ষষ্ঠ শ্রেণী বাংলা প্রশ্ন উত্তর || পশুপাখির ভাষা প্রশ্ন উত্তর , নামকরণ , বিষয়বস্তু, || Class '6th Bangla Questions And Answers - Psycho Principal

Fresh Topics

Thursday, 1 December 2022

ষষ্ঠ শ্রেণী বাংলা প্রশ্ন উত্তর || পশুপাখির ভাষা প্রশ্ন উত্তর , নামকরণ , বিষয়বস্তু, || Class '6th Bangla Questions And Answers

 

পশুপাখির ভাষা
প্রশ্ন উত্তর



ঘাসফড়িং অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর পড়তে নিচের লিঙ্ক এ ক্লিক করো
👉 ( ঘাসফড়িং প্রশ্ন উত্তর )


◼️লেখক পরিচিতি;

সুবিনয় রায়চৌধুরী ১২৯৭ বঙ্গাব্দের (১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে) ১২ অগ্রহায়ণ কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। সুবিনয় রায়চৌধুরীর লেখা উল্লেখযোগ্য বইগুলোর মধ্যে রয়েছে— খেয়াল, রকমারি, কাড়াকাড়ি, জীবজগতের আজব কথা ইত্যাদি। সুবিনয় রায়চৌধুরী সন্দেশ পত্রিকা সম্পাদনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সাহিত্যরচনার সঙ্গে সঙ্গে খেলাধুলো আর সংগীতেও বিশেষভাবে দক্ষ ছিলেন তিনি। তিনি খুব ভালো এসরাজ এবং হারমোনিয়াম বাজাতে পারতেন । ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে তাঁর মৃত্যু হয়।


◼️নামকরণ;

আলোচ্য পাঠ্যাংশটির মূল বিষয় হল পশুপাখির ভাষা ব্যবহার, ভাষা সম্পর্কে তাদের ধারণা এবং ভাষায় তাদের সাড়া দেওয়ার ক্ষমতা। পশুপাখিরা নিজেদের মধ্যে ভাব আদানপ্রদান করার জন্য আদৌ কোনো ভাষার সাহায্য নেয় কি না, তারা মানুষের ভাষার অর্থ কীভাবে বোঝে, মানুষের সঙ্গে ব্যবহারের ক্ষেত্রে তারা কীভাবে সাড়া দেয়, কী ধরনের শব্দ করে রাগ, ভয়, ভালোবাসা ইত্যাদি প্ৰকাশ করে, এ সবই লেখক আলোচনা করেছেন। সেই সঙ্গে পশুপাখির ভাষা সম্পর্কে পশুভাষাবিদ রিউবেন ক্যাস্টাং- এর মতামত উল্লেখ করে তিনি দেখিয়েছেন যে, কোন্ ধরনের পশুর সঙ্গে কেমন আদবকায়দার মাধ্যমে ভাব পাতানো যায়। তাই এই পাঠ্যাংশটির নাম হিসেবে 'পশুপাখির ভাষা' নামটি সার্থক।


◼️সারমর্ম ;

‘পশুপাখির ভাষা’ পাঠ্যাংশটিতে লেখকের আলোচনার বিষয় হল পশুপাখির ভাষাজগৎ। ছাগল, মুরগি, হাঁস, হাতিরা কীভাবে মানুষের ডাক বুঝতে পারে, শেখালে তার মানেও ধরতে পারে তা তিনি দেখিয়েছেন। অবস্থাভেদে রাগ, ভয় বা ভালোবাসা প্রকাশ করার ভঙ্গি পশুপাখিদের ক্ষেত্রে কীভাবে বদলে যায়, তা-ও উঠে এসেছে তাঁর আলোচনায় | প্রসঙ্গত তিনি বলেছেন রিউবেন ক্যাস্টাং-এর কথা |

 প্রায় চল্লিশ বছর বন্যজন্তুদের সঙ্গে থাকায় পশুদের গলার অবিকল নকল করার ক্ষমতা জন্মেছিল রিউবেন ক্যাস্টাং-এর। এই ক্ষমতার বলে বহুবার তিনি হিংস্র পশুর আক্রমণ থেকে প্রাণে বেঁচেছিলেন। অভিজ্ঞতা থেকে তিনি আলোচনা করেছেন পোষা জন্তু আর বুনো জন্তুদের মধ্যে আচার-আচরণের তফাৎ কোথায়, কীভাবে বুনো জন্তুদের সঙ্গে ভাব পাতাতে হবে, আমিষাশী জন্তু, ও নিরামিষাশী জন্তুদের মধ্যে স্বভাবের পার্থক্য কী। সেই সঙ্গে সুবিনয় রায়চৌধুরীর আলোচনা থেকে শিম্পাঞ্জি, ওরাং, গরিলারাও বাদ পড়েনি ।


◼️নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও:


১. রিউবেন ক্যাস্টাং কোন্ কোন্ পশুর সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতিয়েছিলেন?

