অরণ্য দেবতা প্রশ উত্তর অষ্টম শ্রেণীর বাংলা সহায়িকা | মাদ্রাসা বোর্ড অষ্টম শ্রেণীর বাংলা সহায়িকা অরণ্য দেবতা প্রশ্ন উত্তর | Class 8th Bengoli Oronno Debota Questions and Answers (MCQ, SAQ, DAQ) - Psycho Principal

Fresh Topics

Monday, 23 June 2025

অরণ্য দেবতা প্রশ উত্তর অষ্টম শ্রেণীর বাংলা সহায়িকা | মাদ্রাসা বোর্ড অষ্টম শ্রেণীর বাংলা সহায়িকা অরণ্য দেবতা প্রশ্ন উত্তর | Class 8th Bengoli Oronno Debota Questions and Answers (MCQ, SAQ, DAQ)

 

অরণ্য দেবতা  
প্রশ উত্তর 



👉(প্রাচীন ভারতের বিজ্ঞান চর্চার নিদর্শন প্রশ উত্তর )


❒ লেখক পরিচিতি: জন্ম ১৮৬১ খ্রিঃ ৭ মে কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে। পিতার নাম মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, মাতা সারদা দেবী। ছোটো বেলায় বাড়িতেই লেখাপড়া শুরু। বাড়িতে বাংলা, ইংরেজি, সংস্কৃত, অঙ্ক সমস্ত বিষয়ে উত্তমরূপে শিক্ষা লাভ করেন। শৈশবেই লেখালেখি শুরু। ক্রমে তিনি কবিতা, গল্প, উপন্যাস লেখায় সিদ্ধহস্ত হয়ে ওঠেন। 'ঘরে বাইরে', 'চিত্রা', 'খেয়া', 'বিসর্জন', 'শেষের কবিতা', 'গীতাঞ্জলি' ইত্যাদি তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ। ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের জন্য নোবেল প্রাইজ পান। ১৯৪১ খ্রিঃ এই লেখকের জীবনাবসান ঘটে।


❒ বিষয় পরিচিতি:  অরণ্যের অবদান জীবন দানকারীর মতোই। অরণ্য বিধাতার দান। জীব জগতকে রক্ষা করছে এই অরণ্য। এই অরণ্যকে রক্ষা করার বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়ার জন্যই হলকর্ষণ উৎসব। এই বিষয়েই আলোচ্য রচনার অবতারণা।


❑ সারাংশ: আদিতে পৃথিবীতে প্রাণের কোনো অস্তিত্ব ছিল না। তারপর বনলক্ষ্মী কৃপা করে অরণ্য সম্পদ দান করলেন। পৃথিবী তরুলতায় পরিপূর্ণ হয়ে উঠল। ক্ষুধার জন্য এল খাদ্য। সে খাদ্য দিল অরণ্য উদ্ভিদ। এরপর এল প্রাণি বা মানুষ।

কিন্তু মানুষকে উদ্ভিদ বা অরণ্য প্রাণদান করলে কী হবে মানুষ বড়ো অমিতাচারী। সে নির্বিচারে গাছ কেটে ধ্বংস করতে লাগল। আজ বিশ্বে গাছ না থাকার জন্য নিষ্ঠুর হচ্ছে মানুষই। পৃথিবীর এমন দশা ছিল না। আজ মানুষের বিপদ আসন্ন। অরণ্য সম্পদকে রক্ষা করাও সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। মানুষ তার লোভের বশবর্তী হয়ে নিজের ধ্বংস নিজেই ডেকে আনছে। আমরা পণ নিয়েছি আর ধ্বংস নয় এবার সৃষ্টি করব। তাই হলকর্ষণ উৎসবের আয়োজন বৃক্ষরোপণ করে আমাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে।


⬛নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন: 


❐ সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো:  (প্রতিটি প্রশ্নের মান-১)

