Class 10th Bangla Gyan Chokkhu Questions And Answers MCQ, SAQ, LAQ | ক্লাস টেন বাংলা জ্ঞানচক্ষু গল্পের প্রশ্ন উত্তর | জ্ঞানচক্ষু গল্পের প্রশ্ন উত্তর দশম শ্রেণীর বাংলা - Psycho Principal

Fresh Topics

Tuesday, 28 March 2023

Class 10th Bangla Gyan Chokkhu Questions And Answers MCQ, SAQ, LAQ | ক্লাস টেন বাংলা জ্ঞানচক্ষু গল্পের প্রশ্ন উত্তর | জ্ঞানচক্ষু গল্পের প্রশ্ন উত্তর দশম শ্রেণীর বাংলা

  

জ্ঞানচক্ষু গল্পের 
প্রশ্ন উত্তর



অসুখী একজন কবিতার প্রশ্ন উত্তর পড়তে নিচের লিংকে ক্লিক করো 

👉 ( অসুখী একজন কবিতার প্রশ্ন উত্তর )


দশম শ্রেণীর বাংলা সাজেশন | দশম শ্রেণীর বাংলা জ্ঞানচক্ষু গল্পের প্রশ্ন উত্তর | দশম শ্রেণীর বাংলা জ্ঞানচক্ষু গল্পের গুরুত্ব পূর্ণ প্রশ্ন উত্তর, সহায়িকা | Class 10th Bangla Gyan Chokkhu  Important Questions And Answers | দশম  শ্রেণীর বাংলা গুরুত্ব পূর্ণ প্রশ্ন উত্তর | #Class 10th Bangla Gyan Chokkhu Questions And Answers #Class 10th Bangla  Questions And Answers


