অষ্টম শ্রেণী ভূগোল দ্বিতীয় অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর || অস্থিত পৃথিবী সহায়িকা || Class 8th geography questions and answers chapter -2 - Psycho Principal

Fresh Topics

Tuesday, 28 June 2022

অষ্টম শ্রেণী ভূগোল দ্বিতীয় অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর || অস্থিত পৃথিবী সহায়িকা || Class 8th geography questions and answers chapter -2

 

দ্বিতীয় অধ্যায় 
অস্থিত পৃথিবী






অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর : 

1. ' প্লেট ' শব্দটি কোন্ বিজ্ঞানী প্রয়োগ করেন ? 

উঃ । 1965 সালে কানাডার ভূপদার্থবিদ J. T. Wilson ' প্লেট ' শব্দটি প্রয়োগ করেন । 


2. মহীসম্বরণ তত্ত্বের প্রবক্তা কে ? 

উঃ । আলফ্রেড ওয়েগনার । 


3. পাত সংস্থানের ব্যাখ্যা করেন কোন বিজ্ঞানী ? 

উঃ । 1968 সালে বিজ্ঞানী W. J. Morgan পাত সংস্থানের ব্যাখ্যা দেন ।


4. পৃথিবীর গভীরতম সমুদ্রখাতের নাম কী ? এটি কোন সাগরে অবস্থিত ?

 উঃ । পৃথিবীর গভীরতম সমুদ্রখাতের নাম হল ' মারিয়ানা খাত ' । এটি প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত ।


 5. হিমালয় পর্বতমালা , আল্পস পর্বতমালার সৃষ্টি হয়েছে কীভাবে ? 

উঃ । ইউরেশীয় ও ভারতীয় পাতের সংঘর্ষে হিমালয় পর্বতমালা আর আফ্রিকা ও ইউরেশীয় পাতের সংঘর্ষে আল্পস পর্বতমালার সৃষ্টি হয়েছে । 


6. পৃথিবীর প্রধান প্রধান ভঙ্গিল পর্বতমালাগুলির নাম লেখো । 

উঃ । পৃথিবীর অধিকাংশ ভঙ্গিল পর্বত মহাদেশীয় পাতের সংঘর্ষের ফলে সৃষ্টি হয়েছে । এগুলি হল অ্যাপালেশিয়ান , ইউরাল , আন্দিজ , আরাবল্লী প্রভৃতি । 


7. কত বছর আগে অগ্ন্যুৎপাতের সৃষ্টি হয়েছে ? 

উঃ । সৃষ্টির সময় থেকে কোটি কোটি বছর ধরে পৃথিবীতে অগ্ন্যুৎপাতের সৃষ্টি হয়ে চলেছে । 


৪. বিদার অগ্ন্যুৎপাতের ফলে ভারতে কোন্ মালভূমির সৃষ্টি হয়েছে ? 

উঃ । দাক্ষিণাত্যের মালভূমি । 


9. ভূপৃষ্ঠের প্রভাব বিস্তারকারী পদ্ধতিকে কয়ভাগে ভাগ করা হয়েছে ও কী কী ?

 উঃ । ভূপৃষ্ঠের প্রভাব বিস্তারকারী পদ্ধতিকে দুভাগে ভাগ করা হয়েছে । ( 1 ) ভূঅন্তঃস্থ শক্তি ও ( 2 ) ভূবহিস্য শক্তি । 


10. লাভা কাকে বলা হয় ? 

উঃ । ভূঅভ্যন্তরের গলিত , সাম্র পদার্থকে ‘ ম্যাগমা ’ আর ম্যাগমা ভূপৃষ্ঠের বাইরে নির্গত হলে তাকে লাভা বলা হয় । 


11. সৌরজগতে সর্বোচ্চ আগ্নেয়গিরির নাম কী ? 

উঃ । সৌরজগতের সর্বোচ্চ আগ্নেয়গিরি হল মঙ্গলগ্রহের অলিম্পাস মনস্।


 12. পৃথিবীতে কত শতাংশ জীবন্ত আগ্নেয়গিরি রয়েছে ।

 উঃ । পৃথিবীতে 15 % জীবন্ত আগ্নেয়গিরি রয়েছে । 


13. ভূমিকম্প কাকে বলে ? 

