Class 10th Bangla Ai Aro Bedhe Bedhe Thaki Questions And Answers MCQ, SAQ, LAQ | আই আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতার প্রশ্ন উত্তর | দশম শ্রেণীর বাংলা আই আরো বেঁধে বেঁধে থাকি প্রশ্ন উত্তর - Psycho Principal

Fresh Topics

Saturday, 25 March 2023

Class 10th Bangla Ai Aro Bedhe Bedhe Thaki Questions And Answers MCQ, SAQ, LAQ | আই আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতার প্রশ্ন উত্তর | দশম শ্রেণীর বাংলা আই আরো বেঁধে বেঁধে থাকি প্রশ্ন উত্তর

 

আই আরো বেঁধে বেঁধে থাকি 
প্রশ্ন উত্তর





দশম শ্রেণীর বাংলা সাজেশন | দশম শ্রেণীর বাংলা আই আরো বেঁধে বেঁধে থাকি   প্রশ্ন উত্তর | দশম শ্রেণীর বাংলা আই আরো বেঁধে বেঁধে থাকি গুরুত্ব পূর্ণ প্রশ্ন উত্তর, সহায়িকা | Class 10th Bangla Ai Aro Bedhe Bedhe Thaki   Important Questions And Answers | দশম   শ্রেণীর বাংলা গুরুত্ব পূর্ণ প্রশ্ন উত্তর | #Class 10th Bangla Ai Aro Bedhe Bedhe Thaki Questions And Answers #Class 10th Bangla  Questions And Answers


⬛ আই আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতার বহুবিকল্পিক প্রশ্ন উত্তর: প্রতিটা প্রশ্নের মান -১

1 . কবির মর্তে তবুও আমরা কোথায় কোথায় ফিরেছি?

ক) দোরে দোরে

(খ) জলে জলে

গ) বন্দরে বন্দরে

ঘ) স্থলে স্থলে

উত্তরঃ ক) দোরে দোরে


2. শঙ্খ ঘোষ রচিত একটি প্রবন্ধগ্রন্থ হল-

ক) মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে

খ) অল্প বয়সে

গ) কালের যাত্রা ও রবীন্দ্র নাটক

ঘ) সুপুরিবনের সারি

উত্তরঃ গ) কালের যাত্রা ও রবীন্দ্র নাটক


3. শঙ্খ ঘোষের ছদ্মনাম কী ছিল ?

ক) কুন্তক

খ) যাযাবর

গ) মৌমাছি

 ঘ) নীললোহিত

উত্তরঃ ক) কুন্তক


4. 'কুন্তক” ছদ্মনামে লেখা শঙ্খ ঘোষের রচনাগুলির নাম হল-

ক) শব্দ নিয়ে খেলা ও কথা নিয়ে খেলা

খ) দিনগুলি রাতগুলি, বাবরের প্রার্থনা

গ) ছন্দময় জীবন, ভিন্ন রুচির অধিকার

ঘ) এই শহরের রাখাল, ছন্দের বারান্দা

উত্তরঃ ক) শব্দ নিয়ে খেলা ও কথা নিয়ে খেলা


5. ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি' কথাটি কবিতায় ব্যবহৃত হয়-

ক) এক বার

খ) দু-বার

গ) তিন বার

ঘ) চার বার

উত্তরঃ খ) দু-বার


6. ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি' বাক্যটির অর্থ— 

ক) দৃঢ় বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে থাকা

খ) ছাড়া ছাড়া থাকা

গ) বন্ধন মুক্ত থাকা

ঘ) ঢিলেঢালা থাকা

উত্তরঃ  ক) দৃঢ় বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে থাকা


7. ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি' কবিতাটির দ্বিতীয় পক্তি—

ক) আমাদের ডানপাশে ধ্বস

খ) আমাদের বাঁয়ে গিরিখাদ 

গ) আমাদের মাথায় বোমারু

ঘ) ‘আমাদের বাঁয়ে গিরিখাদ'

উত্তরঃ  খ) আমাদের বাঁয়ে গিরিখাদ 


8. ‘আমাদের পথ নেই আর।’— ‘পথ' শব্দটি কবিতায় ব্যবহৃত হয়েছে—

ক) একবার

খ) দুইবার

(গ) চারবার

ঘ) তিনবার

উত্তরঃ খ) দুইবার


9. আমাদের কী নেই বলে কবির মত প্রকাশ ?