⬛ জ্ঞানচক্ষু গল্পের বহুবিকল্পিক প্রশ্ন উত্তর: প্রতিটা প্রশ্নের মান -১

1. তপনের গল্প ছাপিয়ে দেওয়ার কথাটা উঠেছিল—

ক.  বৈঠকখানায় 

খ. বিকেলে চায়ের টেবিলে

গ. রাতে খাবার টেবিলে

ঘ. দুপুরে খাবার টেবিলে

 উত্তর: খ. বিকেলে চায়ের টেবিলে


2. 'শুধু এইটাই জানা ছিল না।- অজানা বিষয়টি হল-

ক. মেসো একজন লেখক

খ. তার গল্প ছাপা হবে

গ. মানুষই গল্প লেখে

ঘ. সে গল্প লিখতে পারে 

 উত্তর: গ. মানুষই গল্প লেখে


3. তপন আস্তে আস্তে উঠে গেল—

ক. চিলেকোঠায়

খ. দোতলার সিঁড়িতে

গ. তিনতলার সিঁড়িতে 

ঘ. ছাদে

উত্তর: গ. তিনতলার সিঁড়িতে 


4. মেসো চলে গেলে তপন বসে বসে দিন গোনে—

ক. উদ্বিগ্ন হয়ে

খ. আতঙ্কিত হয়ে

গ. কৃতার্থ হয়ে

ঘ. আনন্দিত হয়ে

 উত্তর: গ. কৃতার্থ হয়ে


5. ছেলেবেলা থেকেই তপন গল্প শুনেছে--

ক. একটা-আধটা

খ. রাশি রাশি

গ. বাবার মুখে

ঘ. ঠাকুমার মুখে

 উত্তর: খ. রাশি রাশি


6. তপন আস্তে আস্তে তিনতলার সিঁড়িতে উঠে গেল- 

ক. ভোরবেলা

খ. বিকেলবেলা

গ. দুপুরবেলা

ঘ. সন্ধেবেলা

উত্তর: গ. দুপুরবেলা


7. তপন আস্তে আস্তে তিনতলার সিঁড়িতে উঠে গেল—

ক. ব্যাটবল নিয়ে

খ. রং-তুলি নিয়ে

গ. গুলতি নিয়ে

খ. খাতা-কলম নিয়ে

উত্তর: খ. খাতা-কলম নিয়ে


8. তপনের লেখাটা ছাপতে দেওয়ার আগে যা করা দরকার, তা হল-

ক. নতুন করে লেখা

খ. টাইপ করিয়ে নেওয়া

গ. একটু কারেকশন করা

ঘ. পরিষ্কার হাতের লেখায় লেখা

উত্তর: গ. একটু কারেকশন করা


9. ‘তপন প্রথমটা ভাবে ঠাট্টা।'— যে-বিষয়টিকে তপন ঠাট্টা বলে মনে করে, তা হল-

ক. তার লেখা গল্প ছাপতে দেওয়া

খ. তার লেখা গল্প ছাপার অযোগ্য

গ.  ছোটোমেসোর অনেক বই ছাপা হয়েছে

ঘ. ছোটোমাসি একটা গল্প লিখেছে

উত্তর: ক. তার লেখা গল্প ছাপতে দেওয়া


10. বিয়েবাড়িতেও তপনের মা যেটি না-আনিয়ে ছাড়েননি, সেটি হল-

ক. বেনারসি শাড়ি

খ. সোনার গয়না

গ. পড়ার বই

ঘ. হোমটাস্কের খাতা

উত্তর: ঘ. হোমটাস্কের খাতা


11. 'তখন আহ্লাদে কাঁদো কাঁদো হয়ে যায়। এখানে যার কথা বলা হয়েছে, সে হল-- 

ক. ছোটোমাসি

খ.  তপন

গ. মা

ঘ. মেজোকাকু

উত্তর: খ. তপন


12.. তপনের গল্প শুনে সবাই —

ক. আনন্দিত হয়

খ. রেগে যায়

গ. দুঃখ পায়

ঘ. বিরক্ত হয়

উত্তর: ক. আনন্দিত হয়


13. এখন তপন গল্প পড়ছে-

ক. রাশি রাশি

খ. ঝুড়ি ঝুড়ি

গ. বস্তা বস্তা

ঘ. হাতে গোনা

উত্তর: গ. বস্তা বস্তা


14. 'না না আমি বলছি— তপনের হাত আছে। – এখানে তপনের 'হাত আছে' বলতে বোঝানো হয়েছে-

ক. তপনের লেখার হাত আছে

খ. বিয়েবাড়িতে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনায় তপনের ভূমিকা আছে

গ. তপনের বেহালা বাজানোর হাত আছে

ঘ. ‘সন্ধ্যাতারা' পত্রিকায় লেখা ছাপানোয় তপনের হাত আছে

উত্তর: ক. তপনের লেখার হাত আছে


15. 'না না আমি বলছি- তপনের হাত আছে।'- এখানে বক্তা হলেন- 

ক. তপনের ছোটোমেসো

খ. তপনের ছোটোমাসি

গ. 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকার সম্পাদক

ঘ. তপনের মেজোকাবু 

উত্তর: ক. তপনের ছোটোমেসো


16. সাধারণত তপনের বয়সি ছেলেমেয়েদের লেখা গল্পের বিষয় খুন-জখম-অ্যাকসিডেন্ট অথবা না-খেতে পেয়ে মরে যাও তপন যে-বিষয়টি নিয়ে গল্প লেখে সেটি হল-

ক. খুন-জখম-অ্যাকসিডেন্ট

খ. রূপকথা

গ. ভৌতিক ঘটনা

ঘ. ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা

উত্তর: ক. খুন-জখম-অ্যাকসিডেন্ট


17. 'তপন বিহ্বল দৃষ্টিতে তাকায়। - তপনের দৃষ্টিতে যা ছিল তা হল-

ক. রাগ

খ. দুঃখ

গ. কষ্ট

ঘ. অবিশ্বাস

উত্তর: ঘ. অবিশ্বাস


18. ছুটি ফুরোলে গল্পটি নিয়ে চলে গেলেন—

ক. ‘সন্ধ্যাতারা' পত্রিকার সম্পাদক

খ. তপনের মেজোকাকু

গ. তপনের ছোটোমাসি 

ঘ. তপনের ছোটোমেসো

উত্তর: ঘ. তপনের ছোটোমেসো 


⬛ জ্ঞানচক্ষু গল্পের সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর:  প্রতিটা প্রশ্নের মান -১/২

1. ‘মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে সেটা।— উক্তিটি কার? কোন্‌টা মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে?

উত্তর: উত্তিটি তপনের ছোটোমাসির তপনের লেখা গল্পটা ছোটোমেসো যদি একটু কারেকশন করে ছাপানোর ব্যবস্থা করে দেন, তবে সেটাই মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে।


2. ‘ভালো হবে না বলছি।’-কে, কাকে, কেন এই কথা বলেছে?