উত্তর: রিউবেন ক্যাস্টাং যেসব পশুর সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতিয়েছিলেন, তারা বেশিরভাগই ছিল শিম্পাঞ্জি, গরিলা, সিংহ, গ্রিলি ভালুক আর সাদা ভালুক।


২. পশুদের মধ্যে কাদের ভাষা নেই?

উত্তর: পশুদের মধ্যে শিম্পাঞ্জি, ওরাংওটাং জাতীয় বনমানুষদের বিশেষ কোনো ভাষা নেই | তা ছাড়া, বানরের মধ্যে কয়েক জাতীয় বড়ো বানর ছাড়া অন্য সকলের ভাষায় শব্দও অতি সামান্যই।


৩. কুকুর কেমন শব্দে বিভিন্ন মনের ভাব প্রকাশ করে ?

উত্তর: কুকুর রাগ বা ঝগড়ার সময়ে ‘ঘেউ’ শব্দ করে, ভয় বা কান্নার সময়ে ‘কেঁউ' শব্দ করে।


৪. বেড়াল কেমন শব্দে বিভিন্ন মনের ভাব প্রকাশ করে ?

উত্তর: : বেড়াল সাধারণভাবে ‘ম্যাও’, ‘মিউ' ইত্যাদি শব্দ করে, আবার রাগ বা ঝগড়ার ক্ষেত্রে ‘ওয়াও' শব্দ করে।


৫. কে পশুদের সঙ্গে ভাব পাতিয়ে বেড়াতেন? তিনি কতদিন তাদের সঙ্গে ছিলেন?

উত্তর: • রিউবেন ক্যাস্টাং পশুদের সঙ্গে ভাব পাতিয়ে বেড়াতেন

 তিনি প্রায় চল্লিশ বছর বন্য জন্তুদের সঙ্গ থেকেছেন।


৬. ‘পশুপাখির ভাষা' পাঠ্যাংশটিতে তোমরা কোন্ কোন্ পশু বা পাখির কথা পেলে ?

উত্তর: ‘পশুপাখির ভাষা’ পাঠ্যাংশটিতে যে যে পশু বা পাখির কথা পেলাম, তারা হল—কুকুর, বনমানুষ, ঘোড়া, মুরগি, হাঁস, ছাগল, হাতি, বেড়াল, ৰাঘ, ভালুক, গরিলা, সিংহ, শিম্পাঞ্জি, গ্রিজুলি ভালুক, সাদা ভালুক, ওরাংওটাং ইত্যাদি।


◼️ নীচের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাভিত্তিক প্রশ্নগুলির উত্তর দাও:


১. রিউবেন ক্যাস্টাং কীভাবে হিংস্র জন্তুদের হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতেন ?

উত্তর: রিউবেন ক্যাস্টাং প্রায় চল্লিশ বছর ধরে বন্য জন্তুদের সঙ্গে থেকে তাদের আক্রমণের মুখে পড়েছেন, কিন্তু প্রতিবারই সাক্ষাৎ মৃত্যুর হাত থেকেও বেঁচে গেছেন, কারণ পশুদের ভাষা সম্পর্কে তাঁর জ্ঞান ছিল। পশুদের গলার শব্দ অবিকল নকল করার ক্ষমতা থাকায় শুধু যে বহুবার তাঁর প্রাণই বেঁচেছে, তা নয়, পশুদের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতাতেও তাঁর অনেক সুবিধা হয়েছে।


২. পশুদের সঙ্গে ভাব করার উপায় প্রসঙ্গে রিউবেন ক্যাস্টাং কী নির্দেশ দিয়েছেন?

উত্তর: রিউবেন ক্যাস্টাং-এর মতে, পশুদের আওয়াজের অবিকল নকল করতে শিখলে তাদের সঙ্গে ভাব পাতাবার সুবিধা হয়। আবার, হাতি, সিংহ, বাঘ আর সাদা ভালুকের কয়েকটির গায়ে হাত দেওয়ার আগে বিশেষ করে লক্ষ করতে হবে যে, সে আওয়াজের জবাব দিচ্ছে কি না। তারপর, খুব সাবধানে, অত্যন্ত ধীরে এগিয়ে, মেজাজ বুঝে, তার গায়ে হাত দিতে হবে। বাঘের চেয়ে চিতা অনেক সহজে ভাব পাতায় আর পোষ মানে। ভালুক নিরামিষাশী আর লোভী। তাকে খাবার দিলে সে সহজেই ভাব পাতায়। কিন্তু আমিষাশী জন্তু কখনও খাবারের লোভে ভাব করে না। খাবার সময়ে সকলকেই সে অবিশ্বাস করে। আবার, শিম্পাঞ্জি, ওরাং এরা ভালোবাসা বা সহানুভূতি খুবই বোঝে এবং সহজেই ভাব পাতায় ।


◼️ নীচের প্রশ্নগুলির নিজের ভাষায় উত্তর লেখো।


১. ভাষার প্রয়োজন হয় কেন ?