ক) ভূগোল

খ) ইতিহাস

(গ) বাংলা

(ঘ) জীবন

উত্তরঃ খ) ইতিহাস


8. 'আমাদের চোখমুখ ঢাকা।'‘চোখমুখ' অর্থে কবি বলেছেন-

ক) এক মুখোশাবৃত

খ) সময়াবৃত

(গ) অলংকারাবৃত

ঘ) সমাজাবৃত

উত্তরঃ  ক) এক মুখোশাবৃত


9. 'গিরিখাদ' শব্দটির আক্ষরিক অর্থ-

ক) স্থানচ্যুতি

(খ) অদৃশ্য হওয়া

গ ) চূড়া

ঘ) পর্বত গহ্বর

উত্তরঃ ঘ) পর্বত গহ্বর


10. ‘আমাদের মাথায় ' (শূন্যস্থান)

ক) বোমারু

খ) গিরিখাদ

গ) চূড়া

ঘ) পর্বত গহ্বর

উত্তরঃ ক) বোমারু


11. কবিতায় উল্লিখিত হিমানীর বাঁধ রয়েছে-

ক) হাতে হাতে

খ) পায়ে পায়ে

(গ) মাথায় মাথায়

ঘ) শিরায় শিরায়

উত্তরঃ  খ) পায়ে পায়ে


12. ‘পায়ে পায়ে হিমানীর বাঁধ।'- 'হিমানী' শব্দের আক্ষরিক অর্থ—

ক) জল

খ) আগুন

গ) তুষার

ঘ) পর্বত

উত্তরঃ গ) তুষার


14. কবিতায় কবি কাদের শবদেহের উল্লেখ করেছেন ?

ক ) বুড়োদের

খ) শিশুদের

গ) যুবকদের

ঘ) বৃদ্ধাদের

উত্তরঃ  খ) শিশুদের


15. “আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি' কবিতাটি কবির কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত—

ক) জলই পাষাণ হয়ে আছে 

খ) ‘নিহিত পাতাল ছায়া’

গ) ‘পাঁজরে দাঁড়ের শব্দ

ঘ) ‘দিনগুলি রাতগুলি’

উত্তরঃ ক) জলই পাষাণ হয়ে আছে 


16. ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি' কবিতাটির কবি হলেন—

ক) বিষ্ণু দে

খ) জীবনানন্দ দাশ

 ঘ) নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী

গ) শঙ্খ ঘোষ

উত্তরঃ  গ) শঙ্খ ঘোষ


17. কবি শঙ্খ ঘোষের প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থটি হল-

ক) দিনগুলি রাতগুলি

খ) নিহিত পাতাল ছায়া

গ) মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে

ঘ) বাবরের প্রার্থনা

উত্তরঃ  ক) দিনগুলি রাতগুলি


18. আমরা ভিখারি কত মাস বলে কবির মত?

ক) পাঁচ মাস

খ) ছ-মাস

(গ) আট মাস

ঘ) বারো মাস

উত্তরঃ ঘ) বারো মাস


⬛ আই আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর:  প্রতিটা প্রশ্নের মান -১/২

1. ‘আমাদের পথ নেই আর’– ‘আমাদের বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে?

উত্তর; 'আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি' কবিতায় কবিকণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছে সাধারণ মানুষের কণ্ঠস্বর। তাই 'আমাদের' বলতে তিনি এ পৃথিবীর সমস্ত নিরন্ন, খেটে খাওয়া ও নিরাপত্তাহীন অসহায় মানুষকেই বুঝিয়েছেন।


২.‘আমাদের শিশুদের শব/ছড়ানো রয়েছে কাছে দুরে' বলার কারণ কী?