উত্তর:  তপনের লেখা গল্পটা কিছুটা পড়েই ছোটোমাসি তার প্রশংসা করেন। তারপর তিনি জিজ্ঞাসা করেন লেখাটা অন্য কোনো স্থান থেকে টোকা কিনা। তখন বিরক্ত হয়ে তপন আলোচ্য উদ্ধৃতিটি করে।


3. কিন্তু গেলেন তো – গেলেনই যে /- কার প্রসঙ্গে এ কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: তপনের লেখা গল্প সামান্য কারেকশন করে ‘সন্ধ্যাতারা'-য় ছাপিয়ে দেবেন বলে ছোটোমেসো তা নিয়ে যান। তারপর অনেকদিন কেটে গেলেও সে ব্যাপারে কোনো সংবাদ না পাওয়ায় এ কথা বলা হয়েছে।


4. 'না করতে পারবে না।- কে, কাকে, কী বিষয়ে না করতে পারবে না?

উত্তর: তপনের লেখক ছোটোমেসো ‘সন্ধ্যাতারা' পত্রিকার সম্পাদককে

তপনের লেখা গল্পটা ছাপানোর জন্য অনুরোধ করলে সম্পাদকমশাই না-করতে পারবেন না।


 5. তপনের মনে লেখক হওয়ার বাসনা জাগল কেন?

উত্তর: লেখক নতুন মেসোমশাইকে দেখে তপন বুঝেছিল লেখকরা আসলে তাদের মতোই সাধারণ মানুষ। তাই উৎসাহিত তপন তার এতদিনের গল্প পড়ার ও শোনার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে লেখক হতে চায়।


6.'ছোটোমাসি সেই দিকে ধাবিত হয়।– তপনের ছোটোমাসি কোনদিকে ধাবিত হয়েছিলেন?

উত্তর: তপন মেসোর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে একটি গল্প লিখে মাসিকে দেখায়। মাসি গল্পটিতে চোখ বুলিয়ে গল্পটির উৎকর্ষ বিচারের জন্য তপনের মেসো যেখানে ঘুমোচ্ছিলেন সেদিকে ধাবিত হয়েছিল।


7. ‘যেন নেশায় পেয়েছে।— কোন্ নেশার কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: নতুন মেসোকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে তপন যে-গল্প লিখেছিল তা মাসির উৎসাহে মেসো ছাপিয়ে দেওয়ার কথা বলেন। এরপর থেকে তপনকে গল্প লেখার নেশায় পায়।


8. ‘রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই।— কথাটির অর্থ কী?

উত্তর: কেবলমাত্র গুণী ব্যক্তিই অপরের গুণের কদর করতে পারে। তাই তপনের লেখা গল্পের প্রকৃত সমঝদার যদি কেউ থাকেন তবে তিনি তার লেখক মেসোমশাই।


9. তপনের গল্প পড়ে তার নতুন মেসোমশাই কী বলেন?

উত্তর: তপনের লেখা গল্প পড়ে তার নতুন মেসোমশাই তাকে উৎসাহ দিয়ে বলেন, গল্পটা ভালোই হয়েছে, একটু কারেকশন করে দিলে সেটা ছাপানোও যেতে পারে।


10. তপনের বয়সি আর-পাঁচটা ছেলেমেয়ের লেখারই সঙ্গে তপনের লেখার তফাত কী?

উত্তর:  তপনের বয়সি ছেলেমেয়েরা সাধারণত রাজারানি, খুন-জখম-অ্যাকসিডেন্ট অথবা না-খেতে পেয়ে মরা— এইসব বিষয়ে গছ লেখে। কিন্তু তপনের লেখার বিষয় ছিল তার প্রথম দিন স্কুলে ভরতির 


11. 'এটা খুব ভালো, ওর হবে - কে, কোন্ প্রসঙ্গে এ কথা বলেছেন?

উত্তর: তপন তার স্কুলে ভরতির প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি গল্প লিখেছিল। মাসির মাধ্যমে লেখাটি তার লেখক মেসোর কাছে পৌঁছোলে সেটি পড়ে মেসো এমন মন্তব্য করেছেন।


12. "নতুন মেসোকে দেখে জানলে সেটা / - তপন কী জেনেছিল?