উঃ । প্রতি মুহূর্তে পৃথিবী কোথাও না কোথাও কম্পিত হচ্ছে । পৃথিবীর স্থিতিস্থাপক অভ্যন্তরে কোনোকিছু সজ্জিত থাকে , ফলে ভূত্বক কেঁপে ওঠে , একে ভূমিকম্প বলে ।


 14. ভূকম্পন তরঙ্গ কাকে বলে ? 

উঃ । ভূমিকম্পের ফলে উদ্ভূত শক্তি কেন্দ্র , উপকেন্দ্র থেকে পৃথিবীর অন্যান্য স্থানে তরঙ্গের মতো ছড়িয়ে পড়ে । এই তরঙ্গগুলোকে বলা হয় ভূকম্পন তরঙ্গ । 

  

তৃতীয় অধ্যায় শিলা প্রশ্ন উত্তর পড়তে ক্লিক করো
👉  ( তৃতীয় অধ্যায় শিলা প্রশ্ন উত্তর)


15. একটি শঙ্কু আকৃতির আগ্নেয়গিরির নাম লেখো । 

উঃ । মাউন্ট পিলি । 


16. ভূত্বকের গভীরে Hot Spot কীভাবে তৈরি হয় ? 

উঃ । ভূত্বকের গভীরে তেজস্ক্রিয়তাজনিত উত্তাপ বৃদ্ধির ফলে Hot Spot তৈরি হয় । 


17. কত সালে চিলি ভূমিকম্প ঘটে ? রিখটার স্কেলের মাত্রা এতে কত ছিল ?

 উঃ । 1960 সালে চিলি ভূমিকম্প ঘটে । এতে রিখটার স্কেলের মাত্রা ছিল 8.51 


18. ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি ও তীব্রতার মাত্রা কীসে পরিমাপ করা হয় ? এই স্কেলের মান কত ? 

উঃ । ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি ও তীব্রতার মাত্রা পরিমাপ করা হয় রিখটার স্কেলে । এই স্কেলের মান 0-101 


19. পৃথিবীর 20 শতাংশ ভূমিকম্প কোথায় ঘটে ? 

উঃ । মেক্সিকো থেকে শুরু করে আটলান্টিক মহাসাগর , ভূমধ্যসাগর , আপ্পস , হিমালয় হয়ে বিস্তৃত মধ্য পৃথিবীর পার্বত্য বলয় - এ পৃথিবীর 20 শতাংশ ভূমিকম্প ঘটে । 


20. ভূবিদ্যা কী ? 

উঃ । পৃথিবীতে উৎপত্তির ইতিহাস , উপাদান , গঠন পদ্ধতি ইত্যাদি সংক্রান্ত বিজ্ঞান হল ভূবিদ্যা । 


21. ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র কাকে বলে ? 

উঃ । কেন্দ্র থেকে ঠিক উল্লম্ব দিকে ভূপৃষ্ঠের যে বিন্দুতে প্রথম কম্পন পৌছায় সেটা হল ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র ।


22 ভূমিকম্পের পূর্বাভাস কি দেওয়া যায় ? 

উঃ।মা। ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া যায় না । 


23. অগ্ন্যুদগম কি একটি ভূ - গাঠনিক প্রক্রিয়া ? কেন ? 

উঃ । হ্যাঁ , অগ্ন্যুদগম একটি ভূ - গাঠনিক প্রক্রিয়া । কারণ অগ্ন্যুৎপাতের ফলে বেশ কিছু ভূমিরূপের সৃষ্টি হয় ।


 24. কবে ও কোন্ শহর ভিসুভিয়াস - এর অগ্ন্যুৎপাতে ধ্বংস হয়ে যায় ? 

উ: 1979 খ্রিস্টাব্দে ভিসুভিয়াস - এর অগ্ন্যুৎপাতে প্রাচীন রোম - এর পম্পেই শহর ধ্বংস হয়ে যায় । 


25. অপসারী পাতসীমানা কাকে বলে ? 

উঃ । যেখানে পাতগুলো পরস্পর থেকে ক্রমশ দূরে সরে যেতে থাকে তাকে অপসারী পাতসীমানা বলে । 


26. সাগর ও মহাসাগর তৈরি হয়েছে কীভাবে ? 