(ক) সৃষ্টির প্রথম পর্বে পৃথিবী ছিল (উর্বর/পাষাণী/সুফলা/নিষ্ফলা)।

উত্তর: সৃষ্টির প্রথম পর্বে পৃথিবী ছিল পাষাণী।


(খ) প্রথমে বনলক্ষ্মী আমাদের দিয়েছেন (মহিরুহ/তৃণশল্প/লতাগুল্ম/বনভূমি)।

উত্তর: প্রথমে বনলক্ষ্মী আমাদের দিয়েছেন তৃণশল্প।

(গ) সকলের চেয়ে তার বড়ো দান (অগ্নি/জল/বাতাস/আকাশ)।

উত্তর: সকলের চেয়ে তার বড়ো দান অগ্নি।


(ঘ) মানুষের প্রথম সুহৃদ (অরণ্য/জলাশয়/ভূভাগ/বাতাস)।

উত্তর: মানুষের প্রথম সুহৃদ অরণ্য।



❐ বাক্যের ভুল অংশটি সংশোধন করে লেখো:  (প্রতিটি প্রশ্নের মান-১)

(ক) ভারতবর্ষের উত্তর অংশ প্রথম থেকেই বৃক্ষবিরল।

উত্তর: ভারতবর্ষের উত্তর অংশ প্রথম থেকেই বৃক্ষবহুল ও ছায়াশীতল ছিল।


(খ) মানুষ সদাচারী।

উত্তর: মানুষ বড়ো অমিতাচারী।


(গ) সেই সমুদ্র নষ্ট হওয়ায় এখন বিপদ আসন্ন।

উত্তর: সেই অরণ্য নষ্ট হওয়ায় এখন বিপদ আসন্ন।


(ঘ) লোহাকে নিয়েই সভ্যতা অগ্রসর হয়ে চলেছে।

উত্তর: অগ্নিকে নিয়েই আজও সভ্যতা অগ্রসর হয়ে চলেছে।



❐ বন্ধনীর ভিতর থেকে সঠিক শব্দটি বেছে নিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করো: (প্রতিটি প্রশ্নের মান-১)

(ক) ক্রমে ক্রমে এল প্রাণের আতিথ্য বহন করে (গাছপালা/তরুলতা/নদীনালা)।

উত্তর: ক্রমে ক্রমে এল তরুলতা প্রাণের আতিথ্য বহন করে।


(খ) আজও সভ্যতা নিয়েই অগ্রসর হয়ে চলেছে (মানুষকে/পৃথিবীকে/অগ্নিকে)।

উত্তর: আজও সভ্যতা অগ্নিকে নিয়েই অগ্রসর হয়ে চলেছে।


(গ) আজও অনুতাপ করবার হয়েছে (দিন/সময়/ঋণ)

উত্তর: আজও অনুতাপ করবার সময় হয়েছে।


(ঘ) আজকের তাই দুটি অঙ্গ (অনুষ্ঠানের/আয়োজনের/উৎসবের)।

উত্তর: আজকের উৎসবের তাই দুটি অঙ্গ।


❐ অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন:  (প্রতিটি প্রশ্নের মান-১)

(ক) হলকর্ষণ কী?

উত্তর: হলকর্ষণ হল লাঙল দিয়ে জমি চষে শস্য উৎপন্ন করা।


(খ) নগ্ন পৃথিবীর লজ্জা কীভাবে রক্ষিত হল?

উত্তর: বনলক্ষ্মী পৃথিবীর এই অঙ্গনে বনসৃজন করে এবং চারিদিকে তাঁর তৃণশল্পের অঞ্চল বিস্তীর্ণ করল। এইভাবে নগ্ন পৃথিবীর লজ্জা রক্ষা হল।


(গ) অরণ্যের সবচেয়ে বড়ো দান কী?

উত্তর: অরণ্যের সবচেয়ে বড়ো দান অগ্নি যা মানুষের ব্যবহারে কাজে লাগে।


(ঘ) মানুষের স্বভাব কেমন?

উত্তর: মানুষের স্বভাব অমিতাচারী। সে যখন নগরবাসী হল তখন অরণ্যের প্রতি মমত্ব হারালো।



❐ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন:  (প্রতিটি প্রশ্নের মান-২/৩)

(ক) "মনলক্ষ্মী তার দুতীগুলিকে প্রেরণ করলেন"-'দূতী' শব্দের অর্থ কী? কাদের দূতী বলা হয়েছে?