 উত্তর: তপন ছোটো থেকেই বহু গল্প শুনেছে ও পড়েছে। কিন্তু সে জানত না যে, সাধারণ মানুষ সহজেই তা লিখতে পারে। নতুন মেসোকে দেখে সেটাই জানল


13. “আর সেই সুযোগেই দেখতে পাচ্ছে তপন। কোন্ সুযোগে তপন কী দেখতে পাচ্ছে?

উত্তর: লেখক মেসোমশাইকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়ে তপন বুঝতে পারে লেখকরা কোনো আকাশ থেকে পড়া জীব নয়, তাদেরই মতো মানুষ।


14. ‘তপনদের মতোই মানুষ। এ কথা বলার কারণ কী?

উত্তর: ছুটিতে মামার বাড়িতে এসে নতুন মেসোকে দেখে ও তাঁর সঙ্গে সময় কাটিয়ে তপনের বিশ্বাস হয় যে, লেখকরা কোনো আকাশ থেকে পড়া জীব নয়; তাদের মতোই মানুষ।


15. ‘তখন আহ্লাদে কাঁদো কাঁদো হয়ে যায়।– কে, কেন আহ্লাদে কাদো কাদো হয়ে যায়?

উত্তর: ছোটোমেসো তপনের লেখাটা ছাপানোর কথা বললে তপন প্রথমে সেটাকে ঠাট্টা বলে ভাবে। কিন্তু মেসোর মুখে করুণার ছাপ দেখে তপন আহ্লাদে কাঁদো কাঁদো হয়ে যায়।


16. ‘মাথার চুল খাড়া হয়ে উঠল।'-এর কারণ কী ছিল?

উত্তর: নতুন মেসোর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে তপন নিজেই চেষ্টা করে একটা গল্প লিখে ফেলে। নিজের সৃষ্টিতে রোমাঞ্চিত হয়ে তার মাথার চুল খাড়া হয়ে ওঠে।



জ্ঞানচক্ষু গল্পের রচনা ধর্মী প্রশ্ন উত্তর:  প্রতিটা প্রশ্নের মান -৩/৪

1. ‘পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে?’— কোন্ ঘটনাকে অলৌকিক বলা হয়েছে? একে অলৌকিক বলার কারণ কী?

উত্তর: প্রখ্যাত শিশুসাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবীর গল্প ‘জ্ঞানচক্ষু’-র কেন্দ্রীয় চরিত্র তপন। বিশাল পৃথিবীতে স্বল্প বাস্তবতাবোধ নিয়ে আর-পাঁচটা শিশুর মতোই তারও পথ চলা। লেখকদের সম্পর্কে তার ধারণা সে-কথাই বলে। সেই তপন তার নতুন লেখক মেসোমশাইয়ের সান্নিধ্যে এসে তার প্রতিভাকে বিকশিত করে কাঁচা হাতে লিখে ফ্যালে একটা আস্ত গল্প। সেই গল্প মেসোর হাতে গেলে মেসো তপনের ও বাড়ির লোকেদের মন রাখার জন্য তা সামান্য কারেকশন করে ‘সন্ধ্যাতারা' পত্রিকায় ছাপিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার করেন ও সেটি নিয়ে যান। এর বেশ কিছু দিন পর ‘সন্ধ্যাতারা' পত্রিকায় গল্পটি ছেপে বেরোয়। তপনের কাছে এই চমকপ্রদ ঘটনাটিই অলৌকিক বলে মনে হয়েছিল।

 ‘অলৌকিক' শব্দটির আভিধানিক অর্থ হল মানুষের পক্ষে যা সম্ভব নয় বা পৃথিবীতে সচরাচর যা ঘটে না। এক্ষেত্রে ছোট্ট তপনের লেখা গল্প পরিবেশ ও পরিস্থিতির সমন্বয়ে যেভাবে ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হয়েছিল সেটাই অলৌকিক। আসলে তপনের লেখক সম্পর্কে ধারণার অবসান, গল্প লেখা, তা মেসোর হাত ধরে ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হওয়া প্রভৃতি ঘটনাগুলি তার কাছে এতটাই অবিশ্বাস্য যে, তার মনে হয় সমস্ত ঘটনাটিই যেন অলৌকিক।


2. ‘এর প্রত্যেকটি লাইনই তো নতুন আনকোরা, তপনের অপরিচিত’— ‘এর’ বলতে কীসের কথা বলা হয়েছে? বিষয়টি পরিস্ফুট করো।