উঃ । সৃষ্টির আদিলগ্নে আগ্নেয়গিরি নির্গত জলীয় বাষ্প থেকেই ঘনীভবনের মাধ্যমে সাগর মহাসাগর তৈরি হয়েছে । 


27. নিরপেক্ষ পাতসীমানা কাকে বলে ? 

উঃ । কিছুক্ষেত্রে দুটি পাত পরস্পর ঘর্ষণ করে পাশাপাশি অগ্রসর হয় । ফলে ভূমিকম্প চ্যুতি প্রভৃতি সৃষ্টি হয় । এই সীমান্তে পাতের ধ্বংস বা সৃষ্টি , কিছুই হয় না । একে নিরপেক্ষ পাতসীমানা বলে ।


 28. প্রাচীন ভঙ্গিল পর্বত কাকে বলে ? 

উঃ । 3-4 কোটি বছর আগে সৃষ্ট পর্বতগুলোকে প্রাচীন ভঙ্গিল পর্বত বলে । 


29. অভিসারী পাতসীমানা কাকে বলে ? 

উঃ । যেখানে পাতগুলো পরস্পরের দিকে এগোতে থাকে তাকে অভিসারী পাতসীমানা বলে । 


30. পৃথিবীর উপগ্রহ চাঁদ - এর গঠনে কার বিশেষ ভূমিকা আছে ? 

উঃ । পৃথিবীর উপগ্রহ চাঁদ - এর গঠনে অগ্ন্যুৎপাতের বিশেষ ভূমিকা আছে । 


31. পৃথিবী ছাড়াও সৌরজগতের আর কোথায় অগ্ন্যুৎপাত হয় ?

 উঃ । পৃথিবী ছাড়াও সৌরজগতের অনান্য গ্রহ মঙ্গল , শুক্র , বৃহস্পতি ও উপগ্রহেও অগ্ন্যুৎপাত হয় ।


 32. পৃথিবী বিখ্যাত গাইজার কোন্‌টি ? 

উঃ । আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ইয়ালোস্টোন ন্যাশনাল পার্কের ' Old faithful geyser ' ( প্রতি 45 মিনিট অন্তর উৎক্ষিপ্ত হয় ) পৃথিবী বিখ্যাত ।


 সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর : 

1. গঠনকারী পাতসীমানা কাকে বলা হয় ?

 উঃ । দুটি মহাসাগরীয় পাত ক্রমশ পরস্পরের থেকে দূরে সরে গেলে , মাঝের ফাটল বরাবর ভূঅভ্যন্তর থেকে উত্তপ্ত গলিত পদার্থ উঠে আসে এবং শীতল ও কঠিন হয়ে নতুন মহাসাগরীয় ত্বক আর মধ্যসামুদ্রিক শৈলশিরা তৈরি হয় । একারণে এই ধরনের অপসারী পাতসীমানাকে ‘ গঠনকারী পাতসীমানা ' বলা হয় ।


 2. ' মরিয়ানা খাত ' কী ? 

উঃ । মহাসাগরীয় ও মহাদেশীয় পাত - এর পরস্পর অভিমুখী চলনের ফলে , ভারী মহাসাগরীয় পাত , মহাদেশীয় পাতএর নীচে নিমজ্জিত হয় । এর ফলে গভীর সামুদ্রিক খাতের সৃষ্টি হয় । প্রশান্ত মহাসাগরের ‘ মারিয়ানা খাত ’ এরকমই একটি গভীরতম সমুদ্রখাত । 


3. বিনাশকারী পাতসীমানা কাকে বলা হয় ? 

উঃ । নিমজ্জিত পাত - এর কিছু অংশ অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারে প্রবেশ করে গলতে শুরু করে । এই গলিত পদার্থ দুটি পাতের সীমানা বরাবর ভূত্বকের বাইরে বেরিয়ে আসে । এই কারণে নিমজ্জিত পাতসীমানার একাধিক আগ্নেয়গিরি এবং আগ্নেয়দ্বীপ সৃষ্টি হয় ।

 ভূত্বকের এই অংশ অস্থিত থাকায় প্রায়শই ভূ - আলোড়ন ও ভূমিকম্প হয় । এই ধরনের পাতসীমানাকে ‘ বিনাশকারী পাতসীমানা ” 


4. সাত বা আঘের পর্বত কী ? 