উত্তর;  আজকের পৃথিবীতে যুদ্ধ-দাঙ্গা ও হিংসার উন্মত্ততায় শিশুদেরও রেহাই নেই। নিয়মিত দূরে কিংবা কাছেই ঘটে চলা এমন শিশুঘাতী সন্ত্রাসের খবরে আমরা শিউরে উঠি। উদ্ধৃতাংশে কবি এ কথাই বলতে চেয়েছেন।


3. ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি' কবিতা অনুসারে আমাদের ইতিহাসের পরিচয় দাও।

উত্তর; পৃথিবীর সামগ্রিক ইতিহাসই আসলে ক্ষমতাবানদের ইতিহাস। অসহায় ও দুর্বল সাধারণ মানুষের কথা তাই তথাকথিত সভ্যতার আয়নায় ফুটে ওঠে না। তারা ইতিহাসহীন অথবা বিকৃত ইতিহাসের আড়ালে থাকার সৈন্যে বিস্মৃত ও নিরুত্তর।


 4. আমাদের শিশুদের শব' কোথায় ছড়ানো রয়েছে?

উত্তর; ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি' কবিতা অনুসারে আমাদের শিশুদের শব কাছে ও দূরে ছড়ানো রয়েছে। অর্থাৎ আজকের সমগ্র পৃথিবী- জুড়েই শিশুরা হিংসাশ্রয়ী যুদ্ধ আর সন্ত্রাসের বলি।


5. আমাদের ডান পাশে, বাঁয়ে, মাথায় ও পায়ে যা আছে তা 'আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতা অনুসারে লেখো।

উত্তর; ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি' কবিতা অনুসারে আমাদের ডান পাশে ধস এবং বাঁয়ে গিরিখাদ, আর মাথার উপরে বোমারু ও পায়ে হিমানীর বাঁধ।


 ৬. ‘পৃথিবী হয়তো গেছে মরে—এমন বলার কারণ কী?

উত্তর;  শাসনের ষড়যন্ত্রে, সমাজ-রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অবক্ষয়ে হতভাগ্য সাধারণ মানুষের জীবনে বেঁচে থাকার অর্থটাই হারিয়ে গেছে। মানবতার এই ঘোর দুর্দিনে প্রাণধারণের যে-দৈন্য ফুটে ওঠে, তা মানবজীবনের দিশাহীন অর্থহীনতার প্রকাশ ছাড়া আর কিছুই নয়।


 7. ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে?

উত্তর ; ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি' কবিতাটি কবি শঙ্খ ঘোষের ‘জলই পাষাণ হয়ে আছে' নামক মূল কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে। 


8. ‘আমাদের কথা কে-বা জানে' বলার কারণ কী?

উত্তর;  এই ব্যক্তিসর্বস্ব বিচ্ছিন্নতার যুগে, সাধারণ মানুষের সামান্য প্রয়োজনীয়তার কথায় যেন কেউ দৃকপাত করে না। সেজন্যই কবি এ কথা বলেছেন।


9. “তবু তো কজন আছি বাকি' বলার কারণ কী?

উত্তর ;  ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি' কবিতা অনুসারে এই রাজনৈতিক, সামাজিক অবক্ষয়ের যুগেও কিছু মানুষ এখনও মানবতায় বিশ্বাস হারায়নি। সেই শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষগুলোকে নিয়েই কবি জোটবাঁধার কথা বলেছেন। 


 10. ‘আয় আরো হাতে হাত রেখে—এই পঙ্ক্তিটি অন্তর্নিহিত অর্থ লেখো ।

উত্তর;  সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আস্ফালনে মানুষ আজ ঘরছাড়া, পথহারা, ইতিহাস-বিকৃত চিরভিখারিতে পরিণত। প্রত্যয়ী কবি এই ধ্বংসের মাঝেও বিবেকবান ও শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষকে সংঘবদ্ধ করার উদ্দেশ্যে প্রশ্নোদ্ধৃত উক্তিটি করেছেন।


 11. ‘আমাদের মাথায় বোমারু— ‘বোমারু শব্দটির অর্থ কী ?

উত্তর; ‘বোমারু শব্দটির আভিধানিক অর্থ হল, যা থেকে বোমা নিক্ষেপ করা হয়।


12.  আমরা ভিখারি বারোমাস বলার কারণ কী?