উত্তর: উদ্ধৃত লাইনটি আশাপূর্ণা দেবীর ‘জ্ঞানচক্ষু' গল্পের অংশবিশেষ। এখানে 'এর' বলতে গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র তপনের প্রথম ছেপে বেরোনো গল্প ‘প্রথম দিন'-এর কথা 'এর'-এর উদ্দেশ্য বলা হয়েছে।

 গল্পের নায়ক তপন ছোটোবেলা থেকেই ভাবত লেখকরা বুঝি অন্য জগতের মানুষ। কিন্তু ছোটোমাসির সঙ্গে বিয়ে হওয়া নতুন মেসোকে দেখে তার সেই ভুল ভাঙে। তার নতুন মেসো বই লেখেন। সেসব বই ছাপাও হয়—অথচ মেসোর আচার-আচরণের সঙ্গে তার বাবা, ছোটোমামা বা মেজোকাকুর আচার-আচরণের কোনো তফাতই সে খুঁজে পায় না। তপন বোঝে, লেখকরা আকাশ থেকে পড়া কোনো জীব নয়। অনুপ্রাণিত তপন একটা আস্ত গল্প লেখে যেটা তার মাসির হাত ঘুরে মেসোর হাতে পড়ে। মাসির পীড়াপীড়িতে সামান্য কারেকশন করে সে গল্প ‘সন্ধ্যাতারা'-য় ছাপিয়ে দেন নতুন মেসো। বাড়িতে সে নিয়ে আনন্দের শেষ নেই। কিন্তু ছোট্ট তপন সকলের অনুরোধে গল্প পড়তে শুরু করতেই সুর কেটে যায়। তপন দেখে কারেকশনের নাম । করে মেসো তার লেখাটা আগাগোড়াই বদলে দিয়েছেন। গল্পের প্রত্যেকট লাইনই তার কাছে নতুন লাগে। তার শিশুমন ব্যথায় ভরে ওঠে।


 3. ‘তপনের মনে হয় আজ যেন তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন।— ‘আজ' বলতে কোন্ দিনের কথা বলা হয়েছে? 

উত্তর: 'আজ' বলতে সেই দিনটির কথা বলা হয়েছে, যেদিন তপনের মাসি ও মেসো ‘সন্ধ্যাতারা' পত্রিকার একটি সংস্করণ নিয়ে তাদের বাড়িতে আসেন, যাতে তপনের প্রথম গল্প প্রকাশিত হয়েছিল।

কারণ: শিশুমন কোমল, সামান্য আঘাত পেলেই তারা ভীষণভাবে মুষড়ে পড়ে। এক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে। ছোট্ট তপনের লেখক সম্পর্কে সব কৌতূহলের শেষ হয় নতুন মেসোকে দেখে। অনুপ্রাণিত তপন একটি গল্প লেখে। সেই গল্প মাসির পীড়াপীড়িতে মেসোর হাত ধরে 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকায় ছাপা হয়। স্বাভাবিক কারণে তপন উৎফুল্ল হয়ে ওঠে। নানান বিরূপতা সত্ত্বেও সে গর্ব অনুভব করে। কিন্তু তার গর্ব মাটিতে মিশে যায় গল্পটি পড়ার সময়। সে দেখে প্রকাশিত গল্পে তার লেখার লেশমাত্র নেই। কারণ গল্পটা সামান্য কারেকশনের নামে পুরোটাই বদলে গিয়েছিল। এতে তপনের লেখকসত্তা অপমানিত হয়। তার চোখে জল এসে যায়। এই কারণে দিনটিকে তার সবচেয়ে দুঃখের মনে হয়।


4. 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পে তপন চরিত্রটি বিশ্লেষণ করো।

উত্তর: আশাপূর্ণা দেবীর 'জ্ঞানচক্ষু গল্পের তপনের মধ্যেও সব শিশুর মতোই আশা-আকাঙ্ক্ষা, স্বপ্ন-স্বপ্নভঙ্গ, কল্পনা বাস্তব, আনন্দ-অভিমানের টানাপোড়েন দেখা যায়। তবে তার চরিত্রের বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য তাকে আলাদা করে রাখে।