উত্তর: 'দূতী' শব্দের অর্থ বার্তাবহনকারী। তৃণশল্প, তরুলতা প্রভৃতিকে দূতী বলা হয়েছে।

তৃণশল্প, তরুলতা প্রভৃতিতে দূতী বলার কারণ এই যে, তারা প্রকৃতির কাছ থেকে মানুষের বসবাসের আয়োজন বহন করে এনেছিল। এরা মানুষের ক্ষুধার অন্ন ও বসবাসের জন্য ছায়া দান করেছিল। এদের সবচেয়ে বড়ো দান অগ্নি। সূর্যের তাপ সংগ্রহ করে মানুষের সভ্যতাকে অগ্রসর করে চলেছে।


(খ) বোলপুরের প্রাকৃতিক অবস্থা কেমন ছিল?

উত্তর: আগে বোলপুরের এরকম ক্ষয়িষু অবস্থা ছিল না। একসময় বোলপুর ছিল অরণ্যময় ফলফুল ইত্যাদি গাছে পরিপূর্ণ। পৃথিবীতে ধ্বংসের হাত থেকে সে রক্ষা করেছে। অরণ্যের ফলমূল খেয়ে মানুষ বেঁচেছে।


(গ) "সে তার প্রথম সুহৃদ"-কাকে প্রথম সুহৃদ বলা হয়েছে? কেন বলা হয়েছে?

উত্তর: অরণ্য ছিল মানুষের প্রথম সুহৃদ। সৃষ্টির আদিতে পৃথিবী ছিল প্রস্তরময়, জীবের প্রতি অকরুণ। কিন্তু বনলক্ষ্মী তৃণশল্প, তরুলতা ইত্যাদিতে পৃথিবীকে সজ্জিত করলেন। মানুষ পেল অন্ন, পেল বাসস্থান। তাই অরণ্যকে প্রথম সুহৃদ বলা হয়েছে।


(ঘ) “সে পৃথিবীকে রক্ষা করেছে ধ্বংসের হাত থেকে"-কীভাবে অরণ্য পৃথিবীকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করেছে?

উত্তর: সৃষ্টির আদিপর্বে প্রস্তরময় পৃথিবী ছিল অগ্ন্যুৎপতা ও ভূমিকম্পে বিচলিত। কিন্তু অরণ্য পৃথিবীতে তৃণগুল্ম বনরাজি নিয়ে আবির্ভূত হয়ে মানুষকে দিলেন অন্ন ও বাসস্থান। আর তারাই ভূমিক্ষয় রোধ করল, গ্রীষ্মের অসহ্য উত্তাপ দমন করে। তিনি পৃথিবীকে করলেন ছায়াশীতল।


(ঙ) কোন্ সময়ে বনলক্ষ্মী তাঁর দূতগুলিকে প্রেরণ করলেন?

উত্তর : সৃষ্টির ঊষাকালে পৃথিবী ছিল প্রস্তরময়। জীবের প্রতি করুণার কোনো প্রকাশ সেদিন তাঁর আচরণে প্রকাশ পায়নি। চারদিকে চলছিল অগ্ন্যুৎপাত ও ভূমিকম্প। এই সময়েই বনলক্ষ্মী তাঁর দূতী তরুলতা ও তৃণশল্প প্রেরণ করলেন পৃথিবীতে।


(চ) মানুষ অরণ্যের প্রতি মমত্ব হারাল কীভাবে?

উত্তর : মানুষ অমিতাচারী। যতদিন সে অরণ্যচর ছিল ততদিন অরণ্যের সঙ্গে পরিপূর্ণ ছিল তার আদানপ্রদান। ক্রমে যখন সে নগরবাসী হল তখনই অরণ্যের প্রতি মমত্ববোধ হারাল।


(ছ) তরুলতা জীবের আতিথ্যের আয়োজনে কী করল?