উত্তর;  সাম্রাজ্যবাদী শক্তির শোষণে নিপীড়িত, বঞ্চিত ও হতভাগ্য জনগণ আজ আশ্রয় ও জীবিকা হারিয়ে চিরভিখারিতে পরিণত হয়েছে। সেইসঙ্গে প্রতিকূলতা ও যুগযন্ত্রণায় ভীরু-দুর্বল সাধারণ মানুষের সামগ্রিক দৈন্যও আজ বড়ো প্রকট। তাই কবি এ কথা বলেছেন।


 13.  ‘পৃথিবী হয়তো বেঁচে আছে/পৃথিবী হয়তো গেছে মরে বলার অন্তর্নিহিত কারণ কী?

উত্তর; পারিপার্শ্বিক প্রতিকূলতার মাঝে পীড়িত, ঘরহারা ও ইতিহাসে ঠাঁই না-পাওয়া মানুষগুলির কাছে বেঁচে থাকার অর্থটাই হারিয়ে গেছে। তাই পৃথিবীর বেঁচে থাকা বা না-থাকায় তাদের কিছু যায় আসে না।


14. ‘আমাদের পথ নেই আর-কবির এরকম বলার কারণ কী?

উত্তর; ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি' কবিতায় কবি লক্ষ করেছেন, আজকের পৃথিবীতে সাধারণ মানুষের অসহায়তা। শাসকের আগ্রাসন— সাম্রাজ্যবাদ—মৌলবাদ—সমাজ-রাজনৈতিক অবক্ষয় ও হানাদারি শত্রুর স্বেচ্ছাচারে মানুষের স্বাভাবিক বেঁচে থাকার অধিকারটুকুও এখন বিপন্ন। পরিস্থিতির এই প্রতিকূলতাকে কবি উদ্ধৃতাংশটির মধ্য দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন।


 15. ‘আমাদের পথ নেই আর— তাহলে আমাদের করণীয় কী?

উত্তর; এই সমাজ-রাজনৈতিক প্রচন ও পতনের মাঝে, সমস্ত শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের সংঘবর্থতাই হল তার মুক্তির একমাত্র পথ।



⬛ আই আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতার রচনা ধর্মী প্রশ্ন উত্তর:  প্রতিটা প্রশ্নের মান -৩/৪

1  . “আমরা ভিখারি বারোমাস বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন ?

উত্তর;  উদ্ধৃতিটি শঙ্খ ঘোষের ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি” কবিতার অংশ-বিশেষ। 'আমরা ভিখারি বারোমাস' বলতে কবি মানুষের মানসিক দৈন্যের কথা বলেছেন। কবির মতে নানান প্রতিকূলতা ও যুগযন্ত্রণার ক্ষত নিয়ে মানুষ বেঁচে আছে। সে পথহারা, তার মানসিক দৃঢ়তা শিথিল হয়ে পড়েছে। তার প্রকৃত ইতিহাসের অন্তর্নিহিত অর্থ সঠিক প্রতিফলন হয়নি জেনেও সে নিশ্চুপ ও বহির্বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন। এভাবে আপাতদুর্বল ও ভীরু সাধারণ মানুষের অবহেলিত মানসিক দৈন্যের কথা বলতে গিয়ে কবি এমন মন্তব্য করেছেন।


2. "আয় আরো হাতে হাত রেখে হাতে হাত রাখা বলতে কী বোঝায়? এক্ষেত্রে 'আরো' শব্দটির প্রয়োগের তাৎপর্য লেখো। ১+২

উত্তর; শঙ্খ ঘোষ তাঁর 'আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি' কবিতায় হাতে হাত রাখা বলতে মানুষের সংঘবদ্ধতাকে বুঝিয়েছেন।

বিচ্ছিন্নতা, আগ্রাসন, হিংসা, অসহিষ্কৃতার বিরুদ্ধে কবি সাহিত্যিক = লড়াই চিরকালের। তারা চায় শাস্তি, যা সমাজের বৃহত্তর অংশের চাল সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন ও অশুভ শক্তির প্র সাধারণ মানুষ আজ বিপন্ন। তবু এত প্রতিকূলত মাঝেও তাদের মধ্যে যতটুক প্রতিরোধের ক্ষমতা আছে সেটুকু একি করার জন্য কবি 'আরো' শব্দটি ব্যবহার করেছেন। 


 3. ‘আমরা ফিরেছি দোরে দোরে'— 'আমরা কারা  কেন এই অবস্থা?