উত্তর: মনের ভাব পরস্পরের কাছে প্রকাশ করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করার জন্য ভাষার প্রয়োজন হয়।


২. “পশুপাখিরা অবিশ্যি মানুষের অনেক কথারই অর্থ বোঝে।”—এ কথার সমর্থনে রচনাটিতে কোন্ কোন্ প্রসঙ্গের অবতারণা করা হয়েছে? তুমি এর সঙ্গে আর কী কী যোগ করতে চাইবে?

উত্তর: • পশুপাখিরা যে মানুষের অনেক কথারই অর্থ বোঝে, এ কথার সমর্থনে রচনাটিতে বলা হয়েছে যে, কুকুর, বনমানুষ, ঘোড়া প্রভৃতি তাদের মানুষে দেওয়া নাম শুনলেই কান খাড়া করে। নাম ধরে ডাকলে তারা কাছে আসে। মুরগিরা ‘তি-তি' ডাক শুনে, হাঁস ‘সোই-সোই” ডাক শুনে, ছাগল ‘অর্-র্' ডাক শুনে কাছে আসে। হাতি বা কুকুরও কথা শুনে হুকুম পালন করে।

• পোষা গোরুবাছুরও মানুষের ডাক শুনলে মুখ তুলে, কান খাড়া করে সেই ডাক শোনে, সাড়া দেয়, নাম ধরে ডাকলে কাছেও আসে।


৩. রিউবেন ক্যাস্টাং-এর অভিজ্ঞতার কথা পাঠ্যাংশে কীভাবে স্থান পেয়েছে, তা আলোচনা করো।

উত্তর: রিউবেন ক্যাস্টাং ছিলেন পশুভাষাবিদ। তিনি দীর্ঘকাল বুনো পশুদের সঙ্গে ভাব পাতিয়ে বেড়িয়েছিলেন। পশুদের ভাষা তাঁর কিছু কিছু জানা ছিল বলেই বাঘ, ভালুক বা হাতির সামনে পড়েও বহুবার তিনি প্রাণে বেঁচেছিলেন। তাঁর মতে, সিংহের কাছে যদি তারই ভাষায় বন্ধুত্ব প্রকাশ করা যায়, তার আদবকায়দা অনুযায়ী যদি তার কাছে যাওয়া যায়, তবে ভয়ের কারণ থাকে না। তিনি শিম্পাঞ্জি, গরিলা, সিংহ, গ্রিজলি ভালুক, সাদা ভালুক ইত্যাদির সঙ্গে প্রায় চল্লিশ বছর কাটিয়েছেন। 

তিনি বলেছেন, এদের গলার আওয়াজ অবিকল নকল করার ক্ষমতা থাকায় শুধু প্রাণ বাঁচানোই নয়, তিনি এমনকি বন্যপশুদের সঙ্গে বন্ধুত্বও পাতাতে পেরেছেন। পশুরা শুধু শব্দ নয়, নানান ইশারাতেও কথা বলে। তিনি পশুদের স্বভাব ও চরিত্র নিয়েও আলোচনা করেছেন। বলেছেন, পোষা জন্তুরা জঙ্গলের জন্তুদের থেকে অনেক বেশি চেঁচামেচি করে। কিন্তু জঙ্গলের পশুদের চুপিসাড়ে শিকার করতে হয়, প্রাণ বাঁচিয়েও চলতে হয়। 

তাই তারা অনেক বেশি চুপচাপ। বলেছেন, পশুদের মধ্যে শিম্পাঞ্জি, ওরাংওটাং জাতীয় বনমানুষের বিশেষ ভাষা নেই। কয়েক জাতীয় বড়ো বানর ছাড়া বাকি বানরদেরও ভাষা খুব অল্প। তিনি বুঝিয়েছেন কীভাবে পশুদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করা যায়। ভালুক নিরামিষাশী ও লোভী। খাবার দিয়ে সহজেই তার সঙ্গে ভাব করা যায়, কিন্তু আমিষাশী জন্তু কখনোই খাবারের লোভে ভাব পাতায় না। কারণ, খাওয়ার সময় সকলকেই সে অবিশ্বাস করে, কারও সঙ্গেই ভাব করে না। তবে, শিম্পাঞ্জি, ওরাংওটাং ইত্যাদির বিষয়ে রিউবেন ক্যাস্টাং বিশেষ কিছুই বলেননি।