উঃ । অভ্যুদয়ের সময়ে উৎক্ষিপ্ত পদার্থ ফাটল বা গহ্বরের চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে । এইভাবে বার বার অগ্ন্যুৎপাতের সময়ে আগ্নেয় পদার্থ ফাটলের চারিদিকে জমা হয়ে শঙ্কু আবৃত্তির পর্বতের আকার ধারণ করে । সায়কার্যের ফলে তৈরি হয় বলে একে বা আগের পর্বত বলা হয় । 


5. ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয় কীভাবে ?

 উঃ । পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি পাতসীমানা অত্যন্ত ভূমিকম্পপ্রবণ আর এজন্যই আগ্নেয়গিরি এবং ভূমিকম্প কেন্দ্রগুলো প্রায়শই একই জায়গায় অবস্থিত হয় । তবে ভূ - আলোড়ন , পাতসঞ্চরণ , অগ্ন্যুৎপাতের মতো প্রাকৃতিক কারণ ছাড়াও ভূগর্ভে গহ্বর , খনি , সুড়ঙ্খা খনন , জলাধার নির্মাণ , ধ্বংস , বোমা বিস্ফোরণ ইত্যাদি কারণেও ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয় । 


6. ভূমিকম্প বলয়ের প্রধান আগ্নেয়গিরিগুলোর নাম লেখো । 

উঃ । ভূমিকম্প বলয়ের প্রধান আগ্নেয়গিরিগুলো হল — ফুজিয়ামা , পিনাটুবো , ক্লাকাতোয়া , সেন্ট হোলেনস্ , পোপোক্যাটিপেটল , কোটোপ্যাক্সি প্রভৃতি । 


7. পৃথিবীপৃষ্ঠ কতগুলি পাত্তের সমন্বয়ে গঠিত ? তাদের নাম লেখো । 

উঃ । পৃথিবীপৃষ্ঠ 6 টি বড়ো পাত এবং 20 টি ছোটো পাতের সমন্বয়ে গঠিত । বড়ো পাগুলি হল প্রশান্ত মহাসাগরীয় পাত , ইউরেশীয় পাত , আমেরিকান পাত , আফ্রিকান পাত , ভারত - অস্ট্রেলীয় পাত এবং আস্টার্কটিক পাত । 


8. মধ্য সামুদ্রিক শৈলশিরা কীভাবে তৈরি হয় ? 

উঃ । দুটি মহাসাগরীয় পাত ক্রমশ পরস্পরের থেকে দূরে সরে গেলে , মাঝের ফাটল বরাবর ভূঅভ্যন্তর থেকে উত্তপ্ত গলিত পদার্থ ( ম্যাগমা ) উঠে আসে এবং শীতল ও কঠিন হয়ে নতুন মহাসাগরীয় ত্বক ও মধ্য সামুদ্রিক শৈলশিরা তৈরি হয় । 


9. আটলান্টিক মহাসাগরের উৎপত্তি হয়েছে কীভাবে ? 

উঃ । মধ্য আটলান্টিক শৈলশিরা বরাবর আফ্রিকান এবং আমেরিকান পাত পরস্পরের থেকে দূরে সরে গিয়ে মধ্যবর্তী অঞ্চলে আটলান্টিক মহাসাগরের উৎপত্তি হয়েছে । 


10. ভূতাত্ত্বিক কাল কাকে বলে ? 

উঃ । পৃথিবী সৃষ্টির সময় থেকে শুরু করে বর্তমান কাল পর্যন্ত পরিসরকে ভূতাত্ত্বিক কাল বলে । এই কাল বিভিন্ন যুগে বিভক্ত । যেমন — আর্কিয়ান যুগ , প্যালিওজাইক যুগ প্রভৃতি । 


11. অগ্ন্যুৎপাতকে ভূ - গাঠনিক প্রক্রিয়া বলা হয় কেন ? 