উত্তর: বন্ধ্যা পৃথিবীতে তরুলতার আগমন জীবেরও আগে। সেদিনের রিক্ত পৃথিবীতে তরুলতা এনেছিল প্রাণের আতিথ্য, জীবের জন্য আয়োজন করেছিল ক্ষুধার অন্ন, বসবাসের জন্য ছায়ার।


❐  রচনাধর্মী প্রশ্ন: (প্রতিটি প্রশ্নের মান-৫)

(ক) জীবজগতের সঙ্গে উদ্ভিদ জগতের সম্পর্ক বর্ণনা করো।

উত্তর: জীবজগৎ ও উদ্ভিদজগৎ পরস্পর নির্ভরশীল। উদ্ভিদ খাদ্য দিয়ে জীবকে রক্ষা করে আর জীব তাকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করে। আবহমানকাল এই ব্যবস্থা চলছে। কিন্তু এর মধ্যে এসে পড়ল মানুষের বর্বর লোভ। সে এক হাতে জীবকে আর অন্য হাতে অরণ্যকে ধ্বংস করার চেষ্টা চালিয়ে গেল। এর ফলে আজকের পৃথিবীতে ভারসাম্য নষ্ট হয়ে গেছে। প্রকৃতি তার প্রতিশোধ নিতে শুরু করেছে।


(খ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পরিবেশ চেতনা ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ছিলেন একজন প্রকৃত পরিবেশ সচেতন মানুষ। তিনি বারবার অরণ্যসম্পদ রক্ষা করার জন্য সমস্ত শ্রেণির মানুষের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। অরণ্য উচ্ছেদ করে আমরা যে মরুভূমিকে আমাদের ঘরের কাছে টেনে আনছি একথা তিনি বারবার বলেছেন। তার মতে অরণ্য সম্পদ। রক্ষা না করলে সামনে সমূহ বিপদ একথা তিনি বলেছেন। তাই লেখক বলেছেন এখন আমাদের দুটি উৎসব পালন করতে হবে। এক-হলকর্ষণ করে শস্য উৎপাদন করে অন্ন সংস্থান করা আর দুই বৃক্ষরোপণ করে আমাদের বেঁচে থাকার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করুন।


(গ) ধরনির প্রতি আমাদের কর্তব্য কী? কীভাবে এই কর্তব্য আমরা সম্পাদন করতে পারি?

উত্তর: একসময় আমাদের পৃথিবী ছিল অরণ্য সম্পদে পূর্ণ। এখন তা নেই। লোভে আমরা নির্বিকারে অরণ্য সম্পদ ধ্বংস করে চলেছি। এটা বন্ধ করা উচিত তা যদি আমরা না করি তাহলে আমরা ধ্বংসের মুখে পড়ে যাব। মানবসভ্যতা শেষ হয়ে যাবে। তাই আমাদের বনভূমি রক্ষার কাজে এগিয়ে আসতে হবে। অরণ্য সম্পদকে রক্ষা করতে হবে।


(ঘ) মানবসভ্যতায় অরণ্যের দান বর্ণনা করো।

উত্তর: মানবসভ্যতায় অরণ্যের দান অপরিসীম। সৃষ্টির প্রথম পর্বে পৃথিবী ছিল প্রস্তরময়। পৃথিবীর বুকে সবসময় ভূমিকম্প চলতো। পৃথিবীর বুকে ছিল না কোনো গাছপালা। এমন সময় বনলক্ষ্মী তার দূতিগুলি যেমন তৃণরাজি ও তরুলতা পাঠিয়ে পৃথিবীকে শস্য শ্যামলা করে তুলল। নগ্ন পৃথিবীর উপর সবুজের আচ্ছাদন তৈরি হল। এই গাছপালা মানুষের অন্ন জোগালো এবং বসবাসের ছায়া দান করলো। অরণ্যে সবচেয়ে বড়ো দান হলো সূর্যালোকের অগ্নিকে মানুষের কাজে লাগিয়ে মানবসভ্যতা অগ্রসরের পথে নিয়ে চলেছে। অরণ্য মাতৃস্নেহে মানব শিশুকে আশ্রয়, আচ্ছাদন, ক্ষুধার অন্ন ও রোগের ভেষজ দিয়ে আজও লালন পালন করে চলেছে।