উত্তর;  কবি শঙ্খ ঘোষের ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি' কবিতায় 'আমরা' বলতে অসহায় ও বিপন্ন সাধারণ মানুষকে বোঝানো হয়েছে।

 আজ সমগ্র পৃথিবীর বুকে নেমে এসেছে এক গভীর আঁধার। হিংস যুদ্ধ-রক্তক্ষয়-বিভেদ ও বিচ্ছিন্নতার আঘাতে মানুষ এখন ক্ষতবিক্ষত। তার চলার পথে ডাইনে-বাঁয়ে-উপরে কিংবা নীচে সর্বগ্র প্রতিকূলতা আর অতর্কিতে প্রাণহানির আশঙ্কা। শাসকের চক্রান্তে, স্বার্থান্বেষী ক্ষমতাবানের মদতে সমাজ-রাজনৈতিক অবক্ষ এক চরম রূপ নিয়েছে। ফলে নরঘাতী হানাহানির শিকার হচ্ছে শিশুরাও। হতভাগ্য, নিরাপত্তাহীন ও দিশাহীন মানুষের এই নিরুপায় দুর্দশার ছবিট ফুটে উঠেছে প্রশ্নোদ্ধৃত পক্তিটিতে।


 4. ‘আমাদের শিশুদের শব— 'শিশুদের শব' বলতে বন্ধু কী বুঝিয়েছেন? 'শব' শব্দটির অর্থ কী?

উত্তর; কবি শঙ্খ ঘোষের 'আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি' কবিত থেকে প্রশ্নোদ্ধৃত অংশটি নেওয়া। হিংসায় উন্মত্ত এ পৃথিবীতে কোমল-নিষ্পাপ 'শিশুদের শর

শিশুরাও আজ রক্তক্ষয়ী সন্ত্রাসের শিকার। যুদ্ধ-দাতা ও অতর্কিত হানার আঘাতে নিমেষে ছিন্নভিন্ন হ যে-কোনো সদ্যোজাতের দেহ। কাছে-দূরে ছড়িয়ে থাকা শিশুর এই শবদেহের মধ্যে সমগ্র পৃথিবীজুড়ে ঘটে-চলা শিশুঘাতী নারকীয়তার অমানুষী চিহ্ন ফুটে ওঠে। কবি এ কথাই বোঝাতে চেয়েছেন। 'শব' শব্দটির আভিধানিক অর্থ হল শবদেহ।


5. "আমাদের কথা কে-বা জানে'- 'আমরা' কারা? তাদের কথা কেন কেউ জানে না? ১+২

উত্তর; কবি শঙ্খ ঘোষের ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতা অনুসারে আমরা হল এ পৃথিবীর অগণিত অসহায় খেটে-খাওয়া সাধারণ মানুষ।

এ পৃথিবীর ইতিহাস আসলে ক্ষমতাবান শাসকের ইতিহাস। শাসকেরা প্রতিনিয়ত তার গতিপ্রকৃতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। তাদের মদতে বিভিন্ন কেন কেউ আমাদের স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী নিজেদের সংকীর্ণ স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য সমাজ-রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্ম দেয়, যার বলি হয় সাধারণ মানুষ। তাদের সুখ-দুঃখ-শান্তি-স্বস্তির পরোয়া কেউ করে না। দুর্বল ও অসহায় আমজনতার কথা তাই কখনও সভ্যতার আয়নায় ধরা দেয় না। তাদের জন্য জোটে উপেক্ষা, অবহেলা ও বিস্মৃতি। কবি এই ঐতিহাসিক সত্যকেই তুলে ধরেছেন।


6. ‘পৃথিবী হয়তো গেছে মরে— এমন সংশয়ের কারণ?