উঃ । অগ্ন্যুৎপাতের ফলে ভূপৃষ্ঠে লাভা সঞ্চয় হয় ফলে লাভা মালভূমি , সমভূমি , আগ্নেয়গিরি এমনকি ভূত্বকের শিলাস্তরের মধ্যে ম্যাগমা সঙ্কিত হয়ে ডাইক , সিল প্রভৃতি ভূমিরূপ তৈরি হয় । তাই অগ্ন্যুৎপাতকে এক ধরনের ভূ - গাঠনিক প্রক্রিয়া বলা যায় ।


 12. মহীসঞ্ঝরন তত্ত্ব থেকে কী জানা যায় ? 

উঃ । অ্যালফ্রেড ওয়েগনারের মহীসঞরণ তত্ত্ব থেকে জানা যায় 2300 লক্ষ বছর আগে পৃথিবীর সমস্ত স্থলভাগ একটা বিশাল ভূখণ্ডরূপে অবস্থান করত । পরবর্তীকালে প্যানজিয়া ভেঙে গিয়ে বিভিন্ন দিকে সঞ্চারিত হয় । অর্থাৎ মহাদেশীয় ভূত্বক বিচ্ছিন্নভাবে মহাসাগরীয় ভূত্বকের ওপর ভাসতে ভাসতে বিভিন্ন দিকে অগ্রসর হয় । 


13. অগ্ন্যুদগম কাকে বলে ? 

উঃ । ভূঅভ্যস্তরের গলিত , সান্ত্র ম্যাগয়া , গ্যাস , জলীয়বাষ্প কোনো ফাটল বা গহ্বরের মধ্যে দিয়ে যে প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে বিস্ফোরনসহ প্রচন্ড জোরে অথবা ধীর শাস্তভাবে ভূপৃষ্ঠে বেরিয়ে আসে তাকে অগ্ন্যুদগম বলে ।


14. সক্রিয় আগ্নেয়গিরি কাকে বলে ? 

ঊঃ । যে আগ্নেয়গিরি সৃষ্টি হওয়ার পর থেকেই অবিরামভাবে বা প্রায়শই অগ্ন্যুৎপাত ঘটিয়ে চলেছে তাদের সক্রিয় আগ্নেয়গিরি বলে । যেমন — সিসিলির স্ট্রম্বলি , এটনা , হাওয়াই দ্বীপের মৌনালোয়া , ভারতের ব্যারেন প্রভৃতি । 


15. মৃত আগ্নেয়গিরি কাকে বলে ? 

উঃ । যে আগ্নেয়গিরিগুলি অতীতে তীব্র বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে । কিন্তু ভবিষ্যতে অগ্ন্যুৎপাতের সম্ভাবনা কম তাদের মৃত আগ্নেয়গিরি বলে । যেমন — মেক্সিকোর পারকুটিন । 


16. সুপ্ত আগ্নেয়গিরি কাকে বলে ? 

উঃ । যে সব আগ্নেয়গিরি একবার অগ্ন্যুৎপাতের পর দীর্ঘকাল নিষ্ক্রিয় থাকে তাদের সুপ্ত আগ্নেয়গিরি বলে । যেমন — জাপানের ফুজিয়ামা , ইতালির ভিসুভিয়াস , ইন্দোনেশিয়ার ক্রাকাতোয়া । এই ধরনের আগ্নেয়গিরিগুলি অত্যন্ত বিপজ্জনক । যেকোনো সময় এরা জেগে উঠতে পারে । 


17. কোন্ লাভা এবং কেন শঙ্কু আকৃতির আগ্নেয়গিরি গঠন করে ?

 উঃ । আম্লিক লাভায় সিলিকার পরিমান বেশি থাকে । এই লাভা বেশি সাম্র তাই বেশি দূর প্রবাহিত হতে পারেনা । এ জাতীয় লাভা খাড়া ঢালবিশিষ্ট শত্রু আকৃতির আগ্নেয়গিরি তৈরি করে । যেমন — মাউন্ট পিলি । 


18. ক্ষারকীয় লাভা কেন মৃদুচাল বিশিষ্ট শিল্ড এর মতো বিশাল আগ্নেয়গিরি তৈরি করে ?