 তপন মনে মনে তার কল্পনার জগৎকে সাজিয়ে নিতে ভালোবাসে। তাই তার কল্পনার জগতে লেখকরা ছিলেন ভিন গ্রহেরপ্রাণী। সাধারণ মানুষদের সঙ্গে তাদের বুঝি বা কোনো মিলই নেই।

 সাহিত্যের প্রতি তপনের ঝোঁক ছোটোবেলা থেকেই। সে অনেক গল্প শুনেছে ও পড়েছে। লেখকদের সম্পর্কেও তার কৌতূহল অসীম। ছোটোমেসোকে দেখে তার মনেও লেখক হওয়ার ইচ্ছে জাগে। উৎসাহী হয়ে বেশ কয়েকটা গল্পও লিখে

 বয়স অনুপাতে তপন একটু বেশিই সংবেদনশীল। সমবয়সি ছেলেমেয়েদের মতো রাজারানি, খুন-জখম ও অ্যাকসিডেন্ট নিয়ে না-লিখে, তার ব্যক্তিগত জীবনের অভিজ্ঞতা আর অনুভূতি নিয়ে গল্প লেখে। তা নিয়ে বাড়ির লোকের ঠাট্টাতামাশা বা মাসি মেসোর উৎসাহদান- কোনোটাতেই সে প্রকাশ্যে তার প্রতিক্রিয়া দেখায় না। এটা তার অন্তর্মুখী স্বভাবেরই পরিচয়। তাই কারেকশনের নামে মেসো তার গল্পটা আগাগোড়া বদলে দিলে তপন তার কষ্ট লুকোতে ছাদে গিয়ে কাঁদে।


5. ‘নতুন মেসোকে দেখে জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল তপনের- কোন্ ঘটনায় জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল ? গল্প অনুসারে সত্যিই কি এই ঘটনায় তপনের জ্ঞানচক্ষু খুলেছিল ?

উত্তর: গল্পকার আশাপূর্ণা দেবীর 'জ্ঞানচক্ষু” গল্পের প্রধান চরিত্র তপন। তার শিশুমনে লেখক বা সাহিত্যিক সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো ধারণা ছিল না। সে ভাবত লেখকেরা বুঝি কোনো ভিন গ্রহের জীব। ছোটোমাসির বিয়ে হওয়ার পর তপন জানতে পারে নতুন মেসো একজন লেখক এবং তাঁর অনেক বই ছাপা হয়েছে। জলজ্যান্ত একজন সত্যিকারের লেখককে চোখের সামনে দেখে সে বুঝতে পারে লেখকেরা ছোটোমামা কিংবা মেজোকাকুর মতোই নিছক সাধারণ মানুষ। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই তপনের প্রাথমিক জ্ঞানচক্ষু খুলে

যায়। লেখক মেসোমশাইয়ের দৃষ্টান্তে অনুপ্রাণিত হয়ে তপন নিজেও একটা আস্ত গল্প লিখে ফ্যালে। এভাবে সহজেই একটা গল্প লিখে ফেলার রোমাঞে ও উত্তেজনায় তা সে বন্ধুমনোভাবাপন্ন ছোটোমাসিকে দেখায়। এরপর ছোটোমাসির প্ররোচনায় আর নতুন মেসোর প্রভাবে সেই গল্পটি ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। কিন্তু পত্রিকায় ছাপা গল্পটি পড়ে তপন টের পায় সংশোধনের নামে মেসো আগাগোড়া বদলে দিয়েছেন। এ গল্পে তপন কোথাও নেই। আর বাড়িতেও মুখে মুখে রটে যায় মেসোর দৌলতেই তার গল্প ছাপা হয়েছে। এ ঘটনা আত্মমর্যাদাবোধসম্পন্ন তপনের সংবেদনশীল লেখক মনে আঘাত করে। লজ্জায়-অনুশোচনায় সে সিদ্ধান্ত নেয় ভবিষ্যতে কারও সুপারিশে নির্ভর না-করে নিজের লেখা নিজেই ছাপতে দেবে। এক কিশোরের আত্মস্বরূপ আবিষ্কারের এ কাহিনির মধ্যেই আসলে লুকিয়ে আছে প্রকৃত জ্ঞানচক্ষু লাভের সার্থকতা।


6.‘তার চেয়ে দুঃখের কিছু নেই, তার থেকে অপমানের!— কার এ কথা মনে হয়েছে? জীবনের কোন্ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে সে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে? 3+8 