৪. “একেও ভাষা বলতে হবে।”—কাকে 'ভাষা'-র মর্যাদা দিতে হবে বলে বক্তা মনে করেন? তুমি কি এই বক্তব্যের সঙ্গে সহমত? বুঝিয়ে লেখো । 

উত্তর: • পশুরা যে সবসময় শুধু মুখে আওয়াজ করে মনের ভাব প্রকাশ করে, তা নয়। তারা নানান ইশারাতেও কথা বলে। বক্তার মতে, পশুদের এই ইশারাকেও ভাষার মর্যাদাই দিতে হবে।

আমি এই বক্তব্যের সঙ্গে সহমত। কারণ, চারপেয়ে প্রাণীদের লেজ নাড়া বা কান নাড়া দেখেও অনেক কিছুই বোঝা যায়। যেমন, কুকুর তার আনুগত্য ও ভালোবাসা বোঝাতে বা আনন্দ প্রকাশ করতে লেজ নাড়ে। আদর খাওয়ার সময় কানটা প্রায় নুইয়ে ফেলে। বেড়াল রেগে গেলে তার লোম ফুলিয়ে রাগ প্রকাশ করে। কেন্নো ভয় পেলে গোল হয়ে গুটিয়ে যায়। তাই প্রাণীদের ভাবভঙ্গি न দেখেও তাদের অনেক কথাই টের পাওয়া যায়। তাই একে ভাষা বলাই উচিত।


৫. “তাই তারা স্বভাবতই নীরব”—কাদের কথা বলা হয়েছে? তাদের এই স্বভাবগত 'নীরবতা'-র কারণ কী? 

উত্তর: • উদ্ধৃত অংশটিতে জঙ্গলের পশুদের কথা বলা হয়েছে।

• জঙ্গলের পশুদের যেমন শিকার ধরে খেতে হয়, ক তেমনই অন্য পশুর শিকার হওয়া থেকে বাঁচতে তাদের ধু সতর্ক হয়েও চলতে হয়। তাই তারা পোষা জন্তুদের মতো ব অত চেঁচামেচি করে না। তাই তারা স্বভাবতই নীরব।


৬. “এরা তো মানুষেরই জাতভাই।”—কাদের ‘মানুষের জাতভাই' বলা হয়েছে? তা সত্ত্বেও মানুষের সঙ্গে তাদের কোন্ পার্থক্যের কথা পাঠ্যাংশে বলা হয়েছে, তা লেখো ।

উত্তর: • শিম্পাঞ্জি, ওরাংওটাং—এদেরকে ‘মানুষের জাতভাই' বলা হয়েছে।

• এদের সঙ্গে মানুষের যে প্রধান পার্থক্যের কথা পাঠ্যাংশে বলা হয়েছে, তা হল, মানুষের ভাষা আছে, কিন্তু এদের ভাষা নেই ।


৭. তোমার পরিবেশে থাকা জীবজন্তুর ডাক নিয়ে তুমি একটি অনুচ্ছেদ রচনা করো ।

উত্তর: আমার বাড়ির চারপাশে প্রচুর কুকুর আর বেড়াল রয়েছে। আমি ওদেরকে রোজ খেতে দিই। মাছভাত খাওয়ার সময়ে বেড়ালগুলো মিউ মিউ করে ডাকে আর পায়ের কাছে ঘুরঘুর করে। আবার রাতের বেলায় অচেনা কেউ পাড়ায় এলে কুকুরগুলোর ঘেউ ঘেউ চিৎকারে সকলের ঘুম ভেঙে যায়। বাজারের দিকে মাঝেমধ্যে দু- একটা গোরু দেখা যায় 

 তারা ফেলে দেওয়া কুমড়ো, শাক, ডাঁটা খেতে আসে আর ডাক ছাড়ে হাম্বা হাম্বা করে। এ অঞ্চলে ছাগল সাধারণত খুব একটা দেখা যায় না। তবে, বাজারে মাংসের দোকানে দেখেছি বেঁধে রাখা ছাগলগুলো ম্যা-অ্যা-অ্যা চিৎকার করে। এ ছাড়া রোজ সকালে পাখির কিচিরমিচির শব্দ তো আছেই 



No comments:

Post a Comment