 উঃ । ক্ষারকীয় লাভায় সিলিকার পরিমাণ কম , এটি কম সান্দ্র , তাই এগুলি বহুদূর পর্যন্ত প্রবাহিত হয়ে মৃদুঢাল বিশিষ্ট শিল্ড এর মতো বিশাল আগ্নেয়গিরি তৈরি করে । যেমন - মৌনালোয়া । 


19. ভূমিকম্প কখন ধ্বংসাত্মক হয় ? একটি উদাহরণ দাও । 

উঃ । ভূমিকম্পের কেন্দ্র , উপকেন্দ্রের যত বেশি কাছে থাকে , ভূমিকম্প তত ধ্বংসাত্মক হয় । 1995 সালে জাপানের কোবে যে বিধ্বংসী ভূমিকম্প হয়েছিল তার কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে মাত্র 15 কিমি গভীরে ।


 20. 2004 সালের সুনামির বিবরণ দাও । 

উঃ । -26 ডিসেম্বর 2004 সালে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপ এর কাছে ভারত মহাসাগরের নীচে 8.9 মাত্রায় ভূমিকম্প ও ভয়ংকর জলোচ্ছ্বাস বা সুনামি হয় । এর ফলে ভারতসহ দক্ষিণ - পূর্ব এশিয়ার 11 টি দেশে বহু ক্ষয়ক্ষতি ও 3,00,000 মানুষের প্রাণহানি হয় ।


 21. কাকাতোয়া ও মাউন্ট পিনটোবুর বিস্ফোরণের ফলে কী ঘটেছিল ? 

উঃ । 1883 সালে ব্রাকাতোয়া ও 1991 সালে মাউন্ট পিনটোবুর বিস্ফোরণে গ্যাসভস্ম ধোঁয়ার বিরাট মেঘ সারা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ছড়িয়ে পড়ে । ফলে সূর্যের আলো ও উত্তাপ পৃথিবীতে পৌঁছাতে বাধা পায় । এর ফলে বেশ কয়েক বছর ধরে পৃথিবীর তাপমাত্রা হ্রাস পায় এবং পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে প্রায় একবছর ধরে রঙিন সূর্যাস্ত দেখা যায় । 


22. আমাদের দেশের কোন্ অঞ্চল কতটা ভূমিকম্পপ্রবণ ? 

উঃ । ভারতের তিনভাগের দুভাগ অঞ্চলই ভূমিকম্পপ্রবণ । ভূমিকম্প প্রবণতার ভিত্তিতে ভারতকে পাঁচটি অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে । ভারতের ভূমিকম্প বলয়টি প্রধানত হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল এবং গঙ্গা - ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় বিস্তৃত । তবে গত পঞ্চাশ বছরে দাক্ষিণাত্য মালভূমিতেও ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটেছে ।


23. কাকে এবং কেন ' প্রশান্ত মহাসাগরীয় অগ্নিবলয় ' বলা হয় ?

 উঃ । পৃথিবীর অধিকাংশ জীবন্ত আগ্নেয়গিরি প্রশান্ত মহাসাগরকে মালার মতো ঘিরে রেখেছে । এজন্য প্রশান্ত মহাসাগরের দুনিকের উপকূলের আগ্নেয়গিরি বলয়কে ‘ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অগ্নিবলয় ' বলা হয় । পৃথিবীর 70 শতাংশ ভূমিকম্প এই বলয়ে হয়ে থাকে । 


24. প্রাকৃতিক বিপর্যয় কীভাবে মানুষের জীবনের বিনাশ ঘটায় ? 

উঃ । অগ্ন্যুৎগম এবং ভূমিকম্প দুটোই ভূঅভ্যন্তরীন শক্তির আকস্মিক বহিঃপ্রকাশ । এর ফলে একদিকে যেমন পৃথিবীর ভূপ্রকৃতি , জলবায়ুর বড়ো পরিবর্তন হতে পারে তেমন জীবন , সম্পত্তি ধ্বংস হয়ে বিপর্যয় ঘটতে পারে । 


25. আকস্মিক ভূমিকম্পে মানুষের কীভাবে ক্ষয়ক্ষতি হয় ?