উত্তর: কথাশিল্পী আশাপূর্ণা দেবীর ‘জ্ঞানচক্ষু' গল্পের নায়ক তপনের এ কথা মনে হয়েছিল। শিশুমন কোমল, সামান্য আঘাত পেলেই তারা ভীষণভাবে মুষড়ে পড়ে।  এক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে। ছোট্ট তপনের লেখক সম্পর্কে সব কৌতূহলের শেষ হয় নতুন মেসোকে দেখে। অনুপ্রাণিত তপন একটি গল্প লেখে। সেই গল্প মাসির পীড়াপীড়িতে মেসোর হাত ধরে ‘সন্ধ্যাতারা' পত্রিকায় ছাপা হয়। স্বাভাবিক কারণে তপন উৎফুল্ল হয়ে ওঠে। নানান বিরূপতা সত্ত্বেও সে গর্ব অনুভব করে। কিন্তু তার গর্ব মাটিতে মিশে যায় গল্পটি পড়ার সময়। সে দ্যাখে প্রকাশিত গল্পে তার লেখার লেশমাত্র নেই। কারণ গল্পটা সামান্য কারেকশনের নামে পুরোটাই বদলে গিয়েছিল। এতে তপনের লেখকসত্তা অপমানিত হয়। তার চোখে জল এসে যায়। নিজের গল্প পড়তে বসে অন্যের লেখা লাইন পড়ার দুঃখ ও যন্ত্রণা তাকে কুরেকুরে খায়। লজ্জা, অনুশোচনা এবং আত্মসম্মানহীনতার সংকোচ থেকে এভাবেই সে উপরিউক্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হয়।


7. ‘জ্ঞানচক্ষু’গল্পে জ্ঞানচক্ষু বলতে কী বোঝানো হয়েছে? গল্পটি পড়ে তুমি কী শিক্ষা পেলে লেখো।

 উত্তর:  ‘জ্ঞানচক্ষু' গল্পটির লেখিকা কথাশিল্পী আশাপূর্ণা দেবী।   ‘জ্ঞানচক্ষু’ বলতে মানুষের আত্ম-অনুভূতি এবং অন্তর্দৃষ্টি লাভের বিষয়টিকে তুলে ধরতে চেয়েছেন। ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পটির নায়ক তপন। ছোট্ট তপন তার সীমিত জীবনবৃত্তে কখনও কোনো লেখককে দেখেনি। তাই সত্যিকারের লেখক নতুন মেসোকে দেখে সাহিত্যিক সম্পর্কে তার সমস্ত ভুল ধারণার নিরসন হয়। মেসোকে হাতের কাছে পেয়ে অনুপ্রাণিত হয়ে সে নিজেই এবার একটা আস্ত গল্প লিখে ফেলে। এরপর মাসির প্রশ্রয়ে এবং লেখক মেসোর প্রভাবে সেই । গল্পটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। সে মনে মনে বেশ গর্বও অনুভব করে। কিন্তু ছাপা লেখাটি পড়তে গিয়ে টের পায় সংশোধন করতে গিয়ে লেখক-মেসো র গল্পের আগাগোড়া বদলে দিয়েছেন। নির্বিচারে কলম চালানোয় নিজের নামে পায় না। ফলে তপনের লেখকমন আহত হয়। সে দুঃখে, লজ্জায় ও অসম্মানে একলা ছাতে গিয়ে কেঁদে ফেলে। এমন গভীর খারাপ লাগার দিনে দাঁড়িয়ে সে সংকল্প করে; ভবিষ্যতে কারও মুখাপেক্ষী না-হয়ে নিজের লেখা নিজেই ছাপতে দেবে। আসলে কাউকে অবলম্বন ন করে কিছু পেতে গেলে যে আত্মসম্মান খুইয়ে নিজের মনের আয়নায় 

 নিজেকেই ছোটো হয়ে যেতে হয়— এই শিক্ষাই তপন লাভ করে আর র} আমরাও তার সঙ্গে টের পাই স্বকীয়তা এবং আত্মমর্যাদাবোধের সঙ্গে ⇒ আপস করে কখনই জীবনে কিছু লাভ করা যায় না। গল্প পড়ে প্রাপ্ত শিক্ষা ছাপানো গল্পে সে আর নিজেকেই কোথাও খুঁজে পায় না।

No comments:

Post a Comment