উত্তর; কবি শঙ্খ ঘোষ তাঁর ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি' কবিতায় এমন সংশয়পূর্ণ উক্তিটি করেছেন। উপনিষদের কথার রেশ টেনে বলা যায় মানুষ তার মানবতার পক্ষে চলমান, তাই জীবনে থেমে থাকা মৃত্যুরই সংশয়ের কারণ সমান। আজকের যুদ্ধ ও দাঙ্গাবিধ্বস্ত পৃথিবীতে মানুষ দিশেহারা, তার হাত-পা বাঁধা। গৃহহীন, ইতিহাস-বিস্তৃত এই নিরন্ন মানুষগুলি নিজের ভাবী প্রজন্মকে রক্ষা করতে ব্যর্থ। জীবনের অর্থহীনতায় বেঁচে থাকার আশা সে হারিয়েছে। তাই সমস্ত পৃথিবীটা তার কাছে জীবস্মৃত বলে মনে হয়েছে।


7. ‘তবু তো কজন আছি বাকি – কবি এই উক্তিটির সাহায্যে কী বোঝাতে চেয়েছেন?

উত্তর ; কবি শঙ্খ ঘোষের 'আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি' কবিতা থেকে উদ্ধৃত উক্তিটি যেন বরিষ ধরা মাঝে শাস্তির বাণী। কবির মতে, সাম্রাজ্যবাদী ও স্বার্থান্বেষী একদল মানুষ নানান প্রতিকূলতা সৃষ্টি করে। সাধারণ মানুষের চলার পথ রুদ্ধ করে দিতে চাইছে। সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক জীবনে তারা নানানভাবে বিপন্ন। তাদের অতীত অস্পষ্ট, অসম্পূর্ণতায় অন্ধকার। আর বর্তমান এবং ভবিষ্যৎও সাম্রাজ্যবাদী শাসকের চক্রান্তে দুর্বিষহ। এরকম প্রতিকূল অবস্থার মাঝে বিবেকবান যে-কয়েকজনের অস্তিত্ব আছে, কবি তাদের নিয়ে প্রতিরোধের আশায় এমন উক্তি করেছেন।



 আই আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতার ব্যাখ্যা ভিত্তিক প্রশ্ন উত্তর:  প্রতিটা প্রশ্নের মান -৫

1. .‘আমরা ভিখারি বারোমাস’– ‘আমরা বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে? তারা নিজেদের সর্বদা ভিখারি বলে মনে করেছেন কেন ? 2+3=5

উত্তর; কবি শঙ্খ ঘোষের ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি' কবিতা থেকে উদ্ধৃত অংশটি গৃহীত। এখানে ‘আমরা’ বলতে বর্তমান বিশ্বে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আগ্রাসনে ও মৌলবাদী শক্তির অত্যাচারে জর্জরিত সাধারণ, শান্তিকামী ও শ্রমজীবী মানুষদের বোঝানো হয়েছে।

নিজেদের সর্বদা ভিখারি মনে করার কারণ:

এক্ষেত্রে ‘আমরা একটি বিশেষ শ্রেণিচরিত্র, দেশকালভেদে যারা সর্বদাই এক। সাধারণ, শ্রমজীবী এই মানুষগুলি সমাজের নীচের তলার মানুষ হিসেবে পরিচিত। এরা সভ্যতার ধারক ও বাহক। কিন্তু এরাই থাকে সবচেয়ে অন্ধকারে। সমাজের তথাকথিত উচ্চবিত্তের দয়াদাক্ষিণ্যের ওপর নির্ভর করে এদের মরা-বাঁচা। শাসকের ক্ষমতার বদল হলেও এদের দীনতার কোনো বদল হয় না। সাধারণ এই মানুষগুলি সর্বদাই বঞ্চিত থাকে তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে। আবার সাম্রাজ্যবাদী ও মৌলবাদী শক্তি যখন নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য বিশ্বময় উন্মাদনা সৃষ্টি করে, তখন সবার আগে এরাই আশ্রয়চ্যুত হয়ে পড়ে, টান পড়ে এদের রুটি-রুজিতে। এদের জীবনের ইতিহাস কোথাও লেখা হয় না। আর যদিও-বা হয় তবে তা ক্ষমতাবান ও সাম্রাজ্যবাদীদের হাতে বিকৃত হয়ে পরিবেশিত হয়। অথচ এই সমস্ত মানুষরা শুধুমাত্র অর্থনৈতিক বিচারে ভিখারি নয়, এরা সামাজিক দিক দিয়েও দীন, শাসকের অবজ্ঞা, উপেক্ষা ও অবহেলার পাত্র। তাই কবি এই সাধারণ মানুষদের জবানিতে বলেছেন, 'আমরা ভিখারি বারোমাস।'


