজনের মধ্যে লড়াই বাঁধে। বাঘ নিশাচর প্রাণী, সাধারণত সূর্যাস্ত থেকে গোধূলির মধ্যেকার সময়ে এরা শিকার করে। উদ্বৃত্ত খাবার মাটিতে গর্ত করে নিজের এলাকার মধ্যে লুকিয়ে রাখে। প্রয়োজনে এরা গাছে চড়তে বা জলে সাঁতার কাটতেও পারে। বাঘিনির সন্তানস্নেহ উল্লেখযোগ্য। বাচ্চারা 2 বছর পর্যন্ত মায়ের সঙ্গে থাকে।
33. সুন্দরবনের বাঘের বর্ণনা দাও।
উত্তর: সুন্দরবনের বাঘের গায়ের চামড়া হালকা হলদে থেকে লালচে হলদে রঙের হয়। বাঘের গায়ে কালো ডোরাকাটা দাগ থাকে। গায়ের চামড়ার এই বৈশিষ্ট্যের জন্য বাঘ খুব সহজেই হেঁতাল গাছে লুকিয়ে থাকতে পারে। সুন্দরবনের বাঘ গাছে চড়তে ও সাঁতার কাটতে পারদর্শী।
34. বাঘের শিকার ধরার পদ্ধতিটি লেখো।
উত্তর: বাঘ নিশাচর প্রাণী, এরা সাধারণত সূর্যাস্ত থেকে গোধূলির মধ্যেকার সময়ে শিকার করে। বাঘ তার শিকারকে চিহ্নিত করে যতটা সম্ভব তার কাছাকাছি যেতে চেষ্টা করে। তারপর তাকে তাড়া করে বা পিছন থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে কাঁধ বা গলা কামড়ে ধরে। শিকার মারা গেলে তাকে নিরাপদ স্থানে টেনে নিয়ে গিয়ে খায়। শিকার বড়ো হলে এরা কয়েকদিন ধরে খায়।
35. বাঘিনি কীভাবে তার সন্তানদের প্রতিপালন করে?
উত্তর: বাচ্চা দেওয়ার আগে বাঘিনি ভালোভাবে পরিষ্কার করা জায়গা বাছে এবং বাচ্চা দেওয়ার পর তাদের কাছে সমস্ত দিন ঠায় বসে থাকে। অনেক সময় বাচ্চা পাহারা দেওয়ার জন্য বাঘিনির শিকার ধরা হয় না। যদি কেউ বাঘিনির বাসা চিনে ফেলে তাহলে বাঘিনি তৎক্ষণাৎ অন্যত্র বাসা বদল করে | বাচ্চারা একটু বড়ো হলে বাঘিনি তাদের শিকার শেখাতে নিয়ে যায়। বাচ্চাদের সাঁতার কাটতেও শেখায় বাঘি নিরা । মা বাঘের কাছ থেকে এভাবে ছয়-সাত মাস শিক্ষা পেয়ে শিশু পূর্ণাঙ্গ বাঘে পরিণত হয় ।
36. বনে বাঘের সংখ্যা বাড়ানো জরুরি কেন?
উত্তর: জঙ্গল ধ্বংস হওয়া এবং চোরাশিকারিদের জন্য বর্তমানে বাঘের সংখ্যা খুব কমে গেছে | তাই মানুষের হাত থেকে জঙ্গলকে এবং জঙ্গলের জীববৈচিত্র্যকে রক্ষা করার জন্য বাঘের সংখ্যা বাড়ানো জরুরি।
37. ফ্লিপার কী?
উত্তর: তিমির পূর্বপুরুষদের অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীর মতো । দুটি হাত ছিল। জলে সাঁতার কাটার জন্য ওদের হাত দুটি ফ্লিপারে পরিণত হয়েছে।
38. বাবার কী?
উত্তর: তিমির চামড়ার নীচে চর্বির একটা পুরু স্তর থাকে যা দেহের তাপ বজায় রাখে এবং তিমিকে চলাফেরার জন্য শক্তির জোগান দেয়, একে রাবার বলে।
39. রোহোল কী?
উত্তর: তিমির মাথার ওপর থাকা নাকের ফুটোকে রোহোল বলে, যার সাহায্যে তিমি জলের ওপরে ভেসে উঠে খুব জোরে নিশ্বাস ছাড়ে।
40. নীল তিমির শারীরিক গঠন আলোচনা করো।
উত্তর: নীল তিমি হল পৃথিবীর সবচেয়ে বড়ো প্রাণী | জন্মের সময় এরা লম্বায় 7 মিটার আর ওজনে আড়াই হাজার কেজি হয় | বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে একটা পূর্ণবয়স্ক নীল তিমি প্রায় 30 মিটার লম্বা এবং ওজনে প্রায় দেড় লক্ষ কেজি হয়।
41. 'তিমি জলের নীচে থেকে ভেসে উঠলেই সাদা ফোয়ারার মতো দেখা যায়, এর কারণ কী ?
উত্তর: তিমি ফুসফুসের সাহায্যে শ্বাসকার্য চালায় ।জলে ডুব দিয়ে ভেসে উঠে তিমি তার মাথার ওপরের রোহোল দিয়ে খুব জোরে নিশ্বাস ছাড়ে। এই নিশ্বাসবায়ু পারিপার্শ্বিক বাতাসের থেকে গরম হওয়ার জন্য বাতাসের জলকণাগুলি বাষ্পে পরিণত হয়, দূর থেকে একে সাদা ফোয়ারার ব মতো দেখায়।
No comments:
Post a Comment