(ঙ) 'অরণ্যদেবতা' অবলম্বনে মানব চরিত্র বর্ণনা করো।

উত্তর: অরণ্য মানুষকে অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান দান করে মানব সমাজকে অগ্রগতির পথে এগিয়ে চলেছে। কিন্তু মানুষের আগ্রাসী মনোভাব বড়ো বড়ো অট্টালিকা ও শহর তৈরির জন্য প্রচুর পরিমাণ অরণ্য কেটে ধ্বংস করে দিয়েছে। লোভী মানুষেরা অরণ্য ধ্বংস করার জন্য বায়ু, জল দূষিত হয়ে মানব সমাজে নানা ধরনের মারণ রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে এবং শস্য উৎপাদনের বড়ো বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে গাছের পাতা ঝরে মাটির উর্বরতা বাড়ায় এবং আবহাওয়া সুখময় হতে সাহায্য করে। মানুষ অরণ্য নির্মূল করে নিজের স্বল্প স্বার্থ চরিতার্থ করলেও পৃথিবীর সামগ্রিক ক্ষতির স্বীকার হয়ে চলেছে। মানুষ আজ অরণ্যের উপকারিতা ভুলে নিজেদের এক চরম বিপদের সামনে দাঁড় করিয়েছে।


(চ) 'অরণ্যদেবতা'র মূল বিষয়বস্তু নিজের ভাষায় লেখো।

উত্তর: সৃষ্টির সময় পৃথিবী ছিল পাযাণী, তখন প্রস্তরময় পৃথিবীতে কোনো গাছপালা ছিল না। তখন চারিদিকে অগ্নিউৎগীরণ এবং ভূমিকম্পে পৃথিবীকে বিচলিত করে রেখেছিল। এমন সময় বনলক্ষ্মী পৃথিবীর বুকে তৃণরাজি ও তরুলতা প্রেরণ করে জীবের বসবাসের যোগ্য করে তুলেছিল। মানুষকে দান করে অন্ন ও বাসস্থান। মানুষ হল বিবেচনাধীন। অরণ্য মানুষকে বিশুদ্ধ বায়ু, বৃষ্টির জল এবং ক্ষুধার অন্ন জোগায় সেই অরণ্য ধ্বংস করে মানুষ নগরবাসী হবার প্রত্যাশী হয়। মানুষের সর্বগ্রাসী লোভঅরণ্যসম্পদকে আমাদের সভ্যতাকে এক চরম বিপদের সম্মুখে দাঁড় করিয়েছে। পৃথিবীকে আশু ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য নতুন নতুন বৃক্ষ রোপণ করে ধরনির বুকে শস্য ও শ্যামলা করে তোলার আহ্বান জানাই।



❐ ব্যাকরণ:

❐ সন্ধি বিচ্ছেদ করো: তরুচ্ছায়া, নির্মম, নির্বিচার, আশীর্বাদ, মহারণ্য।

উত্তর: তরুচ্ছায়া = তরু + ছায়া।

আশীর্বাদ = আশীঃ + বাদ।

নির্মম = নিঃ+ মম।

মহারণ্যে মহা + অরণ্যে।

নির্বিচার = নিঃ+ বিচার।


(খ) সমাস নির্ণয় করো: তৃণশল্প, তরুলতা, আদানপ্রদান, অরণ্যচর, বনলক্ষ্মী, তরুবিরল, অনুতাপ, বনদেবতা, ছায়াশীতল, হলকর্ষণ।