2.‘ আমাদের শিশুদের শব/ছড়ানো রয়েছে কাছে দূরে!— কার, কোন্ কবিতার অংশ? মূলগ্রন্থের নাম কী ? পাঠ্য কবিতা অনুসারে পক্তি দুটির তাৎপর্য আলোচনা করো।

উত্তর; প্রশ্নে উদ্ধৃত পক্তিটি কবি শঙ্খ ঘোষের ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি' কবিতা থেকে গৃহীত। এই কবিতাটি তাঁর 'জলই পাষাণ হয়ে আছে' নামক কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত। 

 হিংসাশ্রয়ী সময়ের বিপন্নতায় আজ মানুষের চারপাশ বিপৎসংকুল। তাই রাষ্ট্রীয় বর্বরতার নগ্ন ভয়াবহতা থেকে শিশুরাও এখন আর বাদ যায় না। এইজন্য ‘কাছে-দূরে' অর্থাৎ যত্রতত্র নারকীয় হানাহানি কিংবা প্রাণঘাতী হিংসার বলি হিসেবে ছড়িয়ে থাকে শিশুর মৃতদেহ। এভাবেই ক্ষমতার দখলদার তথা শক্তিশালী প্রবল একদিকে নির্বিবাদে শিশুহত্যার মধ্য দিয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে যেমন ধ্বংস করে, অন্যদিকে তেমনি আপামর জনসাধারণের মনে এক ভয়াবহ আতঙ্ক তৈরি করতে সক্ষম হয়। শিশু তো দেশের ভবিষ্যৎ, তাই তার হত্যা হলে, ভবিষ্যৎশূন্য হয় দেশ। নতুন ভাবনার ধারক ও বাহকের পথ নিশ্চিহ্ন হয় চিরতরে। সুতরাং, যে-সমাজ ও রাষ্ট্র শিশুহত্যার চক্রান্ত করে, সে সম্পূর্ণ মনুষ্যত্ব-বিরোধী। অন্যদিকে, নিজেদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করতে না-পারা যেন আমাদেরই অক্ষমতা ও কলঙ্কের চিহ্ন। তাই কবি এই শিশুঘাতী মারণযজ্ঞের হাত থেকে মানবতায় উত্তরণের পথ খোঁজার চেষ্টা করেছেন।


3.  “আমাদের ইতিহাস নেই – কাদের, কেন ইতিহাস নেই? এই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে সভ্যতার কোন্ কলঙ্কিত ইতিহাসকে বোঝাতে চাওয়া হয়েছে?

উত্তর; আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি' কবিতায় কবি সারাপৃথিবীর খেটে-খাওয়া সাধারণ শ্রমজীবী মানুষের ইতিহাসহীনতার প্রতি দিকনির্দেশ করেছেন। আসলে এ বিশ্বের ইতিহাস লিপিবদ্ধ হয় শাসক কিংবা সাম্রাজ্যবাদীর ইচ্ছা আর পরিকল্পনায়।

তাই সেখানে উপেক্ষিত দুর্বলের বাস্তব অবস্থার যথার্থ প্রতিচ্ছবি কখনোই ফুটে ওঠে না। ক্ষমতাবানের দম্ভ আর আস্ফাল শিকড়হারা মানুষের সম্পূর্ণ বিস্মৃত দৈন্যদশাটি ‘আমাদের ইতিহাস নেই এই শব্দবন্ধের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। | বর্তমান সময়ে হিংসা ও রণরক্তে পর্যুদস্ত সাধারণ মানুষের দুরব কথা বলতে গিয়ে কবি ইতিহাসের প্রসঙ্গকে টো এনেছেন। কোনো দেশ কিংবা জাতির সমাজ, সভ্যত ও সংস্কৃতির বিবর্তনের ধারাবাহিক ভাষা বিশ্লেষণকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে মানুষের ইতিহাস। কিন্তু প্রথাগত ইতিহা { বা ক্ষমতাবানের পরিকল্পিত ইতিহাসে প্রাধান্য পায় শাসকের স্বার্থ। সেখা { বিকৃতি-বিভ্রান্তি ও মিথ্যা প্রচারে প্রকৃত ইতিহাস তার নিজস্বতা হারা

No comments:

Post a Comment