 উঃ । অন্যান্য প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মতো ভূমিকম্পের আগাম সতর্কবার্তা দিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান কমানোর সুযোগ থাকে না । তাই আকস্মিক ভূমিকম্পে ঘরবাড়ি ভেঙে , চাপা পড়ে প্রচুর প্রাণহানি হয় । বড়ো বড়ো ধস , ফাটল তৈরি হয়ে পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা নষ্ট হয়ে যায় । ভূমিকম্প পরবর্তী অগ্নিকাণ্ডে জলপ্লাবনে প্রচুর জীবন ও সম্পানি হয় ।


 26. ভারতের কিছু বিধ্বংসী ভূমিকম্পের উদাহরণ দাও । 

উঃ । 1991 উত্তরকাশী ( উত্তরাখণ্ড ) । 1999 চামোলী ( উত্তরাখণ্ড ) । 1993 লাটুর ( মহারাষ্ট্র ) । 2001 ভূজ ( গুজরাট ) । 1997 জব্বলপুর ( মধ্যপ্রদেশ ) , 2005 জম্মু ও কাশ্মীর । 


27. ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কী কী পরিকল্পনা নেওয়া যেতে পারে ? 

উঃ । ভূকম্প প্রতিরোধ নির্মাণ , আপদকালীন প্রস্তুতি , বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা অনেক সময় আমাদের নিজস্ব পর্যবেক্ষণ , পরিবেশের আকস্মিক পরিবর্তন , জীবজন্তুদের অস্বাভাবিক আচরণ ভূমিকম্প সম্পর্কে আগাম বার্তা দিতে পারে । 


28. ' aa ' ( আ আ ' ) কী ? 

উঃ । ইন্দোনেশিয়ার আগ্নেয়গিরি থেকে গাঢ় সান্দ্র এক প্রকারের লাভা নির্গত হয় , হাওয়াই দ্বীপের ভাষায় একে ‘ আ ' লাভা বলা হয় । এই লাভা দ্রুত খুব বেশি দূর প্রবাহিত হয় না । 


29. ' pa hoe hoe ' ( ' পা হো হো ' ) কী ?

 উঃ । হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের আগ্নেয়গিরিগুলো থেকে অত্যন্ত পাতলা লাভা বেরিয়ে বহুদুর প্রবাহিত হয় । এই লাভাপ্রবাহের উপরের স্তর দ্রুত ঠান্ডা হয়ে কুঁচকে গিয়ে পাকানো দাড়ির মতো দেখতে হয় । হাওয়াই দ্বীপের ভাষায়ই একে বলা হয় ' পা হো হো ' ।


 রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর : 

1. পাত কাকে বলে ? পাতসংস্থান তত্ত্বটি আলোচনা করো । 

উঃ । সিয়াল ও সিমা সহ পৃথিবীর মহাদেশ ও মহাসাগরীয় তলে অবস্থিত কতকগুলি কঠিন ও অনমনীয় খণ্ডকে পাত বলে । এই খণ্ডগুলি গুরুমন্ডলের ওপর ভাসমান ও চলনশীল অবস্থায় থাকে । আলফ্রেড ওয়েগনারের ‘ মহীসঞ্চরণ তত্ত্ব ’ - এর ওপর ভিত্তি করে 1960 এর দশকে পাত সংস্থান তত্ত্ব - এর মাধ্যমে ভূ বিদ্যায় এক যুগান্তকারী আবিষ্কার ঘটে । পিঁচো , উইলসন , ম্যাকেনজি , পার্কার , মর্গান প্রমুখ ভূবিজ্ঞানীগণ এই সম্পর্কে গবেষণা করেন । এই তত্ত্বটি ( I ) মহাদেশসমূহের সঞ্চরণ ও ( ii ) সমুদ্রতলের সম্প্রসারণ এই দুটি মতবাদের পর নির্ভর করে গড়ে উঠেছে । 

এই মতবাদের মূল বিষয়বস্তু হল শিলামন্ডলের উপরিভাগ বা ভূত্বক যা কয়েকটি পাত বা প্লেটের সমন্বয়ে গঠিত । এই পাতগুলি গুরুমণ্ডলের উপরিভাগে অ্যাস্থোনেস্ফিয়ারের ওপর ভাসমান অবস্থায় থাকে । 

ভূগর্ভস্থ ম্যাগমার প্রচন্ড চাপ ও তাপের ফলে পরিচলন স্রোতের সৃষ্টি হয় । যার প্রভাবে পাতগুলি চলমান হয় । পাত ভূগাঠনিক তত্ত্বানুসারে পৃথিবীর সমগ্র শিলামন্ডল চটি বৃহৎ পাত এবং 4 টি মাঝারি পাত ও 20 টির অধিক ছোটো পাতে বিভক্ত । পাতগুলি গতিশীল হওয়ার ফলে ভূপৃষ্ঠে বিভিন্ন অবস্থার সৃষ্টি হয় ।