উত্তর: তৃণশল্প = শল্প যে তৃণ-কর্মধারয় সমাস।

তরুলতা = তরু লতার ন্যায়-উপমিত কর্মধারয় সমাস।

আদানপ্রদান আদান ও প্রদান-দ্বন্দু সমাস।

অরণ্যচর = অরণ্যে চরে যে-উপপদ তৎপুরুষ সমাস।

বনদেবতা = বনের দেবতা-সম্বন্ধ তৎপুরুষ সমাস।

ছায়াশীতল ছায়া দ্বারা শীতল-করণ তৎপুরুষ সমাস।

হলকর্ষণ = হল দ্বারা কর্ষণ-করণ তৎপুরুষ সমাস।

বনলক্ষ্মী = বনের লক্ষ্মী-সম্বন্ধ তৎপুরুষ সমাস।

তরুবিরল = তবু যে বিরল-কর্মধারয় সমাস।

অনুতাপ = তাপের সহিত বর্তমান-সহার্থক বহুব্রীহি সমাস।


(গ) বিপরীত শব্দ লেখো: বন্ধ্যা, নগ্ন, আগমন, উর্বর, বিপদ, ধ্বংস।

উত্তর: বন্ধ্যা-প্রসবিনী।

নগ্ন-আবৃত।

আগমন-গমন।

উর্বর-অনুর্বর।

বিপদ-নিরাপদ।

ধ্বংস-সৃষ্টি।


(ঘ) পদান্তর করো: অগ্নি, পৃথিবী, আতিথ্য, অরণ্য, নগর, ঋষি, আহ্বান।

উত্তর: অগ্নি-আগ্নেয়।

পৃথিবী-পার্থিব।

আতিথ্য-অতিথি।

অরণ্য-আরণ্যক।

নগর-নাগরিক।

ঋষি-আর্য।

আহ্বান-আহৃত।


( ঙ) সমার্থক শব্দ লেখো: (দুটি করে) বসুন্ধরা, অগ্নি, সূর্য, সুহৃদয়, অরণ্য।

উত্তর:বসুন্ধা-পৃথিবী, ধরণি।

অগ্নি-হুতাশন, পাবক।

সূর্য-ভানু, রবি।

সুহৃদয়-বন্ধু, মিত্র।

অরণ্য-বন, জঙ্গল।


(চ) বচন নির্ণয় করো: বনলক্ষ্মী, তরুলতা, মনুষ্যগণ, পুরাণপাঠক, ফলমূল।

উত্তর:বনলক্ষ্মী-একবচন।

তরুলতা-বহুবচন।

মনুষ্যগণ-বহুবচন।

পুরাণপাঠক-একবচন।

ফলমূল-বহুবচন।


(ছ) বাক্যে ব্যবহার করে অর্থের পার্থক্য দেখাও দূতী/দ্যুতি, অন্ন/অন্য, অংশ/অংস, আপন আপণ।

উত্তর: দূতী (মহিলা প্রতিনিধি, সংবাদবাহিকা)-রাজা একজন দূতী প্রেরণ করেছিলেন।

দ্যুতি (ঔজ্জ্বল্য)-হীরকের দ্যুতি চোখ ধাঁধিয়ে দেয়।\


অন্ন (ভাত)-ভাগ করে খেতে হবে সকলের সাথে অন্নপান।

অন্য (অপর)-অন্য কোথা অন্য কোনখানে।


অংশ (ভাগ)-যে যার অংশ বুঝে নেবে।

অংস (কাঁধ)-বৃষের মতো অংস ছিল তার।


আপন (নিজ)-আপন কাজে অলস হলে চলবে না।

আপণ (দোকান)-দক্ষিণাপণ একটি বড়ো দোকান।


(জ) কারক বিভক্তি নির্ণয় করো: পৃথিবী ছিল ভূমিকম্পে বিচলিত। সে নগরবাসী হল। সে হারাল তার প্রথম সুহৃদ। ধরণির প্রতি কর্তব্য পালনের জন্য বৃক্ষরোপণের আয়োজন।

উত্তর:ভূমিকম্পে-করণকারকে 'এ' বিভক্তি।

নগরবাসী-কর্মকারকে 'শূন্য' বিভক্তি।

সুহৃদ-কর্মকারকে 'শূন্য' বিভক্তি।

ধরণি-করণকারকে 'এ' বিভক্তি।

No comments:

Post a Comment