 ( i ) দুটি পাত পরস্পরের থেকে সরে গেলে সেখানে ভূমিকম্প ও পরে অগ্ন্যুৎপাত ঘটে । ( II ) বিপরীতগামী দুটি সামুদ্রিক পাত সরে গেলে সমুদ্রের আয়তন বৃদ্ধি পায় । ( III ) সামুদ্রিক পাত ও মহাদেশীয় পাতের মুখোমুখি সংঘর্ষের ফলে পূর্বত বা দ্বীপপুঞ্জের উৎপত্তি ঘটে । ( iv ) দুটি মহাদেশীয় পাতের মুখোমুখি সংঘর্ষের ফলে তাদের মাঝখানে অবস্থিত সাগর ও উপসাগরের পাললিক শিলান্তর ভাঁজ হয়ে ভঙ্গিল পর্বতের সৃষ্টি হয় । 


2. ভূকম্পন তরঙ্গগুলো ভূপৃষ্ঠে কীভাবে প্রভাবিত হয় ? 

উঃ । ভূকম্পন তরঙ্গগুলো হল প্রাথমিক তরঙ্গ , দ্বিতীয় পর্যায়ের তরঙ্গ , লাভ তরঙ্গ , পৃষ্ঠ তরঙ্গ ও র‍্যালে তরঙ্গ । প্রাথমিক তর : এই তরঙ্গ সব থেকে দ্রুত ( 6 কিমি / সে ) প্রথম ভূপৃষ্ঠে এসে পৌঁছায় । কঠিন , তরল , গ্যাসীয় পদার্থের মধ্য দিয়ে ক্রমসংকোচন ও প্রসারণের মাধ্যমে এই তরঙ্গ প্রবাহিত হয় । দ্বিতীয় পর্যায়ের তরঙ্গ : প্রাথমিক তরঙ্গের পরে এই তরঙ্গ ভূপৃষ্ঠে পৌঁছোয় । বস্তুকণার ওপর নীচে ওঠানামার মাধ্যমে প্রবাহিত এই তরঙ্গ শুধুমাত্র তরল ও গ্যাসীয় পদার্থের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে । ভূকম্পের উপকেন্দ্র থেকে ভূপৃষ্ঠ বরাবর দুধরণের পৃষ্ঠ তরঙ্গ ছড়িয়ে পড়ে । লাভ তরঙ্গ ও র্যালে তরঙ্গ এই পৃষ্ঠ তরঙ্গগুলোর কারণেই বেশিরভাগ ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকে । 


3. চিত্রসহ সিসমোগ্রাফ - এর বিবরণ দাও । এর কাজ পর্যালোচনা করো । 

উঃ । সব সিসমোগ্রাফের মূল গঠন এক । শক্ত ফ্রেম থেকে স্প্রিং এর সাহায্যে ভারী ওজন ঝোলানো থাকে , এর সাথে পেন আটকানো থাকে , আর একদিকে বেলনের গায়ে কাগজের রোল জড়ানো থাকে । ভূমিকম্পের সময় ওজনের সঙ্গে ঝোলানো পেন কাঁপতে থাকে , বেলনে আটকানো কাগজের গায়ে আঁকাবাঁকা ঢেউ এর মতো দাগ পড়ে । একে সিসমোগ্রাফ বলে । ভূপৃষ্ঠে কম্পনের পরিমাণের পরিমাপ সিসমোগ্রাফ বা ভূকম্প ' লিখ যন্ত্রে করা যায় । পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে প্রচুর ভূমিকম্প পরিমাপ কেন্দ্র আছে । ভূমিকম্পের কয়েক মিনিটের মধ্যেই একাধিক সিসমোগ্রাফ এর তথ্য তুলনা করে ভূমিকম্পের কেন্দ্র , উপকেন্দ্রের অবস্থান , স্থায়িত্ব , তীব্রতা সবই নির্ভুলভাবে জানা যায় ।

1 comment: